সিডনিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের বনভোজন উদ্যাপিত
পরিযায়ী পাখির মতো আমরা ফিরে ফিরে আসি আমাদের অভয়াশ্রমে। জন্মাতে চাই অতীত সময়ের গর্ভে, দ্বিতীয় জন্মের আঁতুড়ঘরে-জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরিযায়ী পাখির মতো গত শনিবার (১১ নভেম্বর) অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী উড়ে এসেছিল ওয়েস্টার্ন সিডনির সিডনি পার্কল্যান্ডে। প্রচণ্ড দাবদাহ উপেক্ষা করে দিনভর বনভোজনের আড়ালে এই মিলনমেলায় অংশ নিয়েছিল সিডনি, ক্যানবেরা, মেলবোর্ন নিউক্যাসেল, ওলুংগংসহ অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন শহরের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়ার উদ্যোগে বাৎসরিক এই বনভোজন ২০২৩ আয়োজন করা হয়। সকাল ১০টায় বনভোজন ওয়েস্টার্ন সিডনির ফেয়ারফিল্ড কাউন্সিলের নিয়ন্ত্রণাধীন পার্কল্যান্ড অঙ্গন অ্যালামনাইদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। শুরুতেই পরিবেশন করা হয় মোগলাই প্রাতরাশ ও মালাই-চা। একে একে অনুষ্ঠিত হয় বাচ্চাদের লজেন্সদৌড়, নারীদের পিলো পাসিং, পুরুষদের বেলুন পপিং গেম।
বেলা ১১টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক রাসেল ইকবাল ও প্রত্যাশা ইকবালের তত্ত্বাবধানে পার্কল্যান্ড প্রাঙ্গণজুড়ে গড়ে তোলা হয় ডেইরি প্রধান গেট, কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া, চৌরঙ্গী ও প্রান্তিক গেট। স্মৃতিকাতর প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মনের গভীরের তোলপাড় করা এই আয়োজনে শুরু হয় ছবি তোলার হিড়িক। পরিণত হয় নবীন ও প্রবীণের মিলনমেলায়।
দুপুরের পরিবেশিত হয় মধ্যাহ্নভোজ। ছিল কোমল পানীয়, চা, কেক, রসগোল্লা, ঝালমুড়ির আয়োজন।
আড্ডা পাগল জাবিয়ানদের স্মরণকালের মধ্যে বৃহত্তম এ আউটডোর সমাবেশের কাছে ঘড়ির কাঁটাও হার মানে। পার্ক কর্তৃপক্ষ যখন মূল গেট বন্ধের উদ্যোগ নেয়, তখন সবার সংবেদন হয় ঘরে ফেরার। হলে ফিরে গিয়ে পুনরায় আড্ডায় মেতে ওঠার সুযোগ না থাকায় সবাইকে ফিরে যেতে হয় নিজ গৃহে। যাঁরা অন্য রাজ্য থেকে এসেছিলেন, তাঁরা রাত্রিবাস করেন বন্ধুদের বাসায়।
ফিরে যাওয়ার আগে অ্যালামনাইরা আয়োজকদের কাছে শিগগিরই আরেকটি মিলনমেলার প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিয়ে যান। বনভোজনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ১৯তম ব্যাচের তাহমিনা বীণা ও ২২তম ব্যাচের মিকন মোবাশ্বের। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি সাইফ সাকান্দার রাফায়েল, সাবেক আহ্বায়ক সর্বজন শ্রদ্ধেয় অষ্টম ব্যাচের খালেদা কায়সার মিনি।
খালেদা কায়সার বলেন, সংগঠন যেকোনো উদ্যোগকে সফলতা দান করে। সর্বজনীন করে তোলে।
আর্থিক স্বচ্ছতা দান করে। অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের এ বনভোজন আয়োজন তারই প্রতিফলন।
সমাপ্তির আগে সাংস্কৃতিক পর্বে কবিতা আবৃত্তি করেন বিশিষ্ট নাট্যজন অষ্টম ব্যাচের শাহীন শাহনেওয়াজ। সংগীত পরিবেশন করেন বনফুল, লুনিয়া, সূচি, জাওয়াদ প্রমুখ।