নিউইয়র্কে এনওয়াইপিডি যুব ক্রিকেটে শিরোপা জিতলেন বাংলাদেশি যুবারা

যুব ক্রিকেট লিগের শিরোপা হাতে সন্দ্বীপ স্পোর্টিং ক্লাবের খেলোয়াড়দের সঙ্গে অতিথিরা
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের (এনওয়াইপিডি) অন্যতম ইউনিট কমিউনিটি অ্যাফের্য়াস ব্যুরো। এ ব্যুরোর আয়োজনে এনওয়াইপিডি পুলিশ কমিশনার ২০২৩ যুব ফুটবল ও ক্রিকেট লিগের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। খেলায় বাংলাদেশি যুব ক্রিকেট দল সন্দ্বীপ স্পোর্টিং ক্লাব ৭ উইকেটে ব্রংক্স রয়েলসকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এনওয়াইপিডি যুব ক্রিকেট লিগের শিরোপা জয়ের গৌরব অর্জন করে।

নিউইয়র্কের কুইন্সে সাউথ জ্যামাইকার বেইসলে পন্ড পার্কের ক্রিকেট গ্রাউন্ডে গত বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় ক্রিকেট লিগের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগের দিন একই স্থানে ফুটবল লিগের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। লিগে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও গায়েনা, হিস্পানিক, মধ্যপ্রাচ্য, পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মোট ১০টি যুব ক্রিকেট দল ও ৫টি যুব ফুটবল দল অংশ নেয়।

ক্রিকেট লিগের ১০ দলের মধ্যে ফাইনালে পৌঁছে বাংলাদেশি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল ব্রংক্স রয়েলস এবং সন্দ্বীপ স্পোর্টিং ক্লাব। খেলায় টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ব্রংক্স রয়েলস ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১০৮ রান করে। জবাবে ১০৯ রানের জয়ের টার্গেট নিয়ে খেলতে নেমে ১৪.৪ ওভারে ৩ উইকেটে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় সন্দ্বীপ স্পোর্টিং ক্লাব। ব্যক্তিগত ২ উইকেট ও ৩৫ রান করে ফাইনালের ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন সন্দ্বীপ স্পোর্টিং ক্লাবের খেলোয়াড় সাব্বির আহমেদ এবং ক্রিকেট লিগে ম্যান অব দ্য সিরিজ হন নিউইয়র্ক টাইগার্সের সাফওয়ান।

এদিকে ব্রুকলিন লায়ন্স ২-০ গোলে ড্রগলাম টাইগার্সকে হারিয়ে ফুটবল লিগের শিরোপা জিতে নেয়। ফুটবল লিগের ফাইনালে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন ইউক্রেনীয় বংশোদ্ভূত আরসালান। ফুটবল ও ক্রিকেট লিগের বিজয়ী ও রার্নাসআপ দল, সেরা খেলোয়াড়দের হাতে ট্রফি তুলে দেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশেষ অতিথিরা। পুরস্কার বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন এনওয়াইপিডি কমিউনিটি অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর ইন্সপেক্টর ভিক্টোরিয়া পেরি, ডেপুটি ইন্সপেক্টর ম্যাকল, পেট্রাল ব্যুরো কুইন্স সাউথের অ্যাসিস্ট্যান্ট চিফ কেভিন উইলিয়ামস, পাবলিক স্কুল অ্যাথলেটিক লিগের ডেপুটি কমিশনার বেসাথ, ইয়থ সার্ভিসেস অ্যান্ড কমিউনিটি এনগেঞ্জমেন্টের পরিচালক আলদিন ফস্টার। ইভেন্ট কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন এনওয়াইপিডি ইমিগ্র্যান্ট আউটরিচ ইউনিটের একমাত্র বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সার্জেন্ট মোহাম্মদ লতিফ, ডিটেক্টিভ কোয়াক, পুলিশ অফিসার আলগাহিতি।

যুব ফুটবল ও ক্রিকেট লিগ চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্সআপ দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে অতিথিরা
ছবি: সংগৃহীত

এ ব্যাপারে আয়োজকের পক্ষ থেকে সুপারভাইজার মোহাম্মদ লতিফ জানান, এনওয়াইপিডি কমিউনিটি অ্যাফের্য়াস ব্যুরোর অধীনে ইমিগ্র্যান্ট আউটরিচ ইউনিট দ্বারা আয়োজিত পুলিশ কমিশনার যুব ফুটবল ও ক্রিকেট লিগের যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালে। প্রতিবছর জুলাই ও আগস্ট মাসে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে ৩০০ থেকে ৪০০ তরুণ খেলোয়াড় অংশ নেন। অংশগ্রহণকারীদের বয়সসীমা ১৪ থেকে ১৯ বছর। তাঁরা বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসীদের সন্তান। গত ২৬ জুলাই টুর্নামেন্টের খেলা শুরুর পর থেকে ইমিগ্র্যান্ট আউটরিচ ইউনিটের কর্মকর্তারা ক্রমাগত বিভিন্ন কমিউনিটির যুবকদের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ বজায় রেখে আসছিলেন। যুবকেরা যেন একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখেন, তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জীবন, নিরাপত্তা এবং মাদকের কুফল সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ টিপস অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মাদকের ছোবলে যুবসমাজ আজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ জন্য মাদকমুক্ত যুবসমাজ গড়তে হলে ক্রীড়াঙ্গনকে বড় ভূমিকা রাখতে হবে।

মোহাম্মদ লতিফ বলেন, কীভাবে তরুণেরা নিজেরাই পুলিশে যোগ দিতে পারেন, সে সম্পর্কে তাঁদের মধ্যে জানার আগ্রহ তৈরি হয়েছে। এটা কমিউনিটির মানুষদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে। পাশাপশি ক্যাডেট পুলিশ, সামার ইয়ুথ এমপ্লয়মেন্ট প্রোগ্রাম, অনুসন্ধানকারীদের মতো বিভিন্ন পুলিশ প্রোগ্রামের সঙ্গে তরুণদের সংযুক্ত করাই ছিল আয়োজনের অন্যতম কারণ।