অস্ট্রেলিয়ায় সন্তানদের বাঁচাতে পানিতে ডুবে বাংলাদেশি দম্পতির মৃত্যু
অস্ট্রেলিয়ায় সন্তানদের বাঁচাতে গিয়ে সমুদ্রে ডুবে এক বাংলাদেশি দম্পতির মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। একই ঘটনায় আরেক বাংলাদেশি গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গতকাল শনিবার দুপুরে দেশটির ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া রাজ্যের একটি সমুদ্রসৈকতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে জরুরি সেবাকর্মীরা দুর্ঘটনাস্থলে নিহত ব্যক্তিদের দুই মেয়েকে জীবিত উদ্ধার করতে পারলেও তাঁদের বাবা-মাকে উদ্ধারের পর মৃত ঘোষণা করেন। তাঁদের ভ্রমণসঙ্গী আরেক বাংলাদেশিকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁরা একই রাজ্যের রাজধানী পার্থে বসবাস করতেন। পরিবারটি ছুটি কাটাতে সমুদ্রতীরে ভ্রমণে গিয়েছিলেন।
নিহত বাংলাদেশি দম্পতি দুজন হলেন শহিদুল হাসান স্বপন ও তাঁর স্ত্রী সাবরিনা আহমেদ পাপড়ি। শহিদুল হাসান অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। বাংলাদেশে তাঁদের বাড়ি গোপালগঞ্জে। তাঁরা দুজনেই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তাঁরা যে সমুদ্রসৈকতে মারা যান, সেটি জনসাধারণের সাঁতারের জন্য উপযুক্ত জায়গা নয় বলে উল্লেখ করে তাঁদের মৃত্যুর খবরটি প্রকাশ করে দেশটির সরকারি সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ। এ সংবাদে আরও বলা হয়, এ সমুদ্রের তীরে কোনো লাইফগার্ড থাকে না এবং এটি একটি দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা।
বাংলাদেশি এ দম্পতির মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন দেশটির প্রবাসী বাংলাদেশিরা। নিহত অধ্যাপক শহিদুল হাসানের কর্মস্থল কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক বাংলাদেশি অধ্যাপক এবং গবেষণা পরিচালক আশরাফ দেওয়ান শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘স্বপনের সঙ্গে আমার দীর্ঘবছরের পরিচয়। খুবই শান্ত স্বভাবের মানুষ ছিলেন তিনি। আমরা তাঁর দুই মেয়ের শোক কাটিয়ে ওঠার জন্য দোয়া করছি। আর সবাইকে বলব, অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্রে ডুবে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। নদী কিংবা সমুদ্র, যা–ই হোক, শুধু সাঁতার জানা এ দেশে যথেষ্ট নয়, যেকোনো এলাকায় ঘুরতে যাওয়ার আগে ওই এলাকা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান নিয়েই যাওয়া উচিৎ।’