ঢাবি অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকের স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপন ও ইফতার অনুষ্ঠিত

৫৪তম মহান স্বাধীনতা দিবস ছিল ২৬ মার্চ। একটি প্রতিরোধযুদ্ধ, অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অবিস্মরণীয়। পূর্ব লন্ডনের স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টে গত শুক্রবার (২৯ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতার ৫৪তম দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রাক্তন শিক্ষার্থী, তাঁদের পরিবারের সদস্য এবং অতিথিরা অংশগ্রহণ করেছেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে শুরু হয় আলোচনা সভা। সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রশান্ত পুরকায়স্থের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন ইকো ও যুগ্ম সম্পাদক এম কিউ হাসানের যৌথ সঞ্চালনায় মুক্তিযুদ্ধের ওপর আলোচনা ও স্মৃতিচারণা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গৌস সুলতান, সংগঠনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান, উপদেষ্টা শাহগীর বখত ফারুক এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন।

আলোচনা সভায় বক্তারা উল্লেখ করেন, নারী-পুরুষ সবার অংশগ্রহণ ও আত্মত্যাগের ফলে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বাংলাদেশের মানুষের ওপর অত্যাচার, নারীর ওপর পাশবিক নির্যাতন বাঙালি জাতি কখনোই ভুলবে না। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে, নারীদের ধর্ষণ করেছে, বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে লুটতরাজ করেছে। বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করতে বাংলাদেশের বিজয়ের দুই দিন আগে রাজাকার আলবদর, আলশামসের সহযোগিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ সারা দেশে বহু বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করেছে।

বক্তারা আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁরা বলেন, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে সব আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছিলেন অগ্রগামী।

আলোচনা শেষে কবি শামসুর রাহমানের ‘স্বাধীনতা তুমি’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন এম কিউ হাসান। অনুষ্ঠান শেষে গান পরিবেশন করেন কাজী কল্পনা।

আলোচনা সভা শেষে এক ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মাহফিলের শুরুতে দুর্দশাগ্রস্ত গাজাবাসী, বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাইয়ের সভাপতি মারুফ চৌধুরীর সদ্য প্রয়াত বাবার জন্য দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এ কে মাঊদুদ হাসান।

আলোচনা সভা ও ইফতারে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহসভাপতি নিলুফা ইয়াসমীন হাসান, সিরাজুল বাসিত চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ ইকবাল, মাহারুন আহমেদ মালা, কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ জাফর, কংকন কান্তি ঘোষ, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক এরিনা সিদ্দিকী, দপ্তর সম্পাদক মিজানুর রহমান। সাংগঠনিক সম্পাদক তিনজনই উপস্থিত ছিলেন কামরুল হাসান, কামরুল হাসান (২) ও বেলাল রশীদ চৌধুরী। এ ছাড়া আবুল কালাম, রাজিয়া বেগম, মাহফুজা রহমান, সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান, মোস্তফা কামাল মিলন, মির্জা আসাব বেগ, মতিন চৌধুরী, মুকিত চৌধুরী, মনসুর পিয়াস, সাইদা ফারহানা সুবর্ণা, শিরিন উল্লাহ, খাদিজা আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পরিশেষে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রশান্ত পুরকায়স্থ উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং যাঁরা ইফতারে সহযোগিতা করেছেন তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

**দূর পরবাসে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল অ্যাড্রেস [email protected]