জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বাড়ছে বিদেশি শিক্ষার্থী
জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় এ বছর ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীর সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে। কারণ, আরও বেশিসংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছেন, যা ভবিষ্যতে কাজের বাজারের জন্য দুর্দান্ত সম্ভাবনাময় ব্যাপার। তবে স্থানীয় লোকজন বা জার্মানির নাগরিকেরা দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় পড়ছে কম বা পড়ুয়ার সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। বেশিসংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী জার্মানিতে আসছেন। সেন্টার ফর ইউনিভার্সিটি ডেভেলপমেন্টের (সিএইচই) এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
জার্মান উচ্চশিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং প্রাথমিকভাবে বার্টেলসম্যান ফাউন্ডেশন অর্থায়ন করে শিক্ষা খাতে। তাদের ও সরকারের পরিসংখ্যান অনুসারে, বর্তমান ২০২৩-২৪ শীতকালীন সেমিস্টারে মোট চার লাখ দুই হাজার ছাত্রছাত্রী প্রথম বর্ষে জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা সামান্য বেড়েছে, কিন্তু এখনো স্থানীয় লোকজনের তেমন কোনো পরিসংখ্যান এখানে নেই। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, জার্মানি থেকে নতুন ছাত্রদের সংখ্যা হ্রাস অব্যাহত রয়েছে।
২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে শীতকালীন সেমিস্টারে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ছাত্রছাত্রী প্রথম সেমিস্টারে ভর্তি হয়েছিলেন। ২০২০ থেকে এ সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমতে শুরু করে। এর বড় একটি কারণ হলো ১৯৯০ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে জার্মানিতে জন্মহার কমে যাওয়া। পাশাপাশি ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ স্থানীয় শিক্ষার্থী পারিবারিকভাবে অর্থনৈতিক সহায়তা না পাওয়ায় ১৮ বছর বয়সের পর নিজেরা কাজ করে জীবন নির্বাহ করেন। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা আর তাঁদের করা হয় না।
২০২৩ সালের শুরুতেও প্রথম বর্ষের প্রায় তিন লাখ পাঁচ হাজার জার্মান ছাত্রছাত্রী ছিলেন। প্রায় ৯৩ হাজার বিদেশি ছাত্রছাত্রী প্রথম বর্ষে ভর্তি হন, যা বিগত দিনের রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। যার মধ্যে ৪০ শতাংশেরও বেশি এশিয়া থেকে এসেছে। এশিয়া থেকে আসা শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩৮ হাজার, যা কোভিড মহামারির সময় থেকেও বেশি। মূলত কোভিডের কারণে জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছিল।
এ বছর ভারত থেকে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। এর পরে চীন থেকে প্রায় ৬ হাজার ৭০০ জন ভর্তি হয়েছেন। কয়েক বছর ধরে ভারতীয়দের সংখ্যা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু চীন থেকে প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীরা আসার সংখ্যা কমে আসছে। বাংলাদেশ থেকে ভিসা জটিলতার কারণে প্রায় দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী অপেক্ষা করছেন আসার জন্য। তাঁদের মধ্যে অনেকেই অনলাইনে ক্লাস করছেন বাংলাদেশ থেকে। ভিসা না পাওয়ার কারণে বা দেরির কারণেই এমন জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি জরুরি। বাংলাদেশ থেকে মন্ত্রীরা এলে প্রোটকলের নামে প্রমোদভ্রমণ বা রসনাবিলাস গলাধঃকরণে ব্যস্ত সময় পার না করে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলোয় বাংলাদেশিদের কাজ করা উচিত বলে সংশ্লিষ্ট সবাই মনে করেন।
**দূর পরবাসে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল অ্যাড্রেস [email protected]