সিডনিতে ‘হাসন রাজা উৎসব’

মঞ্চে প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও হাসন রাজার উত্তরাধিকারী সোলায়মান আশরাফী দেওয়ান ও শ্রাবন্তী কাজী হাসন রাজাছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ভাটি অঞ্চলের মরমি সাধক কবি ও বাউলশিল্পী ছিলেন হাসন রাজা স্মরণে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘হাসন রাজা উৎসব’। হাসন রাজা পরিষদ, অস্ট্রেলিয়ার উদ্যোগে গতকাল শনিবার সিডনির ব্যাংকসটাউনে অবস্থিত ব্রায়ন ব্রাউন থিয়েটারে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টায় উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

শুরুতেই অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও হাসন রাজার উত্তরাধিকারী সোলায়মান আশরাফী দেওয়ান ও শ্রাবন্তী কাজী হাসন রাজা ও তাঁর সৃষ্টি সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরেন। তাঁরা জানান, ‘হাসন রাজা ছিলেন একজন উদার অসাম্প্রদায়িক সাধক কবি। সব সম্প্রদায়ের সমন্বয় সাধন ছিল তাঁর জীবনের ব্রত। ভেদাভেদ ভুলে তিনি মানুষের মিলন কামনা করেছেন। তাঁর কাব্যেও সেই ঘোষণা রয়েছে। আমাদের বাংলা সংস্কৃতি আজ ভয়াবহ হুমকির সম্মুখীন। এ সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার জন্য আমাদেরই এগিয়ে আসতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অবিকৃত এই সংস্কৃতির ধারাকে তুলে ধরার জন্যই বিদেশের মাটিতে হাসন রাজা পরিষদের এমন উদ্যোগ।’

সিডনির বাংলাদেশের কনস্যুলেট জেনারেল শাখাওয়াত হোসেন সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দিচ্ছেন কণ্ঠশিল্পী সেলিম চৌধুরীর হাতে
ছবি: সংগৃহীত

অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পীদের পাশাপাশি এহসান রেজা ও দীপ্তি রাজবংশীর অনন্য পরিবেশনা উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে। এরপরই পরিবেশিত হয় হাসন রাজাবিষয়ক পথ প্রোডাকশনের পরিবেশনায় নাটিকা ‘পিঞ্জিরা’। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী সেলিম চৌধুরীর একক পরিবেশনা। তিনি হাসন রাজার স্মৃতিচারণামূলক ছোট ছোট গল্প-কথায় তাঁর জনপ্রিয় গানগুলোসহ অন্যান্য গানও দর্শকদের শোনান। এর মধ্যে ‘আজ পাশা খেলব রে শ্যাম’, ‘বৃষ্টি পরে টাপুর-টুপুর/ পায়ে দিয়ে সোনার নুপুর’সহ হুমায়ূন আহমেদের স্মরণে তাঁর লেখা ‘চাঁদনি পসর রাইতে কে আইসা দাঁড়ায় শুধু আমার দুয়ারে’ গানটি গেয়ে দর্শকদের বিমোহিত করেন।

শিল্পী দীপ্তি রাজবংশীর হাতে সম্মাননা দিচ্ছেন কাউন্সিলর সাজেদা আক্তার সানজিদা
ছবি: সংগৃহীত

হাসন রাজা পরিষদের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে সিডনির বাংলাদেশের কনস্যুলেট জেনারেল শাখাওয়াত হোসেন কণ্ঠশিল্পী সেলিম চৌধুরীকে সম্মাননা জানিয়ে ক্রেস্ট প্রদান করেন। পাশাপাশি তিনি হাসন রাজাকে নিয়ে এ রকম অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসের পক্ষ থেকে আয়োজকদেরও ধন্যবাদ জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কনসাল মো. আশফাক হোসেন। পরিষদের পক্ষ থেকে শিল্পী দীপ্তি রাজবংশীর হাতেও সম্মাননা তুলে দেন কাউন্সিলর সাজেদা আক্তার সানজিদা। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন তানিয়া।