আটটি সারমেয় শাবক

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রথমে দুটি ও পরে দুটিসহ মোট চারটি ছানা দেওয়া হয়েছে মা কুকুরটিকে। গতকাল দুটি ছানা দেওয়ার সময় উপজেলা পরিষদ চত্বরের সামনেছবি: প্রথম আলো

এসেছিল আটটি শাবক এক সারমেয় মায়ের কোলে,

 তুলোর মতো নরম দেহ, নয়নে জোছনার আলো জ্বলে।

 হেসে–খেলে যখন কাটছিল দিন আগামী দিনের স্বপনে,

 হঠাৎ এক নিষ্ঠুর নারীর নজর পড়ল ওদের পানে।

 কেমনে সে হলো এত নিষ্ঠুর পেয়েও মাতৃত্বের সুখ,

 কোন অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দিতে কাঁপল না তার বুক।

দূর পরবাসে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]

 এই নারী কেমনে রেখেছে এত ঘৃণা অন্তরে তার পুষে,

 জানে না কি সবকিছু শেষ হয়ে যেতে পারে এক নিমেষে?

 দুনয়নে বহে অশ্রুধারা মাতা যে বেদনায় কাতর আজ,

 চিত্তের বেদনা সইতে না পারে স্তনের বেদনার লাজ।

 সন্তানহারা এই সারমেয় জননী আজ কার কাছে দেবে বিচার?

 কোন সে সমাজ কোন ন্যায়নীতি কে নেবে এই দায়ভার?

 একমুহূর্তের নির্মমতা নিভিয়ে দিল আটটি জীবনের স্পন্দন,

 কে দেবে সান্ত্বনা মাকে, কে থামাবে তার ক্রন্দন?

 নিরপরাধ প্রাণের বিরুদ্ধে কেন আজ এত কঠোরতা?

 মানুষ কি আর মানুষ নেই? কী নিদারুণ নির্মমতা!

 জলের ধারে বিরাজমান এক অদ্ভুত নিস্তব্ধতা,

 আটটি শিশুপ্রাণীর শেষনিশ্বাসের নীরবতা।

চলে গেল পৃথিবীর সকল মায়া কাটিয়ে,

 মানুষ নামক প্রাণীর নৃশংসতার শিকার হয়ে।

 মানবতার শিক্ষা না দিয়ে অমানুষ তৈরি মানুষেরই ব্যর্থতা,

 আর তাই তো সমাজে চলছে অন্যায়–অবিচার, হিংসা–অরাজকতা।

 তবুও বেঁচে আছে কিছু মানুষ, মানুষের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখে,

 তাই তো তুলে দিল দুটি সারমেয়ছানা আহত মায়ের বুকে।

 জাহান সৈয়দ মিনা

 ধানমন্ডি, ঢাকা, বাংলাদেশ

 ৩ ডিসেম্বর ২০২৫