টোকিওতে সরস্বতীপূজা উদ্‌যাপন, ধারাবাহিকতার ৩০তম বর্ষ  

প্রতিবছরের মতো এবারও জাপানে বসবাসরত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম সংগঠন সর্বজনীন পূজা কমিটি কর্তৃক টোকিওর আদাচু কু সৌগাই গাকুশু সেন্টারে ২ ফেব্রুয়ারি শ্রীশ্রী সরস্বতীপূজা ২০২৫ আয়োজন করা হয়। এটি ছিল ধারাবাহিকতার ৩০তম বর্ষ।

বাণী অর্চনা ও বিদ্যার দেবী সরস্বতীর পূজা একটি মহৎ উৎসব, যেখানে শিক্ষা, বিজ্ঞান ও শিল্পের উন্নতির জন্য প্রার্থনা করা হয়। প্রতিবারের মতো এবারও সরস্বতীপূজায় জাতি–ধর্ম–বর্ণনির্বিশেষে সবার স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ছিল। সনাতনীদের পাশাপাশি জাপানের বিভিন্ন সংগঠনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতি যেন এবারের পূজাকে ভিন্ন মাত্রা এনে দিয়েছে। পুরো সময়টি মনে হয়েছিল জাপানের মাটিতে এক টুকরা বাংলাদেশ।

বেলা ১১টায় পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ভিন্ন ভিন্ন পর্বে অঞ্জলির মাধ্যমে দেবী সরস্বতীর আরাধনা সুসম্পন্ন হয়, সঙ্গে পৃথিবীর সব জীবের মঙ্গল কামনা করা হয়। ছোটমণিদের হাতেখড়ি পর্বে তাদের জীবনের নতুন মাইলফলক রচিত হয় দেবী সরস্বতীর এই অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর মোরারজি দেশাই বর্মণ। তাঁর পরিবারসহ উপস্থিতি ও অঞ্জলিতে অংশগ্রহণ এবারের উৎসটিকে ভিন্ন মাত্রা এনে দিয়েছে, যা সত্যিই প্রশংসনীয়।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সর্বজনীন পূজা কমিটি, জাপান-এর সভাপতি বিপ্লব মল্লিক। সবাইকে শুভেচ্ছা জানান সাধারণ সম্পাদক অঞ্জন দাস। সরস্বতীপূজার মাহাত্ম্য তুলে ধরে বক্তব্য দেন কমিটির উপদেষ্টা সুখেন ব্রহ্ম। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বিমান কুমার পোদ্দার ও সহসভাপতি কিশোরে পাল শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।

জাপানে সনাতনীদের মন্দির প্রতিষ্ঠার বর্তমান অগ্রগতি ও করণীয় সম্পর্কে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন উপদেষ্টা বিজন কুমার মিত্র। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বিশেষ বক্তব্য দেন সর্বজনীন পূজা কমিটি, জাপান–এর কোষাধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার রায়।

আলোচনা পর্বের পর শুরু হয় বরাবরের মতো আকর্ষণীয় পর্ব ভক্তিমূলক সংগীতানুষ্ঠান। সংগীতানুষ্ঠানে পরিবেশিত হয় গান, নৃত্য ও কবিতা আবৃত্তি। উত্তরণ শিল্পীগোষ্ঠী এবার তাদের মনোমুগ্ধকর জমকালো পরিবেশনায় সংগীতানুষ্ঠানটির পরিপূর্ণতা এনে দেয়। এবারে প্রতিমা মঞ্চসজ্জায় বৌদিরা বিশেষ ভূমিকা রাখেন, যা প্রতিমা মঞ্চের সৌন্দর্য বহুগুণে বাড়িয়ে দেয় ও সবার প্রশংসা পায়। সন্ধ্যা আরতি শেষে সবার মধ্যে ফলমূল ও মিষ্টি বিতরণের মাধ্যমে সারা দিনের এ ঐতিহাসিক মিলনমেলার পরিসমাপ্তি হয়।