বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন নর্থ আমেরিকার কনভেনশনে কয়েক দিন

গত ২৭ জুলাই বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন নর্থ আমেরিকার ৪২তম কনভেনশন ক্যালিফোর্নিয়ায়
ছবি: সংগৃহীত

এ বছর বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন নর্থ আমেরিকার ৪২তম কনভেনশন হয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার এনাহেমের মেরিয়ট হোটেলে। এ অর্গানাইজেশনটা চিকিৎসকদের একটা দারুণ ভরসাস্থল। দেশ থেকে পাস করে যাঁরা এ দেশে আসতে চাইছেন বা এসেছেন, তাঁদের গাইড করা, রেসিডেন্সি বা ফেলোশিপ পেতে সাহায্য করার মতো অনবদ্য কিছু কাজ তারা করে। সঙ্গে এ দেশে বা বাংলাদেশে দুর্যোগ সময়ে ফান্ড রেইস করে পাশে থাকেন একঝাঁক কর্ম ব্যস্ত চিকিৎসক। বিষয়গুলো আমাকে সব সময়ই খুব চমৎকৃত করে। বাসার কাছাকাছি এ কনভেনশন হওয়াতে রেজিস্ট্রেশন করে ফেললাম।

২৭ জুলাই বিকেল থেকে শুরু হয়েছিল কনভেনশন। আমেরিকার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে চিকিৎসকেরা পরিবারসহ এসে হোটেলে উঠেছেন। হোটেলের লবিতে রেজিস্ট্রেশন শেষে ছিল ফ্যামিলি নাইট। সেদিনই ছিল নিউইয়র্ক চ্যাপ্টার, ফ্লোরিডা চ্যাপ্টারের মতো অঙ্গরাজ্যভিত্তিক পরিবেশনা।

পরের দিন সকাল থেকে হয়েছে CME (Continuing Medical Education)–এর আয়োজন। ২৮ জুলাই দিনটা ছিল শুক্রবার। নামাজের পর পর পোস্টার প্রেজেনটেশনের জাজমেন্ট, তারপর দুপুরের খাবার খেয়ে বাসে আমরা রওনা হলাম লং বিচে ইয়াট ট্যুরের উদ্দেশে। এ বছর প্রচণ্ড গরম পড়লেও গ্রীষ্মের এ দিনটা তেমন গরম ছিল না। ইয়াটে ওঠার আগে বিখ্যাত গায়ক এম এ শোয়েবের সঙ্গে দেখা, ছবি তোলা আর ইয়াটে তাঁর মন মাতানো গায়কী যথেষ্ট আনন্দের ছিল। ইয়াটে নিজেও গাইলাম আর চিকিৎসক ইকবাল ভাইয়ের গান আর তাঁর সহধর্মিণী চিকিৎসক সালমা আপুর নাচ দারুণ লেগেছে। রাতের খাবার ছিল সেখানেই। ট্যুর শেষে বাসে আমরা হোটেলে ফিরলাম। নামাজের পর সুরভীর জামদানি শাড়ি আর আমেরিকান পোশাকের ফিউশন ফ্যাশন শো দারুণ লেগেছে। তারপর স্থানীয় শিল্পী সাদিয়া ও কলকাতার শিল্পী চিরন্তন ব্যানার্জির অপূর্ব গানের সুরে ভাসতে ভাসতে এক সমুদ্র আনন্দ নিয়ে ফিরে গেলাম সান ডিয়েগো শহরে। মাত্র দেড় ঘণ্টার দূরত্ব দেখে হোটেলে থাকিনি আমরা।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন নর্থ আমেরিকার ৪২তম কনভেনশনে চিকিৎসকেরা
ছবি: সংগৃহীত

তৃতীয় ও শেষ দিন ছিল ভোট, CME, অর্থনৈতিক আলোচনা, ভোটের ফলাফল ঘোষণা, চট্টগ্রাম মেডিকেলের কলি আপুসহ দারুণ জমজমাট একটা দিন। বাংলাদেশি কনস্যুলেটের সঙ্গে পরিচিত হলাম।

এত অমায়িক অল্প বয়সী সুযোগ্য মেয়ে কনস্যুলেট দেখে গর্বে মন ভরে গেছে। বাংলাদেশি খাবার ছিল অনন্য, কিন্তু সবচেয়ে বেশি আনন্দের দিন ছিল আমার খুব প্রিয় সান ডিয়েগোর কিছু বন্ধুর সঙ্গে সাবিনা ইয়াসমিনের গান শোনা। সেই অপূর্ব কণ্ঠ। মোহাবিষ্ট হয়ে ছিলাম কিছু সময়। চিরন্তন ব্যানার্জি আবার গেয়েছেন শেষে। তবে সব সুন্দর সময়ই শেষ হয়। চিকিৎসক শেলি আপা আর শহীদ ভাইয়ের সঙ্গে গভীর রাতে ফিরে চলে এলাম সান ডিয়েগোতে। হয়তো আবারও দেখা হবে সবার সঙ্গে অন্য কোনো শহরে সেই অপেক্ষায়…