মজা

(ডিসেম্বরের শীতের রাত। বাইরে আলোকসজ্জার ঝিকিমিকি।)

‘কী করো, বাজান।’

‘কিছু না মা। বার্সিলোনার আকাশ দেহি। ওগো ঈদ তো। সবাই ঘুরতাছে-ফিরতাছে। কেনাকাটায় ব্যস্ত।’

‘তুমিও যাইতা।’

‘ঠান্ডা না, মা।’

‘তাইলে থাহুক। যাইয়ো না।’

‘বাইরে অনেক আলো, আমগো দেশে বিয়ার সুম যিমুন লাইটিং করে, ওমুন।’

‘কার বিয়া লাগছে, বাজান।’

‘কারও না মা, ওগো ঈদ তো, তাই পুরা শহর লাইটিং করছে।’

‘হুদাহুদি, এত লাইটিং করছে ক্যান, বাজান।’

‘ওগো অনেক ট্যাহা তো, তাই।’

‘ট্যাহা তাহলেই খরচ করন লাগব,এইটা কোনো কথা, বাজান।’

‘ওগো ঈদ না মা।’

‘তোমার মনে আছে মা, ঈদের দিন তুমি আমগোরে টেহা দিতা। কইতা, বাজান যাও মজা খাইয়ো।’

‘হ,’

‘এইহানে মজা ফাওন যা না মা। টেহা দিয়াও না।’

‘কী কও বাজান। টেহা দিয়া ফাওন যাইত না কেরে।’

‘ফাওন গেলে তো কিনতাম না মা।’

‘খুঁইজা দেহো, ফাইবা; ফাইতা না কেরে।’

‘মজা কিননের টেহা নাই মা।’

‘সব টেহা বাইত্তে ফাডায়া দিছো কেরে। তোমারে না কইছি নিজের লাইগা রাখবা। তোমার একটা ভবিষ্যৎ আছে না।’

‘মজা কিননের লাইগা অনেক টেহা লাগে মা। এইডা কুলাইতে পারুম না।’

‘তাইলে থাহুক বাজান, মজা খাওন লাগত না। তুমি এইবার আইলে, পাইন্যার হাট থাইকা তোমারে মজা কিন্না খাওয়ামু নে।’

‘বার্সেলোনার মজার দাম আমি কোনো দিনও কুলাইতে পারুম না মা, আর তুমি সারা জীবন পাইন্যার হাটের মজার দাম, হাঁসের ডিম বেইচা কুলায়া গেলা।’

(ফোনের এক প্রান্তের চোখের জল জানে মজার দাম কত, অন্য প্রান্তের চোখেও জল, কিন্তু সে জানে না মজার দাম কত)।

* লেখক: শাহ-আলম রেইন, বার্সেলোনা, স্পেন।