রাঁচিতে বিশ্ব মস্তিষ্ক দিবস পালিত
২২ জুলাই বিশ্ব মস্তিষ্ক দিবস উপলক্ষে ভারতের রাঁচির সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অব সাইকিয়াট্রি (সিআইপি) ও কলকাতার কৃষ্ণপুর নজরুলচর্চা কেন্দ্রে যৌথভাবে আয়োজন করা হয় একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের। এর প্রতিবাদ্য ছিল 'ব্রেন হেল্থ অ্যান্ড ডিজঅ্যাবিলিটি : লিভ নো ওয়ান বিহাইন্ড।’
কৃষ্ণপুর নজরুলচর্চা কেন্দ্রের সভাপতি সোমঋতা মল্লিক বলেন, সুস্থ অবস্থায় কবি নজরুল বেশ কয়েকবার রাঁচিতে সপরিবার গিয়েছিলেন। তার প্রমাণস্বরূপ পাওয়া যায় বেশ কিছু আলোকচিত্র। ১. রাঁচির হুড্রু জলপ্রপাতের পাদদেশে দুই ছেলে—কাজী সব্যসাচী ও কাজী অনিরুদ্ধর সঙ্গে কাজী নজরুল ইসলামের ছবিটি বিশেষভাবে জনপ্রিয়। ২. রাঁচির হুড্রু জলপ্রপাতে ছেলে বুলবুলকে কোলে নিয়ে প্রমীলা দেবী। ৩. রাঁচিতে বাড়ির সামনে নজরুলের ক্রাইসলার গাড়ি। গাড়ির খুদে আরোহীদের মধ্যে রয়েছে দুই ছেলে অনিরুদ্ধ-সব্যসাচী। দূরে চায়ের পেয়ালা হাতে নজরুল এই দৃশ্য উপভোগ করছেন। (তথ্যসূত্র : কল্যাণী কাজী সম্পাদিত 'Nazrul, The Poet Remembered')।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডা. এইচ পি নারায়ণ, ডা. অনিল কুমার, দীপক ঘোষ, শৌভিক চক্রবর্তীসহ প্রমুখ। আলোচনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান শুরু হয় সিআইপির মানসিক রোগীদের সমবেত সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। তাঁরা প্রথমে হিন্দিতে ভারতের জাতীয় সংগীত এবং পরে ‘গণেশবন্দনা’ পরিবেশন করেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের প্রার্থনামূলক সংগীত ও কবিতা আবৃত্তি করেন কৃষ্ণপুর নজরুলচর্চা কেন্দ্রের শিল্পীরা। এই বছর যন্ত্রসংগীতের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। সরোদে নট-ভৈরব বাজিয়ে শোনান মনিত পাল। তবলায় যোগ্য সংগত করেন বোধিমন দাশগুপ্ত।
১৯৫২ সালের ২৫ জুলাই নজরুলকে চিকিৎসার জন্য রাঁচির মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সঙ্গে ছিলেন প্রমীলা নজরুল। রাঁচিতে নজরুলকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেখেছেন, এ রকম মানুষেরাও আজ জীবনের শেষ লগ্নে উপস্থিত। এখনো তাঁদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে নজরুলের সেই নির্বাক, ভাবলেশহীন মুখখানি।