লেবানিজ ন্যাশনাল লাইব্রেরি অডিটরিয়ামে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

বাংলাদেশ দূতাবাস বৈরুতের উদ্যোগে যথাযথ মর্যাদায় ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টায় দূতাবাসের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়। পরে দূতাবাস নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এয়ার ভাইস মার্শাল জাভেদ তানভির খান পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শহীদদের স্মরণে এ সময় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ সময় দূতাবাসের সব কর্মকর্তা–কর্মচারী এবং উল্লেখযোগ্যসংখ্যক লেবাননপ্রবাসী বাংলাদেশি উপস্থিত ছিলেন।

শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে দূতাবাসের সভাকক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। এ সময় ভাষা আন্দোলনের ওপর নির্মিত তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত এয়ার ভাইস মার্শাল জাভেদ তানভির খান সবাইকে মাতৃভষার প্রতি আরও যত্নশীল হওয়ার আহ্বান জানান। সভায় ভাষাশহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

দ্বিতীয় পর্বে বাংলাদেশ দূতাবাস লেবাননের আয়োজনে এবং লেবাননের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় লেবাননে অটোমান সাম্রাজ্যের স্থাপত্য নিদর্শনসংবলিত ঐতিহ্যবাহী লেবানিজ ন্যাশনাল লাইব্রেরি অডিটরিয়ামে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়। দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইনের সঞ্চালনায় রাষ্ট্রদূতের সভাপতিত্বে এ পর্বে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি ছিলেন লেবাননের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর প্রতিনিধি ও লেবানিজ ন্যাশনাল কমিশন অব ইউনেসকোর প্রেসিডেন্ট চৌকি সাসাইন এবং জাতীয় পার্লামেন্টারি গ্রুপের সভাপতি নাসের জাবের।

অনুষ্ঠানের শুরুতে লেবানন ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। উপস্থিত সবাই ভাষার জন্য জীবন উৎসর্গকারী ভাষাশহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধুর অবদান এবং ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির বিষয়ে বিভিন্ন তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং ভাষাশহীদ ও ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিসংবলিত বিভিন্ন লিখিত দলিল, ছবি, তথ্য ও ইতিহাসের চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্য, বই, পোশাক, খাবার, ঐতিহ্যবাহী উপহারসামগ্রী, শহীদ দিবসের ওপর নির্মিত বিভিন্ন পোস্টার এবং শহীদ মিনারের রেপ্লিকা প্রদর্শনের মাধ্যমে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, লেবাননের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সংস্কৃতিককর্মী ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেন। শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। বিজ্ঞপ্তি

**দূর পরবাসে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]