উদিত সূর্যকে মেঘমুক্ত আকাশ দাও!
অসংখ্য তরুণের উপস্থিতিতে ৫ আগস্টের ঘটনায় তরুণদের কাছে চিরঋণী রয়ে গেলাম। লাল সালাম তোমাদের। আকাশে উদিত এ সূর্যকে মুক্ত আকাশে সম্পূর্ণ উন্মুক্ত করে দেওয়ার দায়িত্ব ছাত্র বন্ধুরা, তোমাদের নয়। এ দায়িত্ব বাংলাদেশের সব দায়িত্ববান বয়স্ক নাগরিকের। বিশেষ করে আজ যাঁরা নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য এগিয়ে এসেছেন, তাঁদের। কেউ যেন আর তরুণদের এ বিজয় ছিনিয়ে নিতে না পারে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে বিজ্ঞজনদের।
বাংলাদেশের আকাশকে চিরকাল মেঘমুক্ত রাখার জন্য আমার কিছু পরামর্শ রইল—
১.
কুলষিত রাজনীতি ধুয়ে পরিচ্ছন্ন রাজনীতির প্রচলন করতে হবে। সময় নিয়ে উন্নত বিশ্বের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে রাজনীতির গণতান্ত্রিক পদ্ধতির প্রচলন যেকোনো মূল্যে ফিরিয়ে আনতে হবে।
২.
ব্যক্তি নয়, পদ্ধতিগত আমূল পরিবর্তন আনতে হবে।
৩.
গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যাংক, আইনশৃঙ্খলা—সব ব্যবস্থাই রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। এগুলোকে আজীবনের জন্য রাজনীতিমুক্ত করতে হবে।
৪.
সর্বস্তরে রাজনীতি থাকবে, এটা গণতান্ত্রিক মূলমন্ত্র। তবে প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। যেমন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্য প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। এতে শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা ও সব পর্যায়ে অস্থিরতা থাকবে না।
৫.
পুলিশকে সম্পূর্ণ ভেঙে নতুন করে গড়তে হবে। উত্তর মেরুর দেশগুলো থেকে পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে। যেমন সুইডেনের পুলিশ পৃথিবীর মধ্যে সর্বোচ্চ প্রশংসা পায় সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। এখানে পুলিশের গ্রহণযোগ্যতাও সর্বোচ্চ। পুলিশ বাহিনীকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।
৬.
আইন–আদালতকেও উন্নত বিশ্বের মতো আধুনিক করতে হবে। এখানে কোনো ধরনের রাজনীতি থাকতে পারবে না।
৭.
সংসদ, সরকার, প্রেসিডেন্ট ও জুডিশিয়ারি—এ চারটি প্রতিষ্ঠান একে অপরের সম্পূরক হিসেবে থাকবে।
৮.
যেকোনো ধরনের লীগ–দল অর্থাৎ ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, শ্রমিক দল ইত্যাদি বন্ধ করে দিতে হবে।
৯.
প্রবাসে নির্বাসিত অনেক স্কলার আছেন, যাঁদের ফিরিয়ে এনে দেশ গঠনের কাজে তাঁদের পরামর্শ নিতে হবে।
১০.
সর্বোপরি কোনোভাবেই বিতর্কিত রাজনৈতিক বা ব্যবসায়ীকে আগামী দিনে রাজনীতি বা প্রশাসনে আসতে দেওয়া যাবে না।
উপরিউক্ত পরামর্শগুলো আজ হোক কাল হোক সাফল্যজনকভাবে বাস্তবায়িত না করতে পারলে ৫ আগস্টের সূর্য আবার ঢাকা পড়ে যাবে মেঘের আড়ালে। না হলে আবার উত্তোলিত হবে বাংলাদেশের আকাশ–বাতাস। সেটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।
*লেখক: কামরুল ইসলাম, স্টকহোম, সুইডেন
**দূর পরবাসে ছবি, লেখা ও ভিডিও পাঠাতে পারবেন প্রবাসের পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]