চেরি ফুল সমাচার ও বঙ্গীয় আম–বিষয়ক প্রস্তাব
জাপান ও কোরিয়ায় বসন্তে (Spring) বিভিন্ন ফুল ফোটা (Blossom) নিয়ে যে পাগলামি দেখেছি, তার ছিটেফোঁটা উন্মাদনা বাংলাদেশে লক্ষ করিনি কিংবা আমার দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে।
মধ্য মার্চ থেকে কোরিয়ায় চেরি গাছে থোকা থোকা ফুল ফুটতে শুরু করে। ফুল ফোটা শুরু হওয়ার অনেক আগ থেকেই পর্যটক টানতে বিভিন্ন মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য প্রচার চালানো হয়। জাপান ও কোরিয়ায় চেরি ফুল উপভোগ করতে তাবৎ দুনিয়ার নিযুত নিযুত ভ্রমণপিপাসু এসে জড়ো হন হান নদীর তীরে কিংবা টোকিওর বিভিন্ন প্রান্তরে।
মধ্য মার্চ থেকে মধ্য এপ্রিল এ সময়ে শুধু চেরি নয়, Almond blossom, plum blossom, apricot blossom–সহ আরও নানা ফুল ফোটে।
ফুলকেন্দ্রিক পর্যটনকেন্দ্র ইউরোপ আরও বেশি বহুমাত্রিক। নেদারল্যান্ডসকে বলা হয় টিউলিপের রাজধানী। দক্ষিণ নেদারল্যান্ডসের লিসে শহরে কেউকেনহফ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ টিউলিপ ফুলের বাগান। কেউকেনহফকে বলা হয় ‘গার্ডেন অব ইউরোপ’। মাত্র ৭৯ একর ভূমিতে সেখানে প্রায় ৭০ লাখ ফুলের কন্দ লাগানো হয়। প্রতিবছর গড়ে ১৫ লাখের বেশি পর্যটক এ বাগানের সৌন্দর্যে বিমোহিত হন। বছরে গড়ে ২৫ মিলিয়ন ইউরো রাজস্ব আয় হয় দেশটির।
একটু চিন্তা করে দেখলাম বাংলাদেশেও কিন্তু ফুল ফোটার কমতি নেই। রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলের নয়নজুড়ানো-মনমাতানো আম্রকানন যখন মুকুলে মুকুলে ছেয়ে যায়, তাকে নির্দ্বিধায় ‘Mango blossom’ অভিধা দেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া লিচু, শর্ষে, সূর্যমুখীও আছে আমাদের এ বঙ্গীয় ভূমিতে।
আমসহ আমাদের অন্য ফুল ফোটার সঠিক ব্র্যান্ডিং ও বাজারজাত করতে পারলে এগুলো হয়ে উঠবে কৃষি পর্যটন ও পল্লি পর্যটনের প্রধান আকর্ষণ। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়গুলো অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। যেকোনো ব্র্যান্ডিংয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই নেতৃস্থানীয় ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াকে এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে।
প্রখ্যাত কৃষি গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ যদি বিভিন্ন দেশের ফুল ফোটার প্রসঙ্গ অবতারণা করে আমাদের Mango blossom নিয়ে ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’-এ একখানা পর্ব তৈরি করেন, তাহলে তা হবে ‘Blossom Branding’-এ অনন্য সংযোজন।
লেখক: আবদুল্লাহ আল মামুন, সহকারী পরিচালক, বার্ড; বর্তমানে প্রেষণে দক্ষিণ কোরিয়ায় উচ্চশিক্ষারত
দূর পরবাসে লেখা পাঠাতে পারবেন আপনিও। ঠিকানা [email protected]