স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যে কারণে কনজারভেটিভ পার্টির পরাজয়
যুক্তরাজ্যে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের ২ মে লাখ লাখ ভোটার স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেন। সাধারণ নির্বাচনের আগে এ নির্বাচন শেষ বড় পরীক্ষা, যা সব সূচকে ১৪ বছর পর কনজারভেটিভ পার্টিকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পথ দেখাচ্ছে।
এ নির্বাচনের ফলের পর রক্ষণশীলেরা গভীর সমস্যায় রয়েছেন। চরম বিপর্যয় ঘটেছে ঋষি সুনাক নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল কনজারভেটিভ পার্টির। এ নির্বাচনে বড় ধরনের জয় পেয়েছে প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি। এমন ফলাফলের জন্য মূলত তিনটি কারণকে দায়ী করা হচ্ছে।
প্রথমত, বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক নীতির অধীন জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষত গত ১২–১৮ মাসে আরও খারাপ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক সেখানে বলেছিলেন, মুদ্রাস্ফীতি কমাতে জনগণের কাছে ব্যয় করার জন্য আরও অর্থ থাকবে। তবে সেটা আর হয়নি। ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ এবং বর্তমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের মতো ভূরাজনৈতিক সমস্যাগুলোও একটি অনিরাপদ শক্তি, যা গভীর সংকটকে সহায়তা করেছে। জীবনযাত্রার সংকট অবশ্যই ব্রিটেনকে আরও দরিদ্র করে তুলেছে। এ জন্য বাসিন্দারা আরও বেশি উদ্বিগ্ন।
দ্বিতীয়ত, সেখানে এ সরকারের চিকিৎসাসেবা উন্নত করার কথা ছিল। অথচ দেখা গেছে, আরও ধস নেমেছে। হেলথ ফাউন্ডেশনের একটি বিশ্লেষণে দেখা যায়, দিন দিন হাসপাতালগুলোতে অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য অপেক্ষার তালিকা বেশ লম্বা। সাধারণ মানুষ মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন।
তৃতীয়ত, ব্রেক্সিটের পর যুক্তরাজ্য বিশেষ করে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের প্রায় ৫০ বছরের ইউরোপীয় সাধারণ নীতির অবসান ঘটিয়ে একটি খুব উচ্ছ্বসিত এবং একটি নতুন পদ্ধতির সঙ্গে শুরু হয়েছিল। ব্রিটেন তার নিজস্ব শুল্ক নির্ধারণ করতে এবং বিশ্বজুড়ে অবাধে নিজস্ব বাণিজ্য চুক্তিতে আঘাত করতে স্বাধীন ছিল। এর মূলে ব্রিটিশ স্বার্থ। ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়া দেশটিকে সরকার একটি ব্রিটেনে রূপান্তর করতে ব্যর্থ হয়েছে।
লেখক: প্রিয়জিৎ দেবসরকার, যুক্তরাজ্য
*দূর পরবাসে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল অ্যাড্রেস: [email protected]