বিয়ের চাপ-১ম পর্ব

বিয়ে
প্রতী

আমাকে বিয়ে করানো নিয়ে বাসায় জরুরি মিটিং চলছে। মিটিংয়ের সভাপতি করা হয়েছে বাবাকে। মিটিংয়ে আমাদের কয়েকজন নিকট আত্মীয়ও উপস্থিত। মিটিং ডেকেছে বড় বোন। যেভাবেই হোক তিনি আমাকে বিয়ে দিয়েই ছাড়বে। কারণ, তার ধারণা, আমার মাথায় সমস্যা আছে। আর এ সমস্যার কারণেই আমি নাকি জীবন সম্পর্কে উদাসীন। তার বিশ্বাস, অল্প কিছুদিনের মধ্যে আমি সম্পূর্ণ পাগল হয়ে যাব। তারপর আমি রাস্তায় রাস্তায় বেলি ড্যান্স দিয়ে পয়সা উপার্জন করব। তাঁর মাথায় কেন এ চিন্তা এসেছে, তা আমি জানি না।

মিটিংয়ের শুরুতেই আপা তার স্বামী কামাল সাহেবকে সূচনা বক্তব্য রাখতে আমন্ত্রণ জানালেন। দুলাভাই খুক খুক করে দুটো কাশি দিয়ে তাঁর বক্তব্য শুরু করলেন,
-সম্মানিত সভাপতিসহ উপস্থিত সবাইকে আমার সালাম। আসসালামু আলাইকুম।

আমার শ্যালক দিপুর বিবাহের বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য আজ আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি। আমাকে আমার গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। সে জন্য আমি আমার স্ত্রী পপি বেগমকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি আরও ধন্যবাদ জানাচ্ছি…

বিয়ে
ফাইল ছবি

আমার মামি বিরক্ত হয়ে দুলাভাইকে থামিয়ে দিয়ে বললেন,
-কামাল মিয়া, কথা বেশি প্যাঁচাইও না। আমাদের সময়ের মূল্য আছে। যা বলবা সংক্ষেপে বলবা, ঠিক আছে?

-জি মামি। তা যা বলছিলাম, আমরা সবাই জানি, বিবাহ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। পৃথিবীর সবারই বিবাহ করা উচিত। কারণ, বিবাহ ছাড়া জীবন একদম অন্ধকার। তাই তো কবি বলেছেন,
যে জন দিবসে মনের হরষে
জ্বালায় মোমের বাতি
আশু গৃহে তার দেখিবে না আর
নিশীথে প্রদীপ ভাতি।
অর্থাৎ, বিয়ে না করলে ঘরে বাতি জ্বলবে না। ঘর অন্ধকারে ডুবে থাকবে। মোমের বাতি জ্বালাইলেও তখন কাজ হবে না।

মিটিংয়ে উপস্থিত সবাই দুলাভাইয়ের কথা শুনে অবাক হয়ে তাঁর দিকে তাকিয়ে রইলেন। কারও মুখে কোনো কথা নেই। মনে হলো সবাই কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন। কিছুক্ষণ পর আমার মামি চোখমুখ কুঁচকে দুলাভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বললেন,
-জামাই, তুমি এটা কি উদাহরণ দিলা? এ কবিতার সঙ্গে বিবাহের কি সম্পর্ক! শোনো, তুমি এসব উল্টাপাল্টা উদাহরণ দিয়া মানুষের মাথায় প্যাঁচ লাগাইয়া দিয়ো না। আর তোমারে না বলছি, কথা সংক্ষেপ করতে?

দুলাভাই আবারও খুক খুক করে দুবার কেশে বললেন,
-জি মামি, সংক্ষেপে বলছি। আমি ও আমার স্ত্রী পপি বেগম, দিপুর বিবাহের জন্য পাত্রী নির্বাচনের দায়িত্ব পেয়েছি। এর জন্য আমাদের অনেক গবেষণা করতে হচ্ছে, জরিপ করতে হচ্ছে, চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে হচ্ছে। বিবাহের জন্য পাত্রী বাছাই করা আসলেই খুবই জটিল একটি কাজ। এ প্রসঙ্গে কবি বলেছেন,
ঐ দেখা যায় তালগাছ,
ঐ আমাদের গাঁ।
ঐখানেতে বাস করে
কানা বগীর ছা।

এবার মামি আর দুলাভাইয়ের দিকে তাকালেন না। তিনি ভুরু কুঁচকে আপার দিকে তাকালেন। তারপর বললেন,
-পপি তুই এ ব্যাটারে সহ্য করিস কেমনে? এ তো কথা কয় একটা, আর উদাহরণ দেয় আরেকটা। এর মাথায় তো জটিল সমস্যা আছে। তুই এরে তাড়াতাড়ি ডাক্তার দেখা। না হলে এই গাধা, সবারে পাগলা বানায় ছাড়বে।

আপা চোখ গরম করে দুলাভাইয়ের দিকে তাকালেন। দুলাভাই ভয়ে ঢোঁক গিলে আপার দিকে তাকিয়ে বললেন,
-সরি, আসলে আমি একটু নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম। আ…
-খবরদার, তুমি আর একটা কথাও বলবা না। চুপ করে বসে থাকো।

আপার ধমক খেয়ে দুলাভাই মুখ অন্ধকার করে বসে পড়লেন। দুলাভাই বসতেই আপা সবার উদ্দেশে তাঁর বক্তব্য শুরু করলেন,
-দিপুর বিবাহের বিষয়ে আলোচনার জন্য আজ আমরা একত্র হয়েছি। সবাই মিলে এ হারামজাদাকে জিজ্ঞাসা করেন, ওর সমস্যা কী? ও কি বিয়ে করবে, কি করবে না? কারণ, আমি ওর জন্য যে মেয়েকেই খুঁজে আনছি, সে মেয়েকেই হারামজাদা বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে বাতিল করে দিচ্ছে। কোনো মেয়েকেই সে পছন্দ করছে না। হারামজাদার ভাব দেখে মনে হচ্ছে সে মোগল সম্রাট।

আমি বসা থেকে দাঁড়িয়ে নরম সুরে বললাম,
-আপা শোনো, তোমার কথা বলার স্টাইল খুবই খারাপ। তুমি বোন হয়ে ভাইকে বারবার হারামজাদা বলে সম্বোধন করছ। এটা কিন্তু খুবই আপত্তিকর। তোমার আসলে ভাষার শালীন ব্যবহার শেখা উচিত।

-কি বললি? আমার ভাষা খারাপ? তোর মতো পাগলের কাছ থেকে এখন আমার ভাষার ব্যবহার শিখতে হবে? তুই কি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর?
-আপা দেখো, আমি তোমার সঙ্গে কত সুন্দর করে কথা বলছি। অথচ তুমি আমাকে অপমান করে কথা বলছ। এটা পরিহার করো।

-শোন, কথায় কথায় মানুষের ভুল ধরবি না, আর কথায় কথায় মানুষকে উপদেশ দিবি না।

বিয়ে
প্রতীকী ছবি

-আচ্ছা, আর ভুল ধরব না। আর উপদেশ দেব না। তুমি যা বলছিলে বলো।
আপা আবার তাঁর বক্তব্য আবার শুরু করলেন,
-এবার আমি যে মেয়েটিকে খুঁজে এনেছি, সে একটি অসাধারণ মেয়ে। আপনারা সবাই আগে মেয়েটির ছবি ভালো করে দেখুন।

এই বলে আপা কয়েকটি ছবি বের করল। একে একে সবাই ছবিগুলো দেখল। আপা সবার উদ্দেশে প্রশ্ন করলেন।

-মেয়ে কেমন দেখলেন?
সবাই প্রায় একসঙ্গে বলে উঠলেন, অসাধারণ!
-আসলেই অসাধারণ! মেয়ের নাম মলি। ও আমার বান্ধবীর ছোট বোন। এবার বিসিএস দিয়ে রামগড় সরকারি কলেজে শিক্ষক হিসেবে ঢুকেছে।

এই কথা শোনামাত্র হিন্দি সিনেমা ও সিরিয়াল দেখার পাগল আমার খালা উচ্ছ্বসিত হয়ে বললেন,
-কেয়া বলা? রামগড়! শোলে সিনেমা কি রামগড়! বাসন্তী কি রামগড়! শোন দিপু, এ মেয়েকে অবশ্যই শাদি করেগি। আমি সবাইকে গর্ব করে বলেগা, মেরা বেটে নে রামগড় কো সাদি কিয়া।

আমি খালার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলাম। এরপর নরম সুরে বললাম,
-খালা, এটা শোলে সিনেমার রামগড় না। এই রামগড় আমাদের খাগড়াছড়ি জেলার।
-কেয়া বলছিস তুই! এ বাসন্তীকি রামগড় নেহি?
-খালা শোনো, তুমি একটু হিন্দি সিনেমা-সিরিয়াল দেখা কমাও। প্লিজ, এভাবে কথায় কথায় হিন্দি ভাষায় কথা বলবা না।

-কিউ মেরা হিন্দি শুনে তেরা পাছোমে আগুন লাগ গেয়ি? তু মুজে হিংসা করতাহে?
-না খালা, কোথাও আগুন লাগেনি। আসলে তুমি অশুদ্ধ হিন্দি বলছ। তোমার বাক্য গঠন ভুল হচ্ছে। তাই তোমাকে হিন্দি বলতে মানা করছি। কোনো ভাষায় কথা বলতে হলে, আগে সে ভাষা ভালো করে শেখা উচিত, তাই না?
-হারামজাদে, তুই মুজকো উপদেশ দিবি না।

-খালা, আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি না। আমি শুধু তোমার ভুলটা ধরিয়ে দিচ্ছি। তুমি খুবই হাস্যকরভাবে হিন্দি বলছ।

দেখলাম খালা আমার কথায় মুখ কালো করে ফেললেন। তা দেখে আপা আমাকে ধমক দিয়ে বললেন,
-দিপু শোন, তুই কিন্তু খালার সঙ্গে বেয়াদবি করছিস। আমরা এখানে তোর বিয়ে নিয়ে আলোচনা করতে বসেছি, হিন্দি ভাষা নিয়ে না। আমি বুঝতে পারছি, তুই আসলে বারবার বিয়ের প্রসঙ্গ পাল্টে কথা অন্যদিকে নেওয়ার চেষ্টা করছিস।
-সরি আপা।

-শোন, মেয়েটা খুবই লক্ষ্মী। আমি লিখে দিতে পারি, এ মেয়ে কখনো স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করবে না। তোর একে বিয়ে করা উচিত।

-আপা শোনো, আমি কোনোভাবেই লক্ষ্মী মেয়ে বিয়ে করব না। বউ যদি ঝগড়া না করে, তাহলে তো দাম্পত্য জীবন ম্যাড়মেড়ে হয়ে যাবে। আমি ঝগড়া করা বউ চাই।
আপা ভুরু কুঁচকে কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। তারপর বললেন,
-শোন, ছবিতে যেমন দেখছিস, মলি সামনাসামনি তার চেয়েও সুন্দর। ও এত সুন্দর যে রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে সবাই তাকিয়ে থাকে।
-আপা, আমি কোনো সুন্দর মেয়ে বিয়ে করব না।

-সুন্দর মেয়ের সমস্যা কী?
-অনেক সমস্যা। প্রধান সমস্যা হলো, আমি ততটা সুন্দর না। এ অবস্থায় আমি সুন্দর বউ নিয়ে রাস্তায় বের হলে, সবাই বলবে দেখ, ওই যে পরির সঙ্গে এক হনুমান যায়। এই অপমান আমি নিতে পারব না আপা।

-ফালতু যুক্তি দিবি না। তুই জানিস, এ মেয়ের গানের গলা কত সুন্দর? দেখবি প্রতিদিন তোকে সুন্দর সুন্দর গান শোনাবে।

-আপা আমি কি গান শোনার জন্য বিয়ে করছি? শোনো, আমি এমনিতেই খুব একটা গান শুনি না। আর যদি কখনো গান শোনার ইচ্ছা হয়, তাহলে ইউটিউব থেকে শুনে নেব। আমি শিওর এই মেয়ে প্রতিদিন সকালে রেওয়াজ করে করে আমার সকালের শান্তির ঘুমের বারোটা বাজিয়ে দেবে।

-শোন, ও খুবই স্বাস্থ্য সচেতন।
-তাহলে তো আরও সমস্যা। এ মেয়ে নিজেও খাবে না। আমাকেও খেতে দেবে না। সারা জীবন সে আমারে ডায়েটিংয়ের ওপর রাখবে। আমারে শুধু চিরতার পানি, করলার জুস, শসার স্যালাদ খাওয়াবে। আমি সমুচা-শিঙারা, তেহারি-বিরিয়ানি খাওয়া মানুষ। ওগুলো ছাড়া আমি বাঁচব না।

-মলি খুবই মিতব্যয়ী। অযথা একটা পয়সাও খরচ করে না।
-আপা মিতব্যয়ী না, বলো কিপটা? দেখা যাবে আমারে হাত খরচের জন্য দশ টাকা দিয়ে বলবে, আগামী সাত দিন এই টাকায় চলবে।

-ওই, তোর সমস্যা কী? তোরে আমি মেয়ে সম্পর্কে যাই বলছি, তুই তাতেই সমস্যা বের করছিস? সত্যি করে বলতো, তুই বিয়ে করতে চাচ্ছিস না কেন? তোর কি কোনো সমস্যা আছে?

-আপা তুমি মা–বাবার সামনে এসব কী বলছ? আমার কিন্তু লজ্জা করছে।
-ন্যাকামি করবি না। সরাসরি উত্তর দে। তোর কি কোনো শারীরিক সমস্যা আছে?
-না না, আমার কোনো সমস্যা নেই। আসলে একজন অচেনা মানুষকে বিয়ে করতে কেমন জানি ভয় করছে।

মা আমার পাশেই বসা ছিলেন। তিনি আমার পিঠে হাত বুলিয়ে বললেন,
-তাহলে তোর চেনাজানা যদি কেউ থাকে, তো তাকে বিয়ে কর।
-না মা, আমার তেমন কেউ নাই।
-তাহলে তো কোনো সমস্যাই নাই।

-সমস্যা আছে মা। আসলে আমার বিয়ে করতে ইচ্ছা করে না মা।
-ইচ্ছা করে না, ইচ্ছা করাবি। শোন, তুই বরং এক কাজ কর। তুই মেয়েটার সঙ্গে একবার দেখা কর। দেখবি মেয়েকে দেখলেই তোর আগ্রহ জন্ম নেবে।
-মা শোনো, মেয়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য আমি এখন রামগড় যেতে পারব না।
আপা উৎসাহ নিয়ে বলে উঠলেন,
-আরে গাধা, তোকে রামগড় যেতে হবে না। মলি এখন ঢাকাতেই আছে।
-কি বললা, সে ঢাকায়? কলেজ রামগড়ে, সে ঢাকায় কি করে? এ তো দেখি মহা ফাঁকিবাজ। কলেজ ফাঁকি দিয়ে ঢাকায় বসে আছে। উঁহু, শোনো আপা, আমি কোনো ফাঁকিবাজ মেয়েকে বিয়ে করব না।

আমার কথা শেষ না হতেই, আপা বাবাকে উদ্দেশ করে বললেন,
-বাবা, তুমি কিছু একটা বলো। এই হারামজাদা কিন্তু এই মেয়েটাকেও বাতিল করার চেষ্টা করছে। বাবা শোনো, এমন ভালো মেয়ে ও কোথাও পাবে না।
এ সময় মা আপাকে ধমক দিয়ে বললেন,
-খবরদার, বারবার আমার ছেলেকে হারামজাদা বলবি না।

-মা শোনো, সব দোষ তোমার। তুমি আদর দিয়ে দিয়ে ওকে মাথায় তুলেছ।
বাবা হাত তুলে সবাইকে থামতে ইশারা করলেন। তারপর আমাকে বললেন,
-এক কাজ কর, তুই মেয়েটার সঙ্গে একবার দেখা কর। তারপর সিদ্ধান্ত নে।
আমি মাথা নেড়ে সম্মতি জানালাম। কারণ, আমি আমার বাবাকে প্রচণ্ড ভয় পাই। তিনি বলার পর আমার আর কিছু করার নেই। মলির সঙ্গে আমাকে এখন দেখা করতেই হবে। তবে আমি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম, যেভাবেই হোক এ বিয়ে আমাকে ভাঙতেই হবে।

বসুন্ধরা সিটির ফুডকোর্টে আমি, আপা আর দুলাভাই বসে মলির জন্য অপেক্ষা করছি। বেশ কিছুক্ষণ পর দুটো মেয়ে এসে আমাদের টেবিলের সামনে দাঁড়াল। আমি চোখ তুলে তাকাতেই ওর মধ্যে একটি মেয়ে আমার দিকে সরাসরি তাকিয়ে বলল,
-আমি মলি। আর ও আমার খালাত বোন।

মলিকে দেখেই আমি অবাক হয়ে গেলাম। কারণ, আপার দেওয়া বর্ণনার সঙ্গে কোনো মিল নেই। মেয়ে অসাধারণ সুন্দর শুধু সেটিই মিল আছে। আপা বলেছিল, মলি সব সময় শাড়ি পরে। অথচ মলি এসেছে জিনস পরে। চোখে সানগ্লাস, বোম্বের নায়িকাদের মতো চুল। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। আপা বলেছিল, মেয়ে লাজুক, কথা কম বলে। অথচ প্রথম কথাটাই মলি আমাকে বলল ঝাঁজাল কণ্ঠে।

-আপনি বসে আছেন কেন? কেউ এলে যে তাকে দাঁড়িয়ে অভ্যর্থনা জানাতে হয়, সেই ভদ্রতাটুকুও কি জানেন না?

আমি থতমত খেয়ে উঠে দাঁড়ালাম। মনে হলো, কে যেন দূর থেকে আমাকে বলছে, দিপু সাবধান। দেখ, এ মেয়ে কিন্তু প্রথম দেখাতেই বিড়াল মেরে দিয়েছে। এর সঙ্গে বিয়ে হলে, এই মেয়ে তোরে সারা জীবন দৌড়ের উপর রাখবে।

মলি একটা চেয়ার টেনে নিয়ে বসল। চেয়ারে বসতে বসতে বলল,
-গতকাল আপনার আপার কাছে শুনলাম, আপনি নাকি আমাকে বিয়ে করতে চাচ্ছেন না? আপনি নাকি বলেছেন, মেয়ের অনেক অনেক সমস্যা? আপনার এত বড় সাহস, আপনি আমাকে রিজেক্ট করেন! মেয়েদের আপনারা কি মনে করেন?

আমি কি বলব কিছু খুঁজে পেলাম না। শুধু অবাক হয়ে আমার বোনের দিকে তাকিয়ে রইলাম। তারপর মনে মনে নিজেকে প্রশ্ন করলাম, ‘এই কুটনি কি আসলেই আমার বোন?’ চলবে...
*[email protected]