বৃষ্টি ওরে বৃষ্টি

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

আমি বলি, বৃষ্টি ওরে বৃষ্টি,
চেয়ে দেখ চারদিকে একি অনাসৃষ্টি!
আছিস কেন রে আজ অভিমানে দূরে সরে?
ঝম ঝম করে আয় নেমে আয় মুষলধারে।
ওরে বৃষ্টি, ভাবিনি তো এত গড়বড় হয়ে যাবে,
অগ্নিসম সূর্যের তাপ এত মুশকিল করে দেবে।
ধ্বংস হোক জ্বলে-পুড়ে, বুঝি সূর্য করেছে পণ,
আয় নেমে আয় নেভাতে সেই বুকের আগুন।
রৌদ্রের এই তীব্র ঝাঁজ আগে তো কখনো দেখিনি,
ঝলসে গেল নগর-প্রান্তর, ঝলসালো ওই বনানী।
খরার সাথে যুদ্ধ করে পারছে না তো মানুষজন,
আয় না এবার শীতল জলে ভাসিয়ে দিতে এই ভুবন।
বৃষ্টি তখন বললো আমায়,
ওরে, কি যে করি হায়, মেঘবালিকারা দুষ্টু যে ভারি,
আমার সাথে সারাক্ষণ ওরা খেলছে শুধু লুকোচুরি।
ভুলে গেছে বৃষ্টির কথা, ভুলে গেছে তার নাচন,
শীতল করতে হবে ধরা, সেথায় ছিল না তাদের মন।
বৃষ্টি ওরে বৃষ্টি, শোন রে আমি বলি,
রোদের আগুনে আজ পিচঢালা পথ যায় গলি।
আয়রে আয়, আয় ঝেপে তুই এবারে,
ওই দুষ্টু মেঘবালিকাদের সঙ্গে করে।
অঝোর ধারায় আজ ঝরবি শুধু আয়,
ফিরে আসুক প্রাণ আবার এই বসুন্ধরায়।
কে বলে রে বৃষ্টি তুই শুধু আকাশের কান্না?
আমি বলি, মোদের সঞ্জীবনী সুধার বন্যা।
অবশেষে বৃষ্টি আমায় বললো এখন,
রিমঝিম, এসেছি দেখ সঙ্গে নিয়ে শীতল পবন।
এলো বৃষ্টি যেন এলো কবিতার সুখময় ছন্দ,
এনে দিল অবিরাম গানের সুরের মূর্ছনার আনন্দ।
মেঘবালিকারা মিলেমিশে গিয়ে বৃষ্টির প্রাণে,
নেচে নেচে নেমে এলো তালে তালে বর্ষার গানে।
সিক্ত ধরা, সিক্ত প্রাণী, আজ সিক্ত বনতল,
চমকি চমকি ওঠে বিজুরী ভেদি ওই মেঘের আঁচল।

দূর পরবাসে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল অ্যাড্রেস: [email protected]