টরন্টোতে মুগ্ধতা ছড়াল বাংলাদেশি ফার্মাসিস্টদের ‘ফ্যামিলি গালা ২০২৪’

কানাডার টরন্টোতে বাংলাদেশি ফার্মাসিস্টদের জমকালো আয়োজনে ছিল শিশুদের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনাছবি: আয়োজকদের সৌজন্যে

২ মার্চ কানাডার টরন্টোতে হয়ে গেল বাংলাদেশি ফার্মাসিস্টদের জমকালো আয়োজন ‘ফ্যামিলি গালা ২০২৪’। স্কারবরোর গ্র্যান্ড সিনামন কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত জাঁকজমকপূর্ণ এ অনুষ্ঠানে শতাধিক বাংলাদেশি ফার্মাসিস্ট ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশি ফার্মাসিস্টস ইন কানাডার (এবপিক) সহসভাপতি মাহবুবুর রশিদের সার্বিক পরিচালনায় এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেল সরকারের প্রভাবশালী এমপি শন চেন, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অন্টারিও পার্লামেন্টের বিরোধীদলীয় উপনেতা এমপিপি ডলি বেগম এবং টরন্টো সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও টরন্টো ট্রানজিট কমিশনের চেয়ারম্যান জামাল মায়ার্স। উপস্থিত আমন্ত্রিত অতিথিরা সবাই কানাডায় বাংলাদেশি ফার্মাসিস্টদের স্বাস্থ্যসেবা খাতে সক্রিয় ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

কানাডার টরন্টোতে বাংলাদেশি ফার্মাসিস্টদের জমকালো আয়োজন ‘ফ্যামিলি গালা ২০২৪’
ছবি: আয়োজকদের সৌজন্যে

অনুষ্ঠানের শুরুতে এবপিকের বোর্ড অব ডিরেক্টরসের চেয়ারম্যান আহমেদ আবদুল্লাহ তাঁর স্বাগত বক্তব্যে প্রবাসী হিসেবে তাঁর সংগ্রামী যাত্রা এবং ধীরে ধীরে কানাডায় তিনিসহ অন্য ফার্মাসিস্টরা কীভাবে তাঁদের পেশাগত জীবনে সফলতা অর্জন করেছেন, তার একটি আবেগঘন বর্ণনা দেন, যা উপস্থিত সবাইকে অনুপ্রাণিত করে। এরপর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আমিন মেহেদী এবপিকের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের একটি রূপরেখা তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, কানাডায় বর্তমানে তিন শতাধিক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফার্মাসিস্ট রয়েছেন। দেড় শতাধিক নিবন্ধিত ফার্মাসিস্ট কমিউনিটি ও হসপিটাল ফার্মেসিতে কর্মরত। এ ছাড়া ওষুধ উৎপাদনশিল্প, বায়োটেকনোলজি, গবেষণা, মেডিকেল ডিভাইস কোম্পানি, ফেডারেল সরকারের রেগুলেটরি বডি, হেলথ কানাডাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন শতাধিক ফার্মাসিস্ট। এ ছাড়া রয়েছেন ২০ জনের মতো উদ্যোক্তা, যাঁরা নিজস্ব ফার্মেসি, মেডিকেল ডিভাইস, হেলথ অ্যান্ড হাইজিন বা নিউট্রাসিউটিক্যাল ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, খুলনা, এশিয়া প্যাসিফিক, নর্থ সাউথ, ইস্ট ওয়েস্ট, মানারাত, ইউএসটিসিসহ বাংলাদেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অ্যালামনাই এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা এ মিলনমেলায় অংশগ্রহণ করেন। এবপিকের এ অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল শফিউল সাদী সম্পাদিত স্যুভেনির ‘ইনস্পেরিয়া’র প্রকাশনা উৎসব। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল মনমাতানো এক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। নাহিদ সুলতানা ও ফারজানা সোনিয়ার প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় প্রাঞ্জল এ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় বাচ্চাদের নাচ আর গানের বৈচিত্রময় পরিবেশনা সবাইকে মুগ্ধ করে।
ফার্মাসিস্ট মেহেদী, রনি, জনি, তোফা, সাদী ও আরিফের আকর্ষণীয় পুঁথিপাঠ এবং ইশতিয়াক, শাহেদ, শুভ, আজিম আর মেহেদীর ‘টিকাটুলির মোড়ে’ গানের সঙ্গে নাচটি বেশ দর্শকপ্রিয়তা পায়। এ ছাড়া আসাদ-নিশু ও দোলন-দীপনের যুগল নাচ সবার মনোরঞ্জন করে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন ফারহা তনুজা। আয়োজনের পরবর্তী অংশে শহীদ খন্দকার ও আলমগীর হোসেন কৃতী ফার্মাসিস্টদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এই দুই কৃতী ফার্মাসিস্ট রচিত দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ছিল এ অনুষ্ঠানের বাড়তি পাওনা।

ফ্যামিলি গালা ২০২৪-এর আহ্বায়ক মাসুম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল আজিম, অর্থ সম্পাদক জাহান মো. আরশাদ, খালেদ শামস এবং নুজহাত নাদিয়া ছিলেন অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায়। অনুষ্ঠান শেষে এবপিকের প্রেসিডেন্ট ফখরুদ্দিন আহমেদ উপস্থিত সবাইকে সদয় উপস্থিতির জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। পুরো আয়োজনের মিডিয়া পার্টনার ছিল কানাডার প্রথম ২৪ ঘণ্টার বাংলা টেলিভিশন ‘এনআরবি টিভি’। স্পনসর ও পার্টনার হিসেবে ছিলেন রিয়েল্টর আবদুল আউয়াল, মর্টগেজ ব্রোকার বজলুর মারুফ, ব্যারিস্টার আরিফ ইমতিয়াজ, ম্যাকসেন কানাডা, ফিন্যানশিয়াল অ্যাডভাইজার জিয়া হক, মর্টগেজ এজেন্ট এহসান খসরু, রিয়েল্টর রানা পারভেজ এবং সিএম বিল্ডার্স ও ফার্মেসি ব্যানার হোল-হেলথ কানাডা।