বাংলাদেশে সহিংসতায় সাংবাদিকসহ প্রাণহানির ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার দাবি ইউকে বাংলা প্রেসক্লাবের
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় চার সাংবাদিকসহ দুই শতাধিক ব্যক্তির প্রাণহানির ঘটনায় বিচারের দাবি জানিয়েছে যুক্তরাজ্যে বাংলা গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন ইউকে-বাংলা প্রেসক্লাব। বৃহস্পতিবার সংগঠনটির সভাপতি রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, কোটা সংস্কারের দাবিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক সহিংসতায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিহত হন দৈনিক নয়াদিগন্তের সিলেট প্রতিনিধি এ টি এম তুরাব, ঢাকা টাইমসের হাসান মেহেদী, দৈনিক ভোরের আওয়াজের শাকিল হোসেন ও ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক তাহির জামান। এ ছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থী, পথচারী, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এসব ঘটনায় ইউকে-বাংলা প্রেসক্লাব তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। একই সঙ্গে হতাহত, নির্যাতন ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংসের প্রতিটি ঘটনায় আন্তর্জাতিক মানের স্বচ্ছ তদন্ত ও বিচার দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, কোটা সংস্কারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ১৬ জুলাই থেকে পুলিশসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন বাহিনীর পাশাপাশি সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট সহিংস কর্মীরা নজিরবিহীন দমন-পীড়নের তাণ্ডব চালিয়েছে। শুরু থেকেই সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও অরাজনৈতিক ছাত্র আন্দোলনকে সরকারি দল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করতে চেয়েছে। অন্যদিকে বিরোধীপক্ষও ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতির নামে একে নিজেদের রাজনৈতিক সুবিধা অর্জনের জন্য ব্যবহার করতে চেয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এত অল্প সময়ে কোনো একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে এমন বিপুলসংখ্যক হতাহতের নজির গত ১০০ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়কার হত্যাযজ্ঞ বাদ দিলে এই উপমহাদেশেও মিলবে না। এই বিপুল প্রাণহানির দায় প্রধানত সরকারের। ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের পরিবারের সঙ্গে প্রায় বিচ্ছিন্ন ছিলেন। দেশের ই-কমার্সসহ বহু খাতের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রেমিটেন্স প্রবাহে বড় ধরনের ধস নেমেছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিবৃতিতে সরকারের প্রতি কিছু প্রস্তাব পেশ করে ইউকে-বাংলা প্রেসক্লাব। প্রস্তাবে কারফিউ তুলে নেওয়া, অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করা,ভিন্ন মতের মানুষকে হয়রানি ও তাঁদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধ করা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘নির্বিচারে গ্রেপ্তার, আন্দোলনকারী ৬ জন সমন্বয়ককে আটক রেখে বিবৃতি আদায়, দমন-পীড়ন, শিক্ষার্থী ও তাঁদের স্বজনদের ভয়ভীতি প্রদর্শন বন্ধ করে অর্থবহ ইতিবাচক পরিবেশ সৃষ্টির দাবি করছি। গত কয়েকদিনের ঘটনায় সংক্ষুব্ধ প্রবাসীরা রেমিটেন্স না পাঠানোর প্রচারণার ফলে দেশের রেমিটেন্স প্রবাহে বড় বিপর্যয় নেমে আসার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্থায় হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা না পাঠিয়ে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর অনুরোধও জানাই প্রবাসীদের প্রতি।’