বাংলাদেশে পর্তুগাল দূতাবাস স্থাপনের লক্ষ্যে প্রবাসীদের খোলা চিঠি

গত রোববার সন্ধ্যায় পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি খোলা চিঠি শিরোনামে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন প্রবাসীরা।

বাংলাদেশে পর্তুগালের দূতাবাস বা কনস্যুলার অফিস না থাকায় ৫০ হাজারেরও বেশি প্রবাসী দিল্লিতে গিয়ে তাঁদের স্বজন ও ব্যবসায়ীরা ব্যাপক হয়রানির শিকার হচ্ছেন। পাশাপাশি দেশটিতে সরাসরি ফ্লাইট না থাকায়ও পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে পর্তুগাল প্রবাসীদের এসব সমস্যার সমাধান হতে পারে খুব সহজেই, ধারণা করছেন দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশিরা। গত রোববার সন্ধ্যায় রাজধানী লিসবনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি খোলা চিঠি শিরোনামে একটি অনুষ্ঠানে প্রবাসীরা এসব কথা বলেছেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পর্তুগিজ নাগরিক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন অনুষ্ঠানটিতে। এ সময় বাংলাদেশে পর্তুগালের দূতাবাস স্থাপনের দাবিসহ আটটি বিষয় তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানে আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য আব্দুল হাকিম মিনহাজ বলেন, ‘বাংলাদেশে পর্তুগালের দূতাবাস বা কনস্যুলার অফিস স্থাপন পর্তুগাল প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি। আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে উদ্যোগ নিলে এটি অবশ্যই বাস্তবায়ন হতে পারে। তাই প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমরা কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়নসহ কয়েকটি বিষয়ে জোরালো দাবি জানাচ্ছি।’

লিসবনের অন্যতম ব্যবসায়ী মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে বাংলাদেশে পর্তুগালের দূতাবাস স্থাপন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি আমাদের ব্যবসায়ীদের কিছু দায়িত্ব পালন করতে হবে, যেন পর্তুগাল সরকারের কাছে এটির গুরুত্ব বাড়ে।’

প্রবাসীদের মধ্যে মো. হারুন অর রশিদ বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার প্রবাসীদের স্বার্থ রক্ষায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব ড. মুহম্মদ ইউনুস পদক্ষেপ নিলে অনেক কিছুই সম্ভব।

পর্তুগাল বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি রনি মোহাম্মদ বলেন, এর আগে তিনজন মন্ত্রী–প্রতিমন্ত্রীর পর্তুগাল সফর এবং প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশে পর্তুগালের দূতাবাস স্থাপনের ব্যাপারে আলোচনা হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তা আর বাস্তবায়ন হয়নি। কী অগ্রগতি আছে, তা–ও প্রবাসীদের জানা নেই। বাংলাদেশে পর্তুগালের দূতাবাস না হলেও অন্তত কনস্যুলার অফিস স্থাপন করা জরুরি। এ জন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাসহ দায়িত্বশীলদের কাছে দাবি তুলে ধরতে হবে এবং অব্যাহতভাবে তাগাদা দিতে হবে।

পর্তুগাল বাংলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রাসেল আহম্মেদ বলেন, প্রবাসীদের কমিউনিটির সর্বস্তরের লোকজনকে একত্র করে এই দাবি বাস্তবায়নে সম্মিলিতভাবে প্রয়াস চলাতে হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান, বর্তমান সহসভাপতি এস এম আজাদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহীদ আহমদ (প্রিন্স), প্রবাসী মুহাম্মাদ আবদুর রহিম, মোহাম্মদ রফিক উদ্দীন, নয়ন দেব, নাজমুল হাসান, ফয়ছল আহমদ, আবুল হোসাইন, আব্দুল গফফার, সিরাজুল হক শিপন, নিজামুর রহমান টিপু, ফয়জুর রহমান, মো. রুহুল আমীন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

বক্তারা জানান, বাংলাদেশে পর্তুগাল দূতাবাস স্থাপনসহ প্রবাসীদের দাবিগুলো সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ভবিষ্যতে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করা হবে।

*দূর পরবাসে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]