উত্তর আমেরিকার মানুষ আজ রোববার কেন এক ঘণ্টা বেশি ঘুমাবেন 

ফাইল ছবি

উত্তর আমেরিকা, তথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার বেশিরভাগ অঞ্চলে আজ রোববার থেকে কার্যকর হলো 'ডেলাইট সেভিং টাইম' (Daylight Saving Time - DST)-এর সমাপ্তি। এর ফলে এই অঞ্চলের কোটি - কোটি মানুষ পেলেন এক ঘণ্টা অতিরিক্ত ঘুম, তবে গ্রীষ্মকালীন লম্বা দিনের বিদায় জানিয়ে সন্ধ্যা নামবে আরও দ্রুত।

যা ঘটল আজ রাতে

DST শেষ হওয়ায় স্থানীয় সময় রোববার ভোর রাত ২টা-কে ঘুরিয়ে ১টা করা হয়েছে। এই সময় পরিবর্তনকে 'ফল ব্যাক' (Fall Back) বলা হয়। মূলত, গ্রীষ্মকালে ঘড়ি এক ঘণ্টা এগিয়ে দিয়ে যে 'ডেলাইট সেভিং টাইম' শুরু হয়েছিল, এখন আবার ঘড়ি এক ঘণ্টা পিছিয়ে স্বাভাবিক সময়ে (Standard Time)-এ ফিরে আসা হলো।

• রাতের দৈর্ঘ্য: ঘড়ি এক ঘণ্টা পেছানোয় শনিবার রাতের দৈর্ঘ্য এক ঘণ্টা বেশি হয়েছে।

• দিনের পরিবর্তন: আজ থেকে সকালে সূর্যের আলো এক ঘণ্টা আগে দেখা যাবে, কিন্তু সন্ধ্যায় সূর্যাস্ত হবে এক ঘণ্টা আগে। অর্থাৎ, অফিস বা কাজ শেষে দিনের আলো ফুরিয়ে যাবে দ্রুত।

কেন এই সময় পরিবর্তন? - ইতিহাসের পাতা থেকে

এই সময় পরিবর্তনের মূল ধারণা হলো সূর্যালোকের সঠিক ব্যবহার এবং শক্তি সাশ্রয় (Energy Conservation)।

• ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: 

এই পদ্ধতির সূচনা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়, ১৯১৬ সালে জার্মানি এবং অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরিতে, যাতে কর্মঘণ্টায় প্রাকৃতিক আলো ব্যবহার করে কৃত্রিম আলোর ব্যবহার কমানো যায় এবং কয়লার মতো জ্বালানি সাশ্রয় করা যায়।

• প্রথম কানাডায়: তবে মজার বিষয় হলো, বিশ্বের প্রথম যে শহরটি পরীক্ষামূলকভাবে এই নিয়ম শুরু করেছিল, সেটি ছিল কানাডার অন্টারিও প্রদেশের পোর্ট আর্থার শহর, যা ১৯০৮ সালেই শুরু হয়।

• আমেরিকায় প্রচলন: ১৯১৮ সালে আমেরিকাতেও এটি শুরু হয়। যদিও আধুনিক গবেষণায় বিদুৎ শক্তি সাশ্রয়ের প্রভাব নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, তবে লম্বা গ্রীষ্মের সন্ধ্যায় অতিরিক্ত এক ঘণ্টা দিনের আলো পাওয়ার সামাজিক সুবিধা বজায় রাখতে এটি এখনো প্রচলিত।

যেখানে ঘড়ি বদলাবে না

উত্তর আমেরিকায় সবাই কিন্তু ঘড়ি পরিবর্তন করেন না। এই রাজ্য ও অঞ্চলগুলো সারা বছর একই সময়ে থাকে:

• মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: শুধু দুটি রাজ্য— হাওয়াই এবং অ্যারিজোনার বেশিরভাগ অঞ্চল (নেভাজো নেশন ছাড়া)—DST অনুসরণ করে না।

• কানাডা: কানাডার মধ্যে সাসকাচেওয়ানের প্রায় পুরো অংশ, ইউকন, ব্রিটিশ কলম্বিয়া ও কুইবেকের কিছু প্রত্যন্ত অঞ্চল সারা বছর স্ট্যান্ডার্ড টাইম মেনে চলে।

কবে আবার ফিরবে ‘ডেলাইট সেভিং টাইম’?

এই পরিবর্তন সাময়িক। শীতকাল শেষে বসন্তের শুরুতে আবারও ঘড়ি এক ঘণ্টা এগিয়ে দিয়ে DST শুরু হবে।

• পরবর্তী পরিবর্তন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় (যেসব অঞ্চল DST অনুসরণ করে) পরবর্তী সময় পরিবর্তন বা 'স্প্রিং ফরোয়ার্ড' (Spring Forward) হবে ২০২৬ সালের মার্চ মাসের দ্বিতীয় রবিবার, অর্থাৎ ৮ মার্চ, ২০২৬ তারিখে।

এই  সময় পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ ও উত্তর আমেরিকার বেশিরভাগ অঞ্চলের সময়ের পার্থক্য এখন এক ঘণ্টা বেড়ে গেল। প্রবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ বা ব্যবসার সময়সূচি মিলিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে এই বিষয়টি মনে রাখবেন।