তুরস্কে স্বাধীনতা দিবস এবং বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ‘কূটনৈতিক’ সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস এবং বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপনে তুরস্কের আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রাণবন্ত সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছিলছবি: বিজ্ঞপ্তি

বাংলাদেশের ৫৪তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদ্‌যাপন উপলক্ষে তুরস্কের আঙ্কারায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে এক প্রাণবন্ত সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছিল। গত সোমবার (২১ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সন্ধ‌্যা সাতটায় এ আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তুরস্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক কেমাল মেমিশওলো। এ ছাড়া আঙ্কারা অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কুটনৈতিক সদস্য এবং তুরস্কের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আমানুল হক এবং প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ব্রি. জেনারেল মোহাম্মদ ইফতেকুর রহমান সস্ত্রীক অতিথিদের অভ্যর্থনা জানান।

বাংলাদেশ ও তুরস্কের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। অনুষ্ঠানস্থলে বাংলাদেশি বিভিন্ন সংস্কৃতি, চিত্র ও পণ্য প্রদর্শনী দেশি-বিদেশি সবাইকে মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কূটনৈতিক অঙ্গনের সদস্য, বিশিষ্ট অতিথি এবং বাংলাদেশের বন্ধুদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য দেন।

রাষ্ট্রদূত ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এই দিনে বাংলাদেশের সাহসী জনগণ স্বাধীনতার পথে তাঁদের প্রথম পদক্ষেপ নেন। এই দিন বাঙালির আত্মত্যাগ, সংগ্রাম ও অদম্য মনোবলের প্রতীক। পয়লা বৈশাখের গুরুত্বও তুলে ধরে তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বর্ণিল ও ঐক্যবদ্ধ সাংস্কৃতিক উৎসব, যা আনন্দ, ঐতিহ্য এবং নতুন আশাবাদে উজ্জীবিত। এ উপলক্ষে তিনি সবার জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি ও আনন্দ কামনা করেন। তিনি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কথাও উল্লেখ করেন, বিশেষ করে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র–জনতার নেতৃত্বে সংঘটিত গণ–অভ্যুত্থান এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরেন।

তুরস্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক কেমাল মেমিশওলো বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যকার গভীর ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন এবং কঠিন সময়ে পারস্পরিক সহমর্মিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন। বিশেষ করে, ২০২৩ সালে তুরস্কে সংঘটিত বিধ্বংসী ভূমিকম্পের সময় বাংলাদেশের সহযোগিতা ও সংহতির জন্য তিনি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

‘দূর পরবাস’-এ জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]

বক্তব্যের শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের জনগণকে স্বাধীনতা দিবস ও নববর্ষ উপলক্ষে আন্তরিক অভিনন্দন জানান এবং উভয় দেশের মধ্যে আরও গভীর সহযোগিতা এবং যৌথ সমৃদ্ধির জন্য কাজের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এবং উপস্থিত সবাইকে নৈশভোজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগের আমন্ত্রণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। এর আগে দূতাবাস বাংলাদেশ কমিউনিটি এবং তুরস্কের বিভিন্ন আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে গত মার্চ মাসে পৃথক একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন করেছিল।

বিজ্ঞপ্তি