ফিলিস্তিনে আগ্রাসন : হোক প্রতিবাদ
প্রযুক্তির উৎকর্ষ দেখে আমি একসময় ভাবতাম যে দিনে দিনে পৃথিবী থেকে বৈষম্য বিদায় নেবে। কারণ, তখন মানুষের কাছে সব রকমের তথ্য সহজলভ্য হয়ে যাবে। মানুষ সহজেই ভালো–মন্দের বিচার করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে; কিন্তু আমি আসলে কতটা ভুল ছিলাম সেটা এখনকার বিশ্বের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। এখনো পৃথিবীজুড়ে চলছে বৈষম্যমূলক যুদ্ধ। সেখানে জাতপাতের নামে, ধর্মের নামে মারা হচ্ছে নিষ্পাপ মানুষ। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো, এর থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশুরাও। এই নির্বিচার মানুষ মারার একটা নামও আছে—‘জেনোসাইড’। আসলে একটিমাত্র শব্দ দিয়ে বিষয়টির ভয়াবহতা বোঝানো সম্ভব নয়। আর এখন গণমাধ্যমগুলো যথেষ্ট স্বাধীন হলেও আসলেই কি স্বাধীন। তবুও গণমাধ্যমের ফাঁক গলে যে খবরটুকু আমাদের সামনে এসে পড়ে, সেটুকু পড়লেই গায়ে কাঁটা দেয়।
ফিলিস্তিনের মানুষের ওপর অত্যাচারের ইতিহাস অনেক পুরোনো। সেই ইতিহাস সবারই কমবেশি জানা। তবুও একজন ভুক্তভোগী বা প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে কিছুটা জেনে নেওয়া যাক। এবারের গণহত্যা শুরু হওয়ার পর একটা পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে ‘দে কলড মি লায়নেস’ নামের একটা বইয়ের অনুবাদ ‘ওরা আমায় সিংহ বলত’ প্রকাশিত হচ্ছিল। সেখান থেকেই জানলাম, আহেদ তামিমি ফিলিস্তিনি যোদ্ধা। তাঁর বাবা ফিলিস্তিন মুক্তি আন্দোলনের শরিক। মাত্র ১৬ বছর বয়সে ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রতিবাদের শাস্তি হিসেবে তাঁকে তুলে নিয়ে যায় সেনারা। তামিমিকে অবশ্য বিশ্ব চিনেছে অনেক আগেই। ভাইয়ের গ্রেপ্তারের সময় তর্জনী তুলে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে বাহাসে জড়িয়ে পড়লে সেই ছবি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। তখন তার বয়স ১১।
এর তিন বছর পর পাথর ছোড়ার অপরাধে ইসরায়েলি বাহিনী তাঁর ভাইকে ফের বাড়ি থেকে তুলে নিতে গেলে তাকে এক সেনাকর্তার সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। জ্ঞান হওয়ার পর প্রিয়জনদের অত্যাচারিত হতে দেখা মেয়েটির সশস্ত্র সেনাকর্তাকে চড় কষাতে হাত কাঁপেনি। দীর্ঘ সময় জিজ্ঞাসাবাদের সেলে বসে যখন মূত্রথলি ফেটে যাওয়ার জোগাড়, অথচ তাক করে রাখা ক্যামেরার ভয়ে বাথরুমে যাওয়া যাচ্ছে না, তখন সিদ্ধান্ত নেয়, বিশ্বকে সব জানিয়ে দেবে সে। এই লেখা তামিমির মতো কয়েক লাখ ফিলিস্তিনির সঙ্গে হওয়া চরম অন্যায় আর তামিমিদের দেশপ্রেমের দলিল। দেনা তাকরুরি এই লেখায় তামিমির সই। দেনা ফিলিস্তানি শরণার্থীর সন্তান। বড় হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। বারবার ফিরে গেছেন মা–বাবার ভিটায়। আমি বড় হয়েছি ওয়েস্ট ব্যাংকের ছোট্ট গ্রাম নবি সলেহতে। ফিলিস্তিনের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র—টগবগে, জীবন্ত আর সম্ভাবনাময় শহর রামাল্লা থেকে গাড়িতে নবি সলেহ পৌঁছতে ২৫ মিনিট সময় লাগে। নবি সলেহ অবশ্য রামাল্লার ঠিক উল্টো, খুবই ছিমছাম আর সাধারণ। আমাদের গ্রামে একটি স্কুল, একটি মসজিদ, একটি বাজার আর একটিই গ্যাসস্টেশন। তবে সবচেয়ে বড় কথা—আমরা আছি অনেকে। এই গ্রামের ৬০০ বাসিন্দা পরস্পরের সঙ্গে রক্তের সম্পর্কে বা বৈবাহিক সম্পর্কে জুড়ে আছে, সবাই বৃহত্তর যৌথ তামিমি পরিবারের অংশ। আমার ছাত্রজীবনের সহপাঠী বন্ধুরা আদতে ছিল আমার তুতো ভাই-বোন। এটা একটা আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকা গোষ্ঠী, যেখানে একে অন্যের খোঁজ নেওয়া রোজের রুটিন। এমনটাই চলে আসছে কয়েক শতক ধরে।
একবার দেখলেই নবি সলেহকে মনে হবে ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়। রমণীয়, সুখে পরিপূর্ণ একটি গ্রাম, বিন্দু বিন্দু অসংখ্য জলপাইগাছকে আশ্রয় দিয়েছে যে পাহাড়ের সারি, যে জলপাই বনে প্রায়ই বুনো ঘোড়া আর গাধা চরে বেড়ায়—তার ঠিকানাও এই গ্রাম। এখানে সূর্যাস্তের লাল, বেগুনি আর সোনালি রঙের ম্যাজিক দেখা যায়। এখানে ছোটরা মুক্তভাবে খেলে বেড়ায়, এ–বাড়ি ও–বাড়ি দৌড়াদৌড়ি চলতেই থাকে, বড়রা এসব খুদেকে মুখে ঘরোয়া খাবার ঠুসে দেয়। কিন্তু প্রাথমিক ছবিটা আপনাকে পুরো গল্পটা বলবে না কখনো। গোটা গল্প জানতে আপনাকে আমাদের গ্রামের ওই মূল রাস্তায় তাকাতে হবে, চোখ রাখতে হবে উপত্যকার অন্য প্রান্তের পাহাড়গুলোর দিকে।
ওদিকেই ইসরায়েলি ইহুদি হালামিশদের প্রাচীরঘেরা জনবসতি—লাল টালির সুসজ্জিত বাড়ি, চকচকে বারান্দা, খেলার মাঠ, সুইমিংপুল। হালামিশরা চিরকাল এখানে ছিল না। ১৯৭৭ সাল নাগাদ বেআইনি ভাবে ওরা আমাদের গ্রামের জমি দখল করে।
আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলিদের গড়ে তোলা কয়েক শ বসতির একটা এটা। এই বসতিগুলোতে মূলত ইসরায়েলি ইহুদিরাই থাকে; এবং ক্রমেই স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের তুলনায় চক্রবৃদ্ধি হারে ওরা সংখ্যায় বাড়তে থাকে। বছরের পর বছর আমরা দেখছি, ইসরাইলের রাষ্ট্রীয় মদতে হালামিশরা আমাদের জমিজিরাত ও সম্পদ কেড়ে নিয়ে নিজেদের আস্তানার পরিধি বাড়িয়ে চলেছে। এই নবী সালেহ আসলে ফিলিস্তিনের একটা ক্ষুদ্রতম সংস্করণ। এক শতক ধরে ফিলিস্তিনিরা তাদের জমি কেড়ে নেওয়ার জিওনিস্ট প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়ছে।
১৯৪৭ সাল নাগাদ ব্রিটিশরা ঠিক করল, অনেক হয়েছে আর নয়। দায় ঝেড়ে ফিলিস্তিন সমস্যার ভার তারা রাষ্ট্রপুঞ্জের হাতে তুলে দেয়। ১৯৪৭ সাল নাগাদ ব্রিটিশরা ঠিক করল অনেক হয়েছে, আর নয়। দায় ঝেড়ে ফিলিস্তিন সমস্যার ভার তারা রাষ্ট্রপুঞ্জের হাতে তুলে দেয়। এই দেশভাগের ফলে ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক ভূমির ৫৫ শতাংশই পেল ইহুদিরা আর ৪২ শতাংশ থাকল আরব রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের হাতে। যদিও তখনও পর্যন্ত এই দেশের জনসংখ্যার ৬৭ শতাংশই ছিল ফিলিস্তিনি। স্থানীয় বেশির ভাগ জমিই ছিল তাদের। আর জনসংখ্যার ৩৭ শতাংশ এবং জমির ৭ শতাংশ ছিল ইহুদিদের হাতে।
ফলে ফিলিস্তিনের ভূমিপুত্ররা এই পরিকল্পনা কিছুতেই মানতে চাইলেন না। ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের কথা ঘোষণা করল। এই রাষ্ট্র দখল করার জন্য সেদিন নৃশংসভাবে বহু ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল। ফিলিস্তিনিরা বেদনা ভরে আজও এ ঘটনাকে ‘আল নাকাবা’ বা ‘বিপর্যয়’ হিসেবে স্মরণ করে। নিজেদের রাষ্ট্র গঠনের জন্য ইসরায়েল সাড়ে সাত লাখ ফিলিস্তিনিকে নিজেদের ঘর ছাড়তে বাধ্য করেছিল, চার শতাধিক ফিলিস্তিনি গ্রাম নির্মূল করে দিয়েছিল।
এই বইয়ের নামটা জানার পরই অনলাইনে অর্ডার করলাম, যাতে আমাদের ১৪ বছরের মেয়েটা এই বীভৎস গণহত্যা বিষয়ের ইতিহাস সম্বন্ধে কিছুটা ধারণা পায়। এরপর বইটা হাতে পাওয়ার পর তাকে কিছুটা ধারণা দিলাম। একই সঙ্গে ৯ বছরের ছেলেকেও বললাম। বললাম, আমরা আমাদের জায়গা থেকে এর প্রতিবাদ করব, যেভাবে সব সময় আমরা প্রতিবাদ করে থাকি। এর আগেও আমরা ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। গাজীপুর জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী দেলোয়ার ভাই খুন হবার পরও প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। বিশ্বের যেকোনো অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে এভাবেই আমরা প্রতিবাদ জানাই। পাশাপাশি যদি কোনো গণসমাবেশ হয়, সেখানেও যোগ দিই। বাচ্চাদের ছোটবেলা থেকেই পৃথিবী সম্বন্ধে, বাস্তবতা সম্বন্ধে একটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করি। এবারও সেটির চেষ্টা করলাম।
আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি ধর্ম–বর্ণনির্বিশেষে আমরা সবাই একই পৃথিবীর বাসিন্দা। তাই কারও ওপরে আঘাত করা মানে আসলে নিজেকেই আঘাত করা। কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা মানে নিজেকেই হত্যা করা। আমি তাই অফিস থেকে একটা প্ল্যাকার্ড প্রিন্ট করে নিয়ে এলাম যাতে লেখা—উই আর শেয়ারিং দ্য সেম ওয়ার্ল্ড হেন্স দ্য সেম ওন্ড। সঙ্গে ‘স্টপ জেনোসাইড’ লেখা আরও কিছু প্ল্যাকার্ড। এরপর সেগুলো হাতে নিয়ে আমি আর ছেলে দাঁড়ালাম আর মেয়ে আমাদের ছবি তুলে দিল। সেই ছবি সঙ্গে সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে দিলাম, যাতে অন্যরাও উৎসাহিত হয়। ফিলিস্তিনে এবারের গণহত্যা শুরু হওয়ার পর একটা বিষয় আমাকে খুবই আশাবাদী করেছে। ছাত্রদের আমি বলি, একটা দেশের বিবেক সর্বোপরি পৃথিবীর বিবেক।
আমাদের দেশের ইতিহাস বিবেচনায় দেখি, প্রতিটি আন্দোলন–সংগ্রামে তাদের সরব উপস্থিতি। ঘাতকের অস্ত্রের সামনে বুক উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করার সাহস মনে হয় অন্য কোনো শ্রেণি–পেশার মানুষের মধ্যে এতটা দেখা যায় না। তাদের হাতে অস্ত্র নেই কিন্তু তাদের বুকে আছে হিমালয়ের মতো উঁচু সাহস। দরকার হলে নিজের জীবন দিতেও তারা সদা প্রস্তুত। তাদের জীবনের বিনিময়ে জেগে ওঠে সাধারণ মানুষ, শুরু হয় গণবিস্ফোরণের। ফিলিস্তিন গণহত্যার কুশীলব আমেরিকার ছাত্ররা তাই জেগে উঠেছেন। তাঁরা ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে সরকার বিভিন্ন ধরনের অন্যায় ব্যবস্থা নিয়েও থামাতে পারছে না। তাঁদের বিবেক জেগে উঠেছে। এরপর সে জাগরণের ঢেউ লেগেছে সারা বিশ্বে। অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। রাজনীতির জটিল মারপ্যাঁচ ছাপিয়ে টম ওডেলের প্রেমের গান ‘অ্যানাদার লাভ’ হয়ে ওঠে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার অস্তিত্বের জানান দেওয়ার সংগীত।
‘এবং কেউ যদি তোমাকে আঘাত দেয়, আমি লড়তে চাই
কিন্তু আমার হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে বারবার
তাই আমি কণ্ঠ চালাব, দেখাব ধৃষ্টতা’
মডেলদের দুনিয়ায় দুই জগৎখ্যাত বোন জিজি হাদিদ ও বেলা হাদি। শুরু থেকেই দুজন ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলার তীব্র সমালোচনা করে এসেছেন। তাছাড়া ফিলিস্তিনে মানবিক কাজ করছে এ রকম চারটি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে ১০ লাখ ডলার অনুদান দিয়েছেন। এ ছাড়া ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার প্রতীক কেফিয়াহ স্কার্ফ দিয়ে বানানো পোশাকে কানে বেলা হাদিদ ফিলিস্তিনের পক্ষে নিজের শক্ত অবস্থানের বিষয়ে জানান দিয়েছেন। অস্কারজয়ী অস্ট্রেলিয়ান হলিউড অভিনেত্রী কেট ব্লানচেট কানের লালগালিচায় বিশ্বকে জানান দিয়েছেন, তিনিও ফিলিস্তিনের পক্ষে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি ছবি ‘অল আইস অন রাফা’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেই ছবিতে অসংখ্য তাঁবু দিয়ে গড়ে তোলা বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়শিবিরের দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ইউরোপের তিন দেশ-আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্পেন ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে।
আমি স্বপ্ন দেখি, ভবিষ্যতের পৃথিবী হবে বৈষম্যহীন। যেখানে সবাই একটা একান্নবর্তী পরিবারের মতো করে বসবাস করবে। আর একেকটা দেশ হবে সেই পরিবারের সদস্য। পরিবার সদস্যদের বিপদে সবাই সবার পাশে এসে দাঁড়াবেন। কেউই একা একা ভালো থাকার চেষ্টা না করে সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করবে। কারণ, অন্য একজন খারাপ থাকলে আজ হোক কাল হোক সেই হাওয়া এসে অন্যজনকে প্রভাবিত করবেই। পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণ থাকবে পৃথিবীর বিবেক ছাত্রদের হাতে। তারা বৃদ্ধ, ঝানু রাজনীতিবিদদের অবসরে পাঠিয়ে দেবে। তাঁদের বলা হবে আরাম করতে।
বিশ্বের শান্তি নষ্ট করতে তাদের আর কষ্ট করতে দেওয়া হবে না। ছাত্ররা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেবে কোমলমতি শিশুদের। তারা যদি কোনো কারণে তাদের লক্ষ্য থেকে সরে আসে বা সামান্য বিচ্যুতি দেখা দেয়, তাহলে এসব শিশুরা তাদের সঠিক পথ বাতলে দেবে।
সুকান্ত ভট্টাচার্য'র ‘ছাড়পত্র’ কবিতার কিছু লাইন দিয়ে লেখাটা শেষ করতে চাই—
‘এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান;
জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসস্তূপ-পিঠে।
চলে যেতে হবে আমাদের।
চলে যাব—তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ-শিশুর বাসযোগ্য ক’রে যাব আমি—
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।’
দূর পরবাসে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]