জাতিসংঘ অধিবেশনের সাইডলাইনে ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ’ সম্মেলন অনুষ্ঠিত
৭৯তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি সম্মেলন ২৫ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেন্টার ফর এনআরবির উদ্যোগে আয়োজিত এই সম্মেলনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ তার রাষ্ট্রীয় স্বার্থ বজায় রেখে সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করে যাবে।
বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে প্রবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন এবং তাঁদের প্রেরিত অর্থ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বলিষ্ঠ অবদান রেখে চলেছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশ আজ নিজস্ব গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা আমাদের বৈদেশিক নীতির কতিপয় ক্ষেত্রে দেশের স্বার্থ সমুন্নত রাখতে কারও কোনো পরামর্শে বিচ্যুত হব না। আমরা আমাদের নিজস্বতা ও মর্যাদা বজায় রেখে প্রতিবেশীসহ সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে এগিয়ে যাব। আমাদের ছাত্র–জনতার আকাঙ্ক্ষা পূরণে ও দেশের স্বার্থ রক্ষায় আমরা বদ্ধপরিকর।’
এনআরবি সেন্টারের চেয়ারপার্সন এম এম এস সেকিল চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত সম্মেলনে নির্ধারিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন ইন্দোনেশিয়ার শিক্ষাবিদ ও চিন্তাবিদ শামসি আলী, জাতিসংঘের পরিবেশ ও জলবায়ুবিশেষজ্ঞ ইনা ইসলাম, লন্ডন ব্রান্ট কাউন্সিলের সাবেক মেয়র পারভেজ আহমদ ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ী নেতা মো. সবুর খান।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন এনআরবি সেন্টার আমেরিকার সাপোর্ট গ্রুপের প্রতিনিধি ব্যবসায়ী সানওয়ার চৌধুরী, লেখক সাংবাদিক শামসাদ হুসাম, সমাজসেবী বদরুন নাহার মিতা ও কবির চৌধুরী, নারী উদ্যোক্তা তহুরা চৌধুরী, আইনজীবী নাসির উদ্দীন, কমিউনিটি নেতা রোকন হাকিম, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বদরুল আলম, ব্যবসায়ী নেতা লিটন আহমদ, ব্যাংকার ওয়াসেফ চৌধুরী, সমাজসেবী আবদুর রহমান, প্রকৌশলী মোজাফ্ফর আহমদ, তরুণ উদ্যোক্তা শেখ ফরহাদ প্রমুখ। আবদুর রহিমের পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
বক্তারা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে প্রবাসী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পাশাপাশি দলনিরপেক্ষ মেধাবী ব্যক্তিদেরও কাজে লাগাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। এ ছাড়া পরবর্তী রাজনৈতিক সরকারের জন্য ইতিবাচক কার্যক্রম এবং সৎ ও নীতিবান কর্মকর্তাদের প্রশাসনের কাজে নিয়োজিত করার পথ তৈরির আহবান জানান। তাঁরা বলেন, প্রবাসীরা দিতে চান, রাষ্ট্রের কাজ হবে এটি গ্রহণের ব্যবস্থা নেওয়া। প্রবাসীরা বলেন, দেশে দুর্নীতি ও লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে, লুটের টাকা বিদেশে পাচার করে বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে, লুটকারীদের রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করতে হবে, রাজনীতির নামে দেশের ও প্রবাসীদের হয়রানি ও সম্পদহরণ বন্ধ করতে হবে, আদর্শ রাজনীতিবিদদের অগ্রাধিকার দিয়ে দেশ পরিচালনার ব্যবস্থা করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে এম এস সেকিল চৌধুরী বলেন, প্রবাসীরা বিদেশে দেশের ব্র্যান্ডিং করছেন, রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক অবদান রাখছেন। সুতরাং রাষ্ট্রকে প্রবাসীদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করতে হবে। পাওয়ার অব অ্যাটর্নি, এনআইডি, পাসপোর্ট নবায়নসহ অত্যাবশ্যকীয় কনস্যুলার সেবাগুলো সহজলভ্য করতে হবে। সেকিল চৌধুরী আরও বলেন, ‘আমাদের শান্তিরক্ষীরা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে চলেছেন, তাঁদের ত্যাগ বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
এ কাজকে আরও এগিয়ে নিতে যেতে হবে।’ তিনি বলেন, বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোকে দলবাজির বাইরে রাখতে হবে, কূটনীতিকদের দলীয় রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে দূরে রাখতে হবে, মিশনগুলোয় দলমত–নির্বিশেষে সব প্রবাসীকে সর্বোচ্চ সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে, মিশন কর্মকর্তাদের অযথা কাজে যোগদান থেকে বিরত রাখতে হবে। বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা ও প্রকাশনার কাজ থেকে মিশন কর্মকর্তাদের বিরত থেকে প্রবাসী ও দেশের কাজে সময় ব্যয় করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদানের জন্য সেকিল চৌধুরী সরকারের কাছে আহ্বান জানান। বিজ্ঞপ্তি
দূর পরবাসে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]