রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থা, কানাডার আয়োজন ‘বজ্রে তোমার বাজে বাঁশি’

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ৪ মে রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থা কানাডার আয়োজন ‘বজ্রে তোমার বাজে বাঁশি’ সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ায় দর্শক-শ্রোতাদের আগমনে টরন্টো দুর্গাবাড়ির মিলনায়তনটি সেদিন সন্ধ্যায় পরিপূর্ণ ছিল।

অনুষ্ঠানের শুভারম্ভ করেন সংস্থার সভাপতি চিত্রা সরকার। শুরুতেই সদ্য প্রয়াত বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদ, টরন্টো প্রবাসী ও আমাদের প্রিয় শিল্পী নুরুল আলম লাল (লাল ভাই)-এর স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সমগ্র আয়োজনটি উৎসর্গ করা হয় শিল্পী সাদি মহম্মদের স্মৃতির উদ্দেশে।

প্রথম পর্বে গত ২১ এপ্রিল সংস্থা আয়োজিত শিশু-কিশোরদের রবীন্দ্রসংগীত প্রতিযোগিতায় সম্মাননীয় বিচারকের দায়িত্ব পালনকারী সংগীতগুরু জিবিনা সঞ্চিতা হক, সুনীল গোমস, সোনালী রায় ও পার্থ সারথি শিকদার; তবলায় সহযোগী চিন্ময় কর এবং এ প্রতিযোগিতার মূল পরিকল্পনাকারী ও পৃষ্ঠপোষক রাখাল সরকারকে মঞ্চে আহ্বান জানানো হয়। তাঁরা তাঁদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে শিশু-কিশোরদের শুভেচ্ছা ও আশীর্বাদ জানান। বিশেষ কারণে সোনালী রায় উপস্থিত হতে পারেননি। এরপরই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশু-কিশোরদের মধ্যে সনদ প্রদান করেন বিশিষ্ট গুণীজন সংগীতগুরু এ এফ এম আলিমুজ্জামান। তারপর প্রতিযোগিতায় ‘ক’ ও ‘খ’ বিভাগে অনন্য এবং প্রথম মান পাওয়া (সর্বোচ্চ শতাংশ নম্বর প্রাপ্তি অনুযায়ী) চার প্রতিযোগীকে ক্রেস্ট প্রদান করেন সংস্থার পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াহিদ আজগর এবং এ পরিষদের সদস্য আজিজুল মালিক। সে সময় মঞ্চে সভাপতি চিত্রা সরকার ও সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নবীউল হক বাবলু উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সহায়তা করেন সংগঠনের সদস্য এবং এ প্রতিযোগিতার সমন্বয়কারী আরিয়ান হক।

পুরস্কার বিতরণ শেষে ‘ক’ ও ‘খ’ বিভাগে অনন্য মান পাওয়া দেবস্মিতা ব্যানার্জী ও দ্বৈপায়ন দাশ উপম একটি করে সংগীত পরিবেশন করেন। দ্বিতীয় পর্বে ‘বজ্রে তোমার বাজে বাঁশি’ শীর্ষক মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ পর্যায়ে সংগঠনের সদস্যরা সম্মেলক এবং একক পরিবেশনায় অংশ নেন। আটটি সম্মেলক গানের মধ্যে চারটি গানে নৃত্য পরিবেশন করেন বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী সুলতানা হায়দার ও অরুণা হায়দার (মা-মেয়ে নৃত্য জুটি) এবং সীমা বড়ুয়া। আবৃত্তিতে ছিলেন গুণীজন রাশিদা মুনীর, নাহিদ আশরাফী ও আরিয়ান হক। সংগীত পরিবেশনায় ছিলেন জিবিনা সঞ্চিতা হক, পার্থ সারথি সিকদার, চিত্রা সরকার, নাহিদ কবির কাকলী, নবীউল হক বাবলু, অরুণাভ ভট্টাচার্য্য, সুভাষ দাশ, কুমকুম বল, শিখা আহমাদ, মোনালিসা চৌধুরী, মিতুল দত্ত, জেনেট গমেজ, ফারহানা শান্তা, মৈত্রেয়ী দেবী, স্নিগ্ধা চৌধুরী, মুনমুন রায় চৌধুরী, সুবাহ আকবর, ইন্দ্রাণী দাশ গুপ্ত, কান্তা চক্রবর্তী, ফারহানা নুসরাত, ফাহমিনা ইসরাত, তাহসিন তানজিবা নবনী, কান্তি আনন্ত্য নুজহাত, মাধবী মৌমিতা বৃষ্টি ও আরিয়ান হক।

সংগীত পরিচালনায় ছিলেন পার্থ সারথি সিকদার। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাচিকশিল্পী ফ্লোরা নাসরীন ইভা।

বাদ্যযন্ত্রে সহযোগিতা করেছেন শিল্পী রূপতনু শর্মা (কি-বোর্ড), শিল্পী চিন্ময় কর (তবলা) ও শিল্পী অরূপ মুখার্জি (মন্দিরা)। স্থিরচিত্র ধারণ করেন ফাহমিনা রহিম তিসি এবং ভিডিও পরেশ রায় চৌধুরী। শব্দ-প্রকৌশল ও আলোক সহায়তায় মামুনুর রশিদ এবং শব্দ নিয়ন্ত্রণ সহকারী ও সার্বিক সহযোগিতায় জাহিদুল ইসলাম হীরা। মিলনায়তন প্রদানে আন্তরিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব সুশীতল চৌধুরী।

এ অনন্য আয়োজনটির পৃষ্ঠপোষকতায় আন্তরিকভাবে এগিয়ে এসেছেন আইনজীবী শামীম আরা, মেঘনা ফুডস, আইনজীবী চয়নিকা দত্ত ও আইনজীবী সূর্য চক্রবর্তী।