সিডনিতে আবারও দুই দিনে ঈদ উদযাপন

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিসহ দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশিসহ অন্যান্য মুসলিম সম্প্রদায় আবারও দুই দিনে ঈদ উদযাপন করেছে। গতকাল বুধবার এবং আজ বৃহস্পতিবার দুই দিনই ঈদের দিন হিসেবে উদযাপন করয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার ইমাম কাউন্সিলের সর্বজনীন বর্ষপঞ্জি এবং মুনসাইটিং অস্ট্রেলিয়ার কমিটির চাঁদ দেখা এই দুই মতের ওপর নির্ভর করে দেশটিতে সাধারণত দুই দিনে ঈদ উদ্‌যাপন করে এখানকার মুসলিম সম্প্রদায়।

গতকাল বুধবার অস্ট্রেলিয়ার ইমাম কাউন্সিলের ফতোয়া বিভাগের ঘোষণাক্রমে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি সর্বজনীন বাৎসরিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ঈদ উদযাপন করেছে অনেকেই। সে অনুযায়ী দেশটির বিভিন্ন মসজিদ এবং মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করেন মুসলিমদের একাংশ। দেশটির সাপ্তাহিক ছুটির দিন না হওয়ায় বাংলাদেশিদের কেউ কেউ নামাজ আদায় শেষে যথারীতি কর্মস্থলে ফিরে গেছেন আবার কেউ কেউ বিশেষ ছুটি নিয়ে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার ঈদ উদযাপন করছে অস্ট্রেলিয়ার আরেকাংশ বাংলাদেশিসহ অন্য দেশীয় মুসলিম সম্প্রদায়। গত পরশু মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার মুসলিমদের বেসরকারি চাঁদ দেখা কমিটি অস্ট্রেলিয়ার আকাশে কোথাও চাঁদ দেখা যায় নি বলে নিশ্চিত করে। সে মতে গতকাল বুধবার ৩০তম রোজা রেখেছেন অনেক মুসলিমরা। তাই ৩০টি রোজা রেখে আজ ঈদ উদযাপন করছেন আরও অনেকে। তা আজও সাপ্তাহিক ছুটির দিন না হওয়ায় ঈদের ছুটি পাননি অনেকে।

দুই দিনে ঈদ উদযাপন অস্ট্রেলিয়ায় এবারই প্রথম নয়। প্রায় প্রতিবছরই ঈদের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ নিয়ে মতের অমিল দেখা দেয় অস্ট্রেলিয়ায়। ফলে এ দ্বিধায় নানান সমস্যায় পড়ার কথা জানিয়েছেন অনেকে। সিডনির লাকেম্বার বাসিন্দা বাংলাদেশি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশে ঈদের আগে পরে ছুটি থাকার কারণে ঈদ যেদিনই হোক এতে কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় ঈদের দিন নির্দিষ্ট না হওয়ার কারণে আগে থেকে কর্মস্থল থেকে একদিনের ছুটি নিয়ে রাখা সম্ভব হয় নি। তাই ঈদের দিনেও কাজ করতে যাওয়া মুসলিম বাংলাদেশি হিসেবে অনেকটাই কষ্টের।’

সিডনির মাস্কটের বাসিন্দা বাংলাদেশি ফয়সাল উদ্দিন বলেন, ‘এটা নিয়ে আমাদের বাংলাদেশিদের অন্তত একটা সিদ্ধান্তে আসা উচিৎ। কারণ, অস্ট্রেলিয়া একটি বহুসাংস্কৃতিক দেশ, প্রায় সব সংস্কৃতিরই মূল্যায়ন করে অস্ট্রেলিয়া। তাই তারিখ নির্ণয়ে নির্দিষ্ট একটা পদ্ধতি থাকলে সরকারিভাবে এদেশে ঈদকে একটি পাবলিক হলিডের প্রস্তাব করার পরিকল্পনা করা যেত।’

তবে ঈদ যেদিনই হোক, দুই দিনই অস্ট্রেলিয়ার মুসলিম সম্প্রদায়ের বাসায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। বাংলাদেশের মতোই ঈদে সারাদিন প্রবাসী বাংলাদেশিরা বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের বাসায় বাসায় ঘুরে বেড়ায়, আড্ডা দেন। পাশাপাশি দেশে বন্ধু-পরিজনের সঙ্গে অনেকেই দিনভর ফোনালাপে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করেন।