বাংলাদেশ-তুরস্ক কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর
বাংলাদেশের পতাকার রঙে সেজেছে আঙ্কারার আতাকুল টাওয়ার
তুরস্কের বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ এবং বাংলাদেশ-তুরস্কের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আঙ্কারার আতাকুল টাওয়ারে গত সোমবার (২২ এপ্রিল) কূটনৈতিক সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। এই দিন রাজধানী আঙ্কারা শহরের মাইলফলক আতাকুল টাওয়ারটি বাংলাদেশের পতাকার রঙে আলোকসজ্জা করা হয় এবং বিশালাকৃতির বিলবোর্ডে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং বাংলাদেশ-তুরস্কের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ কিছু স্থিরচিত্র প্রদর্শিত হয়।
এ বছরের ২৬ মার্চ রমজান মাসে হওয়ায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি ২২ এপ্রিলে আয়োজন করা হয়। এ আয়োজনে স্বাগতিক দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অন্যান্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, আঙ্কারায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সুশীল সমাজের নেতা, তুরস্কে বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যসহ চার শতাধিক অতিথি উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তুরস্কের শ্রম ও সামাজিক নিরাপত্তামন্ত্রী ভেদাত আই খান।
উভয় দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভিডিও বার্তা প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আমানুল হক। তিনি মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে উপস্থিত সবাইকে শুভেচ্ছা জানান এবং হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ, সম্ভ্রমহারা দুই লাখ মা-বোন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নচিত্রের পাশাপাশি বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে পারস্পরিক মূল্যবোধ, বিশ্বাস ও ঐতিহাসিক বন্ধনের ওপর ভিত্তি করে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আগামী দিনে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে, যা আগামী দিনে ব্যবসা, বিনিয়োগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, মানবসম্পদ, পরিবেশসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।
এরপর ভেদাত আই খান তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানান। অর্জিত অসাধারণ সাফল্যের জন্য বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। তিনি দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রা এবং দেশগঠনে জনগণ ও বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তরণের পর ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তুরস্ক সরকার সর্বদা বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ কমিউনিটি এবং দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের অংশগ্রহণে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পরে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে কেক কাটা হয় এবং আগত অতিথিদের নৈশভোজ পরিবেশন করা হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চলাকালে বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়নসংক্রান্ত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়, যা উপস্থিত অতিথিদের ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করে। বিজ্ঞপ্তি