ব্যাংককে স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন ও কূটনৈতিক সংবর্ধনার আয়োজন
বাংলাদেশ দূতাবাস, ব্যাংকক গতকাল মঙ্গলবার যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৪ উদ্যাপন করেছে। দিনের শুরুতে সকালে রাষ্ট্রদূত মো. আবদুল হাই দূতাবাস প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের অন্যান্য শহীদ সদস্য ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার শান্তি কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। অনুষ্ঠানে দূতাবাসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এরপর রাষ্ট্রদূত মো. আবদুল হাই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রদত্ত বাণী পাঠ করেন যথাক্রমে দূতাবাসের মিনিস্টার (রাজনৈতিক) ও মিশন উপ-প্রধান মালেকা পারভীন, মিনিস্টার (কনস্যুলার) হাসনাত আহমেদ ও কাউন্সেলর (ইকোনমিক) সারোয়ার আহমেদ সালেহীন। এ আয়োজনে সঞ্চালনায় ছিলেন দূতাবাসের কাউন্সেলর ও দূতালয়প্রধান মো. মাসূমুর রহমান।
দিবসটি উপলক্ষে দূতাবাসের উদ্যোগে স্থানীয় একটি হোটেলে কূটনৈতিক সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
আয়োজনে স্বাগতিক দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অন্যান্য মন্ত্রণালয়, ব্যাংককে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকেরা, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং সুশীল সমাজের নেতারাসহ দেড় শতাধিক অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন থাইল্যান্ডের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চাডা থাইসেড। উভয় দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হয়।
রাষ্ট্রদূত থাইল্যান্ডে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে সম্পাদিত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে তাঁদের ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশের অর্থনীতি, প্রযুক্তি ও মানবসম্পদ উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য তিনি ইটাল-থাই, সিপি গ্রুপ, মামা নুডলস, সিয়াম সিটি সিমেন্ট, সিয়াম সিমেন্ট, সিয়াম গ্যাস, চুলালংকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়, মাহিদল বিশ্ববিদ্যালয়, চিয়াংমাই বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ জানান।
এরপর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি চাডা থাইসেড তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন এবং দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রা এবং দেশ গঠনে জনগণ ও বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তরণের পর ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় থাই অভিজ্ঞতা সহযোগিতার জন্য থাই সরকার প্রস্তুত বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, দ্বিপক্ষীয় পরিসরে এবং বিমসটেকের মতো আঞ্চলিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ এবং থাইল্যান্ডের একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এবং এতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কূটনৈতিক সংবর্ধনার আনুষ্ঠানিকতা শেষে আগত অতিথিদের বাংলাদেশি খাবারে আপ্যায়িত করা হয়।
কূটনৈতিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন দূতাবাসের মিনিস্টার (রাজনৈতিক) ও মিশন উপ-প্রধান মালেকা পারভীন।
বহুল প্রচারিত স্থানীয় ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা ব্যাংকক পোস্ট ও থাই ভাষার দৈনিক পত্রিকা নায়েইনাতে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৪ উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় দূতাবাসের উদ্যোগে স্থানীয় একটি হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।