জিসিসির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের নবদিগন্ত উন্মোচন: সিনিয়র অফিশিয়াল মিটিং অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ ও উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) মধ্যে অংশীদারত্ব সংলাপ আয়োজনের উদ্দেশ্যে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের প্রথম বৈঠক সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের জিসিসি সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্রসচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন এবং জিসিসি প্রতিনিধিদলের সভাপতিত্ব করেন জিসিসি সচিবালয়ের সহকারী মহাসচিব (রাজনৈতিক) আবদুল আজিজ আল উয়াইশেগ। এ ছাড়া বৈঠকে জিসিসি সদস্যরাষ্ট্রগুলো থেকে আগত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে দুই পক্ষের মধ্যে আগামী পাঁচ বছরের (২০২৪-২৮) রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, কৃষি ও খাদ্যনিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সুরক্ষা এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সহযোগিতার খসড়া যৌথ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনায় ফিলিস্তিন পরিস্থিতি, আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা, লোহিত সাগরে পরিবহন–নিরাপত্তা, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে করণীয়, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলা, সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ মোকাবিলা, সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে উভয় পক্ষের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।
খাদ্যনিরাপত্তা, কৃষিক্ষেত্রে সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাধা দূরীকরণ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সুরক্ষায় পররাষ্ট্রসচিব সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা পেশ করলে জিসিসি সদস্যরাষ্ট্রগুলো ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন। পররাষ্ট্রসচিবের প্রস্তাবের মধ্যে চুক্তিভিত্তিক কৃষি উৎপাদন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতকে যুক্ত করা, নবায়নযোগ্য শক্তিতে সহযোগিতা এবং কর্মপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত ক্ষেত্রগুলোয় আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার জন্য কারিগরি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়।
আলোচনায় পররাষ্ট্রসচিব জানান, জিসিসির সদস্যরাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশে ঐতিহাসিক ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এক নতুন উচ্চতায় উঠেছে। এ সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও বেগবান হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি বাংলাদেশে অবিচল সমর্থন ব্যক্ত করে বলেন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, জিসিসি অঞ্চলে ৫০ লক্ষাধিক বাংলাদেশি প্রবাসী বসবাস করেন, যাঁরা বাংলাদেশ ও স্বাগতিক দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। তাঁদের সার্বিক সহযোগিতা ও কল্যাণের জন্য কাজ করায় তিনি জিসিসিভুক্ত দেশগুলোর সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বৈঠকে আলোচিত খসড়া কর্মপরিকল্পনা–পরবর্তী পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সভায় চূড়ান্ত করার জন্য পেশ করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৮ নভেম্বর উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের সঙ্গে বাংলাদেশের মন্ত্রী পর্যায়ের নিয়মিত অংশীদারত্ব সংলাপ অনুষ্ঠানের বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। বিজ্ঞপ্তি