রোগীদের জন্য সংগ্রহ, ইরানের ভাবনায় সমাধান!

সাধারণত ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী যেকোনো মানুষ রক্তদান করতে পারেন
ফাইল ছবি

বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মাঝেমধ্যে রক্ত চেয়ে পোস্টগুলো দেখলে নিজেরই খারাপ লাগে। রোগীর অস্ত্রোপচার হবে অথবা রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত অথবা পরিবারের কেউ সড়ক দুর্ঘটনায় হাসপাতালে ভর্তি—সবারই রক্ত লাগবে।

রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি, এদিকে রোগীর জন্য রক্ত খুঁজতে গিয়ে বা জোগাড় করতে গিয়ে রোগীর পরিবারকে মাঝেমধ্যে হয়রান হয়ে যেতে হয়। এ রক্ত জোগাড় করার দায়িত্বও যেন সেই পরিবারের। আর রক্তের গ্রুপ যদি নেগেটিভ হয়, তবে তো কথাই নেই।

স্বাভাবিকভাবে কোনো রোগী যখন হাসপাতালে ভর্তি থাকেন তখন সে পরিবারের সবাইকে একটা চিন্তার মধ্যে সময় পার করতে হয়। এর মধ্যে রক্তের সন্ধান করার বিষয়টি সে পরিবারগুলোর জন্য বড় কষ্টদায়ক ব্যাপার হয়ে যায়। তবে এখন দেশে বিভিন্ন ব্যক্তি দানে আগ্রহী হয়েছেন। শিক্ষার্থীরাও রক্তদান করেছেন। বিভিন্ন সংগঠনও কাজ করছে। এর পরও রক্ত সংগ্রহে রোগীদের চিন্তা কমছে না। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতেও কী এভাবে কোনো পরিবারকে রক্তের জন্য চিন্তায় সময় পার করতে হয়?

ইরানের কথায় যদি বলি, ইরানের প্রতিটি শহরে এবং ছোট গ্রামেও সরকারিভাবে একটা রক্তের ব্যাংক আছে এবং সেখানে সব ধরনের রক্তের গ্রুপের রক্ত সংরক্ষণ করা হয়। রক্তের ব্যাংকে যখন রক্ত শেষের সীমায় যায়, তখন স্থানীয় টিভিসহ সব মিডিয়ায় ঘোষণা দিয়ে সেখানে জনগণকে রক্ত দিতে আসার জন্য আহ্বান জানানো হয়। এর ফলে সব সময় চাহিদার মতো এ রক্ত ব্যাংকগুলোতে রক্ত সংরক্ষণ থাকে।

এ ছাড়াও যদি কখনো কোনো শহরে রোগীর রক্ত সংকট দেখা দেয়, তাৎক্ষণিক হেলিকপ্টারের মাধ্যমে অন্য শহর থেকে সরকারিভাবে রক্ত নিয়ে আনার ব্যবস্থাও করা হয়ে থাকে। এর ফলে রোগীদের পরিবারকে রক্তের জন্য আলাদাভাবে চিন্তায় পড়তে হয় না।

আমাদের দেশে কোথাও কোন অগ্নিকাণ্ড বা দুর্ঘটনা ঘটলে গণমাধ্যমের মাধ্যমে অনেক সময় জানানো হয় ঘটনা সংঘটিত এলাকায় রক্তের প্রয়োজন এবং রক্ত দিতে আসার জন্য, তবে রক্ত ব্যাংকে রক্ত রিজার্ভ রাখতে আগে থেকেই এমন আহ্বান জানানোর বিষয়টি চোখে পড়েনি।

এ ক্ষেত্রে রক্ত ব্যাংকে রক্ত রিজার্ভ রাখতে আমাদের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের আরও বেশি ভাবা উচিত বলে মনে করি। এর সঙ্গে গণমাধ্যমের কর্মীরাও এ সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমার আশা।

লেখক: কামরুজ্জামান নাবিল, এমবিবিএস, ইস্পাহান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ইরান