সমাজকল্যাণে অগ্রনায়ক মোস্তাক হোসেনকে নিয়ে বই
১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমদের অবস্থা ছিল একেবারেই করুণ ও সংকটাপন্ন। সেই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য কালের ধারাবাহিকতায় নানা পর্যায়ের কায়িক শ্রম ও ছোট পরিসরে ব্যবসা করে কেউ কেউ অল্পবিস্তর আর্থিকভাবে সচ্ছল হতে শুরু করেন। তবে কেউ কেউ আর্থিকভাবে সচ্ছল হতে শুরু করলেও শিক্ষাদীক্ষায় তাঁদের অবস্থান ছিল একেবারে তলানিতে। সেই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটতে শুরু করে আশির দশকে। আর এই পরিবর্তনের নিমিত্তে অনেকের মতোই ভূমিকা পালন করেছেন বিশিষ্ট সমাজসেবক ও শিল্পপতি মোস্তাক হোসেন। মহৎপ্রাণ মানুষটি উদারহস্তে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে অর্থ দিয়ে আধুনিক শিক্ষার প্রসারে মানবতার দূত হিসেবে এগিয়ে আসেন। দৃঢ় প্রত্যয়ে তাই বলতে হয়, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে মোস্তাক হোসেনের আর্থিক সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠা পাওয়া মিশন স্কুলগুলো। তাঁর একক কৃতিত্ব ও সোনালি পৃষ্ঠপোষকতার কারণে বাঙালি মুসলিম সমাজ অন্ধকার জগৎ থেকে আলোর পথে প্রবেশ করেছে। এমনকি তাঁর প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতার কারণে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্রনির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষ প্রতিনিয়ত উপকৃত হচ্ছেন। এ কারণে আজ বলতে হয়, পশ্চিমবঙ্গের অনগ্রসর মুসলিম মানসে আধুনিক শিক্ষাবিস্তারে বসন্ত এনে দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম মোস্তাক হোসেন।
সমাজসেবী মোস্তাক হোসেনকে তাই অনুসরণ করে নতুন প্রজন্ম গড়ে উঠবে মানবকল্যাণের অগ্রযাত্রায়। সংগত কারণে কৃতজ্ঞতার দায়বোধ থেকে নয়া সমাজ নির্মাণের অগ্রনায়ক মোস্তাক হোসেনকে কুর্নিশ জানিয়ে কলম ধরেছেন ৮৫ জন ঋদ্ধ প্রাবন্ধিক। উদার আকাশ পত্রিকা ও উদার আকাশ প্রকাশনের সম্পাদক ফারুক আহমেদ সম্পাদনা করেছেন গ্রন্থটি। মূল্যবান প্রবন্ধ সংকলনটি ‘সমাজকল্যাণে অগ্রনায়ক মোস্তাক হোসেন’ উদার আকাশ প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হচ্ছে। ঋদ্ধ প্রাবন্ধিকদের মধ্যে কলম ধরেছেন অশোক দাশগুপ্ত, মইনুল হাসান, কবীর সুমন, আহমদ হাসান ইমরান, জয়ন্ত ঘোষাল, সাহানা নাগ চৌধুরী, হারাধন চৌধুরী, জয়ন্ত সিংহ, সুমন ভট্টাচার্য, দেবাশিস পাঠক, মীর রেজাউল করিম, রতন ভট্টাচার্য, মনীষা বন্দ্যোপাধ্যায়, আমজাদ হোসেন, মৌসুমী বিশ্বাস, প্রবীর ঘোষ রায়, সুব্রতা ঘোষ রায়, আবুল হাসনাত, মুজিবর রহমান, গোলাম রাশিদ, তুষার ভট্টাচার্য, মোহাম্মদ আবদুল হাই, আবদুর রউফ, আয়ুব আলী, সোনা বন্দ্যোপাধ্যায়, সৈয়দ মাজহারুল পারভেজ, ঘনশ্যাম চৌধুরী, জালাল উদ্দীন আহম্মেদ, আশিকুল আলম বিশ্বাস, আলিমুজ্জমান, সামসুল হুদা আনার, মাহমুদ কামাল, সেখ আবু তাহের কমরুদ্দিন, সোনিয়া তাসনিম, সমীর ঘোষ, হাফিজ মাহবুব মুর্শিদ, ঈশিতা সুর, আসাদুল্লা আল গালিব, কাজী খায়রুল আনাম, মুজতবা আল মামুন, বজলে মুর্শিদ, এমদাদুল হক নূর, কুমারেশ চক্রবর্তী, আবদুল ওদুদ, কুতুব আহমেদ, সামিমা মল্লিক, মুহম্মদ মতিউল্লাহ, শেখ সাদী মারজান, মো. হাসানুজ্জামান, প্রদীপ মজুমদার, সুরঞ্জন মিদ্দে, সন্দীপ চক্রবর্তী, লালমিয়া মোল্লা, জহিউ-উল-ইসলাম, সা’আদুল ইসলাম, মুহম্মদ আলি, রমজান আলী, মুহাম্মদ মসিহুর রহমান, মহম্মদ সামিম, আফতাবুজ্জামান, জ্যোতির্ময় সরদার, শেখ কামাল উদ্দীন, কালাচাঁদ মাহালী, এম হৃদয় হোসেন, সামশুল আলম, সাইদুর রহমান, সৈয়দ নুরুস সালাম, গৌতম নিয়োগী, আরফান আলী বিশ্বাস, মিতালী সরকার, আসফার হোসেন, তৈমুর খান, শামীম ফিরদৌস, মুজিবুর রহমান, ইমরান মাহফুজ, দীপক সাহা, সৈয়দ রেজাউল করিম, আকমাম খান, তপন মিত্র, মহাশ্বেতা দেবী, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সুরজিৎ দাশগুপ্ত, ইবনে ইমাম, সাবির আহমেদ প্রমুখ। ৫৬০ পৃষ্ঠার বইটির ভূমিকা লিখেছেন পবিত্র সরকার।
উদার আকাশ পত্রিকা ও প্রকাশনের পক্ষ থেকে মোস্তাক হোসেনের হাতে ‘দানবীর পুরস্কার’ তুলে দেওয়া হয়। সমাজকল্যাণে অফুরন্ত অবদানের জন্য মোস্তাক হোসেন পথিকৃৎ, তাঁকে সম্মাননা প্রদান করতে পেরে উদার আকাশ পত্রিকা ও উদার আকাশ প্রকাশন গর্বিত হয়েছে।
জিডি স্টাডি সার্কেলের মিশন স্কুল গড়ে উঠেছে মোস্তাক হোসেনের আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে। এই মিশন আন্দোলনে শিল্পপতি মোস্তাক হোসেনের সোনালি পৃষ্ঠপোষকতার ফলেই বাঙালি মুসলিম সমাজ এগিয়ে আসছে। তাঁর ছত্রচ্ছায়ায় জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্রনির্বিশেষে সবাই উপকৃত হয়েছেন এবং নিয়মিত হচ্ছেন।
বর্তমানে মুসলিম দরদি সহমর্মী মোস্তাক হোসেনকে অনুসরণ করে নতুন প্রজন্ম উঠে আসুক সমাজকল্যাণে। অনুপ্রেরণা অবশ্যই মোস্তাক হোসেন। মামুন ন্যাশনাল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা হলেন বক্তা সম্রাট গোলাম আহমাদ মোর্তজা। জিডি স্টাডি সার্কেলের পরিচালনায় সব মিশন স্কুলের মধ্যে অন্যতম মিশন স্কুল হচ্ছে মামুন ন্যাশনাল স্কুল। ইতিমধ্যে জিডি স্টাডি সার্কেলের উদ্যোগে সরকারি চাকরির উপযুক্ত করে তুলতে কোচিং দিয়ে বড় সাফল্য লাভ করেছে। রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে নতুন প্রজন্ম যোগ্যতা প্রমাণ করে চাকরি পাচ্ছেন। মোস্তাক হোসেন ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করছেন বলেই বাংলার ঘরে ঘরে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে পিছিয়ে পড়া সমাজের একটা অংশ।