কানাডার ওয়াটার লুতে এসবিসিএর দুর্গোৎসব

সনাতন বেঙ্গলি অ্যান্ড কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের (এসবিসিএ) উদ্যোগে কানাডার ওয়াটার লু অঞ্চলে ১১ ও ১২ অক্টোবর আনন্দমুখর পরিবেশে উদ্‌যাপিত হলো মৃণ্ময়ী রূপে প্রথম দুর্গোৎসব।

গত বছর প্রথম দুর্গাপূজার সময় এসবিসিএ পরিবারের মধ্যে এক ক্ষীণ আশা জন্মেছিল যে একদিন তারা মাকে মৃণ্ময়ী রূপে পাবে। এবার সেই আশা পূরণ হলো, যখন অসংখ্য উৎসাহী মানুষের সহায়তায় দেশ থেকে মা দুর্গার প্রতিমা ওয়াটার লুতে আনা হলো। কানাডার ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দৃশ্যপটের মধ্যে এই উদ্যোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে দাঁড়াল।

দুর্গোৎসবের আয়োজন সফল করতে এসবিসিএর বিশাল পরিবারের সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রমের পাশাপাশি পৃষ্ঠপোষক, স্পনসর আর আর্থিক অনুদান দিয়ে সাহায্য করেছেন বহু মানুষ, প্রতিষ্ঠান। এসবিসিএ কৃতজ্ঞ, আপ্লুত এই অবদানের জন্য। তাঁদের প্রতি আমাদের অতল শ্রদ্ধা।

এ ছাড়া কানাডার পার্লামেন্টে ওয়াটার লুর এমপি বারদিস চ্যাগার এবং কিচেনারের এমপিপি মাইক মরিসের উপস্থিতি ও সমর্থন অনুষ্ঠানটির গুরুত্ব বাড়িয়ে তুলেছে। তাঁদের সহযোগিতা এসবিসিএর সদস্যদের উৎসাহিত করেছে এবং পুরো আয়োজনকে অর্থমণ্ডিত করে তুলেছে।

গতবারের মতো এবারও অসংখ্য কলাকুশলীর উচ্ছ্বসিত অংশগ্রহণে জমে উঠেছিল দুদিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সদ্য বোল ফুটা ছোট ছোট শিশু থেকে আরম্ভ করে, কিশোর–কিশোরীসহ পরিণত বয়সের শিল্পীদের আবৃত্তি, নৃত্য, সংগীত, শ্রুতনাটক, নবদুর্গা থিম সো, দুর্গা টক শো আর স্বনামধন্য শিল্পী পৌলমী নন্দন, চন্দন পালের মনোজ্ঞ সংগীত পরিবেশনা এ পূজার আনন্দকে অনেকগুণ বর্ধিত করেছে। তা ছাড়া অনুষ্ঠানের অনুষঙ্গ হিসেবে ধুনুচি খেলা, সিঁদুর খেলা, শঙ্খ ফুঁ, ঢাক বাজানো প্রতিযোগিতা এবং চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় ছোটদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে  আরও প্রাণবন্ত করেছে।

এবারের দুর্গোৎসব কেবল একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান ছিল না, বরং এটি প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সহযোগিতার একটি মহামিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। একদা এ অঞ্চলের যে বাঙালিদের টরন্টো, মিসিসাগাসহ দূরবর্তী অঞ্চলে যাওয়া ছাড়া কোনো গত্যন্তর ছিল না, তাঁরা এবার সুযোগ পেয়েছেন ভিন্ন ভিন্ন দিনে তিন তিনটি পূজাতে অংশগ্রহণ করতে।

এ উৎসবে আসা সহস্রাধিক অতিথির স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং সমাজের বিভিন্ন পেশাজীবীর অকুণ্ঠ সমর্থনে এসবিসিএ আশাবাদী যে ভবিষ্যতে তারা একদিন ওয়াটার লুতে বাঙালিদের একটি স্থায়ী মন্দির প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকে সার্থক করতে সক্ষম হবে।