মজাদার দেশীয় খাবারগুলো টিকে থাকুক
প্রতিটি জাতির একটি বৈশিষ্ট্য আছে, যার ওপর তারা বিশ্বাসী। বাংলাদেশি এবং বাঙালি হিসেবে আমি মনে করি আমরা অত্যন্ত ভাগ্যবান, কারণ আমাদের দেশ কৃষিপ্রধান। এখানকার মাটিতে যা ফলাই তাই ফলে। আমাদের দেশে যেসব খাবার রয়েছে বিশ্ব আজ সেসব খাবারের সন্ধান করছে।
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসের কারণে গোটা বিশ্বেই নানা ধরনের অসুখের প্রবণতা বেড়ে চলেছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে অকালমৃত্যুর ঝুঁকি। অথচ খাদ্যাভ্যাস কিংবা জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনলেই এ ঝুঁকি অনেকটা কমানো সম্ভব।
এমন কিছু খাবার আছে, যা সপ্তাহে অন্তত একবার খেলেও ভালো ফল পাওয়া যায়।
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকায় সপ্তাহে একদিনের জন্য হলেও অ্যাভোকাডো, পেঁপে, শিম, পটোল, গাজর, কপি, কচু, কচুর লতি, কচুর মুখি ইত্যাদি খাওয়া দরকার।
অ্যাভোকাডো, টমেটো, শসা এসব দিয়ে সালাদ করে খেলে রক্তে কোলেস্টরলের পরিমাণ কমে। এতে হৃদ্রোগ, স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস পায়। পালংশাক, লালশাক, কলমিশাক, পুঁইশাকের মতো কম ক্যালরিসম্পন্ন খাবার খাদ্যতালিকায় রাখলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং অন্যান্য পুষ্টি পাওয়া যায়। সামান্য পরিমাণে পালংশাক সপ্তাহে একদিন খেলেও শরীর যথেষ্ট পুষ্টি পায়।
বাংলাদেশ মাছের দেশ। কথায় বলে মাছে–ভাতে বাঙালি। অথচ সেই দেশীয় মাছ পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের উচিত হবে উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের শতাধিক হ্যাচারিতে দেশীয় প্রজাতির মাছের পোনা উৎপাদন করা। দেশে নানা ধরনের মাছের চাষাবাদ করে বাজারে বিপন্ন প্রজাতির পাবদা, গোলশা, টেংরা, মেনি, চিতল, ফলি ইত্যাদি মাছের প্রাপ্যতা বাড়ানো উচিত।
ভেজাল খাবারের কারণে যে রোগগুলো দ্বারা আমরা বেশি আক্রান্ত হই তা হলো অ্যালার্জি, অ্যাজমা, চর্মরোগ, বমি, মাথাব্যথা, খাদ্যে বিষক্রিয়া, অরুচি, উচ্চ রক্তচাপ, ব্রেন স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ ইত্যাদি।
তরুণ প্রজন্মের অনেকেই হয়তো বুঝবে না যদি বলি নাল (শাপলা) ঘন্ট, চিংড়িভর্তা, কদু বা লাউভাজি, টাকি মাছের ভর্তা, মটর কালাইয়ের শাকভাজি, গরু–ছাগলের ভুঁড়ি বা তাদের মাথার ঘিলুভাজি ইত্যাদি।
এসব খাবার ছিল অমৃত, যার স্বাদ আজও জড়িয়ে রয়েছে জিবে। ছোটবেলায় শুধু যে মজার মজার খাবার খেয়েছি, তা–ই নয়, তার সঙ্গে এমনও খাবার মা তৈরি করতেন বিশেষ করে অসুস্থ হলে যেমন আমাশয় সারাতে থানকুনির পাতা বেটে ভর্তা করেছেন বা হালকা ঝোলে শিং বা দেশীয় মাগুর মাছ দিয়ে রান্না করেছেন, যা ছিল এক সুস্বাদু খাবার। শরীরে চুলকানি হলে নিমপাতা দিয়ে তৈরি হতো খাবার। এভাবে হতো নিত্যনতুন মজাদার খাবারের পরিবেশন।
এখন হয়তো অসুখ হলে একটি ট্যাবলেট খেলে সে অসুখ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে নতুন যে আর তিনটি রোগের উপসর্গ শরীরে প্রবেশ করে না, তা কিন্তু নয়। ছোটবেলায় সব খেয়েছি, কখনো কল্পনায় ভাবিনি খাবারে বিষ মিশানো হতে পারে।
আমি বাংলাদেশের গ্রামের ছেলে। গ্রামের পরিবেশে শিশুকাল কেটেছে তবে শহরেও থেকেছি। আজ যে মাগুরা জেলা হয়েছে, অতীতে তা ছিল মহকুমা। সেখানের সরকারি স্কুলে দুই বছর পড়েছি। এ ছাড়া ঢাকায় দুই বছর থেকে ইন্টারমিডিয়েট পড়েছি। সব মিলে আমার ছোটবেলার সময়গুলো গ্রাম ও শহর উভয় জায়গায় কেটেছে।
গ্রামে সব ধরনের খাবার যেমন মাছ, শাকসবজি, ফলমূল, হাঁস-মুরগি, দুধ ইত্যাদি ছিল। কিছু খেতে ইচ্ছে হলে কখনো ভাবিনি যে এটা খাওয়া যাবে না বা এটা খেলে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা আছে। মনের আনন্দে যখন যেটা খুশি সেটা খেয়েছি কোনো সমস্যা ছাড়াই। ইদানীং খেজুর, আখ বা তালের গুড়ের মধ্যে চিনি মিশানো হয়। কিন্তু সবাই তো খাঁটি খেজুরের গুড় বা রস খেতে চায়। এখন আবার তাতেও ভেজাল? আমরা ব্রিটিশ বা পাকিস্তানিদের ভেজাল খাওয়াইনি অথচ নিজেরা নিজেদের ভেজাল এবং বিষাক্ত জিনিস খাওয়াচ্ছি। এর কারণ কী? আমার শেষ ভ্রমণ বাংলাদেশে থাইল্যান্ডের কই মাছ, ফার্মের মুরগি, ফরমালিনযুক্ত সবজি খেতে হয়েছে, যা আমাকে যথেষ্ট কষ্ট দিয়েছে।
একই সঙ্গে মায়ের হাতে ছোটবেলার রান্না করা খাবার আর সেই মধুর স্মৃতিকে মনে করিয়ে দিয়েছে। আমি ভাবতেও পারিনি যে মাতৃভূমিতে গিয়ে আসল বাংলা খাবার খেতে পারব না! তবে হ্যাঁ, গ্রামে কিছুটা সুযোগ হয়েছিল, তা–ও সহজ উপায়ে নয়। অথচ ছোটবেলা যেসব খাবার খেয়েছি সেগুলো খেতে মন চাইলেও পাওয়া দুষ্কর।
আমি যে সময়ের কথা নিয়ে স্মৃতিচারণ করছি, তা হবে ৪০ বছর আগের কথা। সে সময়ও ভেজাল নিয়ে কথা হয়েছে বটে। যেমন মসুরের মধ্যে বাজারির মিশ্রণ, দুধে পানি মেশানো, পাট কম শুকানো, শর্ষের তেলের মধ্যে অন্য তেল মেশানো ইত্যাদি। স্কুলে পরীক্ষার হলে মাঝেমধ্যে কেউ কেউ নকল করেছে। যখন ধরা খেয়েছে এ অপরাধের কারণে প্রতিবেশী থেকে শুরু করে গ্রামে সেটা রটে গেছে। সে এক লজ্জার কথা! এসব ছিল তখনকার দিনে ঘৃণ্য অপরাধ।
চলুন, এবার জানা যাক কী অবস্থা বর্তমানে। এখন দেশে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি ও ফলমূল উৎপাদনের জন্য কীটনাশক ব্যবহার করার ফলে খাবারগুলোতে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিষক্রিয়া কার্যকর থাকে। তা ছাড়া বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবার ও ফলমূল আকর্ষণীয় ও দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার জন্য ক্ষতিকর কার্বাইড, ইন্ডাস্ট্রিয়াল রং, ফরমালিন ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।
অধিক মুনাফার আশায় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন মসলায় বিষাক্ত রং, ধানের তুষ, ইট ও কাঠের গুঁড়া, মটরডাল, সুজি ইত্যাদি মেশাচ্ছে। ভেজাল মসলা কিনে ক্রেতারা শুধু প্রতারিতই হচ্ছেন না, এতে তৈরি হচ্ছে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি।
বাজারের কলা, আম, পেঁপে, পেয়ারা থেকে শুরু করে আপেল, আঙুর, নাশপাতিসহ দেশি-বিদেশি প্রায় সব ফলেই মেশানো হচ্ছে বিষাক্ত কেমিক্যাল। সাধারণ ফলমূলের উজ্জ্বল রং ক্রেতাদের নজর কাড়ে, সেগুলো বিক্রিও হয় বেশি দামে। তাই অপরিপক্ব ফল পাকাতে ক্যালসিয়াম কার্বাইড এবং তা উজ্জ্বল রঙে রূপান্তর করার জন্য অধিক ক্ষারজাতীয় টেক্সটাইল রং ব্যবহার করা হচ্ছে অবাধে।
অন্যদিকে ফলমূল দীর্ঘ সময় ধরে সংরক্ষণ করতে ফরমালিনসহ আরও কিছু বিষাক্ত পদার্থেরও ব্যবহার চলে অহরহ। বাস্তবে এসব ফল বাইরে পাকা মনে হলেও এর ভেতরের অংশে অপরিপক্ব থেকে যায়। এ ছাড়া অপরিপক্ব ফলমূলে স্বাদ-গন্ধ ও ভিটামিন অনেক কম থাকে।
মাছ ধরার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োগ করা হয় ফরমালিন। অপেক্ষাকৃত বড় আকারের মাছগুলো তাজা থাকা অবস্থায় ইনজেকশনের মাধ্যমে ফরমালিন পুশ করা হয়। আর ছোট আকারের মাছগুলো শুধু ফরমালিন মিশ্রিত পানির ড্রামে চুবিয়ে তুললেই চলে।
বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুতকারী কারখানাগুলোয় পর্যাপ্ত আলো–বাতাসের ব্যবস্থা নেই। দম বন্ধ হওয়া গরমে খালি গায়ে বেকারি শ্রমিকেরা আটা-ময়দা পা দিয়ে দলিত মথিত করেন। সেখানেই তৈরি হয় পাউরুটি, বিস্কুট, কেকসহ নানা লোভনীয় খাদ্যদ্রব্য। এসব বেকারির পণ্যে ভেজাল আটা, ময়দা, ডালডা, তেল, পচা ডিমসহ নিম্নমানের বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করা হয়।
পরে সেসব ভেজাল খাওয়ার কারণে আমাদের দেহে ছড়িয়ে পড়ে বিষাক্ত কেমিক্যাল, শুরু হয় নানা অসুখ-বিসুখ। কেমিক্যাল মিশ্রিত বা ভেজাল খাদ্য গ্রহণের ফলে যে উপসর্গগুলো দেখা যায় সেগুলো হলো পেটব্যথা, বমি হওয়া, মাথাঘোরা, পাতলা পায়খানা, শরীরে ঘাম বেশি হওয়া এবং দুর্বল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
ভেজাল খাবারের কারণে যে রোগগুলো দ্বারা আমরা বেশি আক্রান্ত হই তা হলো অ্যালার্জি, অ্যাজমা, চর্মরোগ, বমি, মাথাব্যথা, খাদ্যে বিষক্রিয়া, অরুচি, উচ্চ রক্তচাপ, ব্রেন স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ ইত্যাদি।
এখন জেনেশুনে বিষ পান এবং বিষাক্ত জিনিস খাওয়া হচ্ছে সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু কেন এমন হলো? পাশ্চাত্যে, যেমন সুইডেনে এরা এদের নিজেদের দেশের খাবারকে এখনো প্রাধান্য দিয়ে চলছে।
অথচ আমরা কেন আমাদের বাঙালিত্ব ছেড়ে বিদেশিদের খাবারে আকৃষ্ট হলাম? বিদেশি খাবারের প্রবল স্রোতে দেশীয় খাবারগুলো যাতে বিলুপ্ত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
দেশকে ভালোবাসতে হলে দেশের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে হবে। প্রতিদিন স্কুলে জাতীয় সংগীত গাইলেই কি সোনার বাংলাকে ভালোবাসা যাবে? তার জন্য কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশে খাবারে ভেজাল আজ কোনো গোপনীয় ব্যাপার নয়। মনে হচ্ছে সবার মধ্যে এটা একধরনের অলিখিত বৈধতা পেয়েছে। এখন মহাসমারোহে প্রায় সব ধরনের খাদ্যপণ্য মরণব্যাধির নানা বিষাক্ত পদার্থে পরিপূর্ণ। কিন্তু এমন তো কথা ছিল না।
আমাদের ভুলে গেলে চলবে না একটি দেশের মানুষের সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো তাদের নৈতিকতা। আমরা তাজা রক্ত বিসর্জন দিয়েছি একটি বৃহৎ উদ্দেশ্য সামনে রেখে, তৈরি করেছি মহান আত্মত্যাগের অবিস্মরণীয় ইতিহাস। ১৯৭১ সালের সেই রক্তাক্ত আত্মবিসর্জন আমাদের দিয়েছে ভৌগোলিকভাবে স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র। এ মহান আত্মত্যাগ, এই ভৌগোলিক স্বাধীনতা যথার্থ পূর্ণতা পাবে যদি আমরা আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতি অর্জনের মাধ্যমে সুস্থ–সবল জাতি গঠন করতে সক্ষম হই। কারণ, একটি সুস্থ–সবল জাতিই পারে সব শৃঙ্খল, প্রতিকূলতা ছিন্নভিন্ন করে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে।
এখন প্রশ্ন—কীভাবে সম্ভব আমাদের খাদ্যের সেই ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনা? আমাদের ব্যক্তিত্ব এবং আচরণের ওপরে নানা ধরনের মানসিক শক্তি প্রভাব ফেলে। তার মধ্যে সুপার ইগো হচ্ছে নৈতিক আদর্শ বা সামাজিক উপাদানের একটি বিশেষ দিক। আমাদের মধ্যে সুপার ইগো বেশি করে ক্রিয়াশীল করতে হবে।
উচিত হবে নৈতিক আদর্শের ভিত্তিকে মজবুত করার কাজে মনোনিবেশ করা। আইনের কঠিন ও কঠোর প্রয়োগ হয়তো ইগোকে শক্তিশালী করবে কিন্তু টেকসই সমাধান হলো সুপার ইগো গঠনে মনোনিবেশ করা। আমাদের মনোযোগ দিতে হবে এমন সমাজ গঠনের প্রতি যে সমাজে সুযোগ সবার জন্য সমভাবে বণ্টিত। কেননা এর অসম বণ্টন সমাজে অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি করে।
আমি সুইডেনে এমনটি কনসেপ্ট বারবার লক্ষ্য করি। জাতি হিসেবে এদের মোরাল ভ্যালু অনেক উঁচুতে। এদের চিন্তাচেতনায় লক্ষণীয় যে তারা কতটুকু উপার্জন করছে তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ সেটা কীভাবে উপার্জন করছে। সচেতন জাতি অজুহাত নয়; খোঁজে সমাধান এবং সামষ্টিক কল্যাণ। তাই খাদ্যে ভেজাল রোধে শুধু ভেজালবিরোধী অভিযানেই সমাধান খুঁজলে হবে না, আমাদের মানসিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে নিজ নিজ জায়গা থেকে।
আমি আজও বাংলা খাবার রান্না করতে এবং খেতে পছন্দ করি। আমাদের এখানে কয়েকটি বাংলা দোকান আছে যেখানে বাংলাদেশের শাকসবজি কিনতে পাওয়া যায়।
আগে মনের আনন্দে সবকিছু কিনেছি যদিও দাম অনেক। এখন ভেজাল এবং ফরমালিনের কারণে দেশ থেকে মজার মজার প্রিয় খাবারগুলো এলেও তা খাওয়াও হয় না ফরমালিনের কারণে। তবে মনেপ্রাণে এবং ধ্যানে বিশ্বাস করি টেবিলে দেশীয় অনেক বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির মাছ, শাকসবজিসহ নানা ধরনের খাবার নিয়ে সোনার বাংলা ফিরে আসুক আমাদের মাঝে। মজাদার দেশীয় খাবারগুলো সগৌরবে টিকে থাকুক এবং সেসব খাবার খেয়ে সবাই সুস্থ ও দীর্ঘায়ু লাভ করুক, এমনটি প্রত্যাশায়।
*লেখক: রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন