জাপানের নিগাতায় অনন্য ঈদ পুনর্মিলনী
নিগাটা জাপানের প্রধান দ্বীপ হোনশুতে অবস্থিত একটি বন্দর শহর। নিগাতা প্রিফেকচারের উত্তর অংশে অবস্থিত একটি শহর। নিগাতা শহর হলো নিগাতা প্রিফেকচারের রাজধানী এবং সবচেয়ে জনবহুল শহর এবং জাপানের চুবু অঞ্চলে অবস্থিত জাপানের সরকারি অধ্যাদেশ দ্বারা মনোনীত শহরগুলোর মধ্যে একটি। এটি জাপান সাগর এবং সাদো দ্বীপের মুখোমুখি।
নিগাতা শহরে দুটি মসজিদ আছে। একটি মসজিদের নাম আন্নুর মসজিদ। এ মসজিদের অপর নাম বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ। কারণ নিগাতা ইউনিভার্সিটি মসজিদের কাছে অবস্থিত এবং অনেক ছাত্র-ছাত্রী সর্বদা এ মসজিদে তাদের নামাজ আদায় করেন। এ মসজিদের অনেক কিছুতের বাংলাদেশিদের অবদান রয়েছে। কারণ, এ মসজিদে অনুষ্ঠিত অনেক অনুষ্ঠানই বাংলাদেশি পরিবারের। এ মসজিদের তৃতীয় তালায় এই বছর ঈদুল ফিতরের বাংলাদেশিদের প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে সব বড় আপুরা-ভাইয়ারা তাদের বাসা থেকে একটা একটা আইটেম রান্না করে নিয়ে এসেছিল। কেউ পোলাউ, কেউ রোস্ট, কেউ গরুর মাংস, কেউ দই, কেউ মিষ্টি, কেউ অন্য কিছু বানিয়ে নিয়ে এসেছিলেন। সব কিছুই ঝালে ভরপুর। আমাদের শিক্ষার্থীদের পরিবারের জন্য ছোট দায়িত্ব ছিল, সালাদ এবং পানির ব্যবস্থা করা। সবচেয়ে সহজ কাজ আমাদের। এটা খুবই উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল। নিগাতা শহরের সব পরিবার এসেছিল এই আয়োজনে।
আমরা পরিবার ছেড়ে অনেক দূরে বসবাস করলেও সবাই যখন একসঙ্গে হই কিছুটা সময় এর জন্য হলেও ভুলেই যাই আমরা বাংলাদেশ থেকে অনেক দূরে আছি। মনে হয় ছোট বাংলাদেশ এই নিগাতা শহরে। ছোট ছেলে-মেয়েরা ব্যস্ত খেলাধুলায়, বড় আপুরা ব্যস্ত রান্না এবং আড্ডায়। মাগরিবের পরেই খাবার শুরু হলো । এইভাবেই দেখতে দেখতে রাত আটটা বেজে গেল। সবার বিদায়ের পালা। আমরা সবাই মিলে মসজিদ পরিষ্কার করে বিদায় নিয়ে নিলাম। আবার সেই কর্মব্যস্ততা শুরু হয়ে যাবে পরের দিন থেকে। এটাই আমাদের ঈদ, বাংলাদেশিদের নিগাতা ঈদ। তারপরেও আমরা মিস করি প্রিয় মাতৃভূমিকে।
লেখক: মো. নাজমুল ইসলাম, পিএইচডি স্টুডেন্ট, নিউরোসাইন্স ডিপার্টমেন্ট, নিগাতা ইউনিভার্সিটি
*দূর পরবাসে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]