কানাডা, রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান দুজনেরই আছে বিবাহবিচ্ছেদের অভিজ্ঞতা

সাংবিধানিকভাবে কানাডার রাষ্ট্র প্রধান ব্রিটেনের রাজা চার্লস। আর প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এই দুজনেরই জীবনে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে।

প্রিন্সেস ডায়ানার সঙ্গে চার্লসের বিচ্ছেদ হয় ১৯৯৬ সালের আগস্টে আর প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বিবাহ বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন এ বছর ২ আগস্টে। মাঝখানে কেটে গেছে ২৭ বছর। তবে এই বিবাহ বিচ্ছেদ কানাডিয়ানদের চলমান জীবনে তেমন কোনো অবাক করা ঘটনা না।

কানাডার রাষ্ট্রপ্রধান ব্রিটেনের রাজা চার্লস-এর বাবা মায়ের জীবনে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা না ঘটলেও প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বাবা পিয়ের ট্রুডোর সংসার জীবন ছিল ১৩ বছেরের। তারপর ট্রুডো ও আর দশটা কানাডিয়া পরিবারের মতো ব্রোকেন ফ্যামিলি'তে বড় হন।

পৃথিবীর মাঝে কানাডা বিবাহ বিচ্ছেদের দিক থেকে উপরের দিকে, ২৯তম। ৪ কোটি মানুষের দেশ কানাডাতে প্রতি বছর গড়ে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় প্রায় ৪৩ হাজার। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১১৭ টি। কানাডার ১০০ টি বিয়ের মাঝে ৪০টির সমাপ্তি ঘটে বিবাহ বিচ্ছেদের মাঝে। টিকে থাকে ৬০ টি। দ্বিতীয়বার যারা বিয়ে করেন তাদের ৬০ ভাগেরই বিচ্ছেদ হয়ে যায়। আর তৃতীয় যারা বিয়ে করেন তাদের ৭৩ ভাগই সংসার জীবনের অবসান ঘটায়।

বিবাহবিচ্ছেদের সময় স্বামী - স্ত্রীর গড় বয়স থাকে ৪৬ বছর। শতকরা ৩১ ভাগ স্বামী- স্ত্রী যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নেয় তাদের বিবাহ বিচ্ছেদের। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বিবাহ বিচ্ছেদ কি কারণে ঘটেছে তা এখন পর্যন্ত জানা না গেলেও

শতকরা ৩৪ ভাগের বিবাহবিচ্ছেদ পারিবারিক সহিংসতা, মৌখিক দুর্ব্যবহার ও শারীরিক নির্যাতনের কারণে। নিজেদের মাঝে বিশ্বাস হারানোর কারণে

বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে ২৭ ভাগ। ২৫ ভাগের সংসার ভেঙে যায় অর্থনৈতিক কারণে।

যাদের বাবা - মার সংসার টিকে থাকে , যাদের কমপক্ষে ১২ ক্লাস পর্যন্ত পড়াশুনা শেষ করা আছে এবং যাদের বিয়ে হয় ২৫ বছরের পর তাদের মাঝে বিবাহ বিচ্ছেদের হার বেশ কিছুটা কম। বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা নিস্পত্তি হতে সর্বোচ্চ ৩ বছর লাগে । তবে যে বিচ্ছেদ গুলো দুজনের সম্মতিতে হয় সেগুলিতে ৪ থেকে ৬ মাসের বেশি সময় লাগে না।

কানাডায় স্বামীর সম্পত্তির অর্ধের মালিক স্ত্রী , আর স্ত্রীর সম্পত্তির অর্ধেক মালিক স্বামী। ফলে বিচ্ছেদের পর দুজনে দুজনার সম্পত্তির অর্ধেক পেয়ে যায়। কানাডায় একটি বিবাহ বিচ্ছেদে খরচ হয় ১৮ হাজার কানাডিয়ান ডলার। সন্তানেরা ১৮ বছরের নিচে হলে সাধারণ নিয়মে মায়ের কাছে থাকে তবে অনেক ক্ষেত্রে তারা বাবার কাছে ও থাকে।

যদি বাবা - মা কেউ ই সন্তানকে রাখতে না চায় তাহাকে "ফ্রস্টার বাবা -মা " জোগাড় করে দেয় সরকার। যদি কেউ সিঙ্গল পিতা - মাতা হন তাহলেও সরকার বেশ কিছু অর্থনৈতিক সুবিধা দিয়ে থাকে। সন্তান যদি মায়ের কাছে থাকে তবে ১৮ বছর সন্তানের বয়স না হওয়া পর্যন্ত সন্তানের ভরণ - পোষণের বাবদ টাকা দিয়ে হয় বাবা কে তবে এই টাকা নির্ভর করে বাবার আয়ের উপর ।