প্রচণ্ড গর্বের সঙ্গে বলি ‘ওটা আমার দেশ। ওটা আমার মাতৃভূমি!’

বিদেশের মসজিদে মসজিদে জুমার খুতবায় বাংলাদেশ একটি উদাহরণ হয়ে গেছে। আগে ইমামরা দোয়া করতেন ‘হে আল্লাহ! আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের জালিমের হাত থেকে মুক্ত করো।’ এখন বলা হয়ে থাকে ‘ফিলিস্তিনি ভাইবোনেরা, বাংলাদেশি ভাইবোনদের দেখে জেনে নাও, বিজয় তোমাদের হবেই ইনশা আল্লাহ! মুক্তির সংগ্রাম চালিয়ে যাও! নিশ্চই আল্লাহ জালিমদের পতন ঘটান।’
শুধু মসজিদই নয়, গোটা বিশ্বের মানুষ আমাদের এখন চিনে। অন্তত যারা ওয়ার্ল্ড নিউজ ফলো করে। আমার অফিসের ভিয়েতনামি সহকর্মী মধ্য জুলাই থেকেই আন্দোলন ফলো করছিল। গণহত্যার খবর বিদেশি মিডিয়াতেও আসছিল। বিজয়ের খবরও সময়মতোই এসেছে।

ভিয়েতনামি সহকর্মী সেদিন বলল, ‘তোমাদের মতো আমাদের দেশের মানুষও যদি আমাদের করাপ্টেড সরকারের পতন ঘটাতে পারত!’

শুধু ও না, দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিটি দেশের নাগরিক এখন চায় বাংলাদেশিদের মতো সংগ্রামী হতে। জ্বলেপুড়ে মরে যাবে, তবু মাথা ঝোঁকাবে না। গোলামির মধ্য থাকতে আমাদের জন্ম হয় না। মাথা নোয়ানোর জন্য বাঙালির জন্ম হয় না।  

ভারতে চিকিৎসক মেয়েটির ধর্ষণের পরে নৃশংস হত্যাকাণ্ড এবং মমতা ব্যানার্জির সরকারের নির্লজ্জভাবে সেই ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়ার প্রচেষ্টায় নড়ে উঠেছে ওদেরও সমাজ। ওদেরও আদর্শ এখন বাংলাদেশ।  ‘যদি বাংলাদেশের নিরস্ত্র সাধারণ জনতা কেবল “পানির বোতল” হাতে সশস্ত্র স্বৈরাচারের পতন ঘটাতে পারে, তাহলে আমরা কেন পারব না?’

দিদির গদিও নড়ে উঠছে  

কিছুদিন আগেও কে বললে বিশ্বাস করত যে পাকিস্তানিরা আমাদের অনুপ্রেরণা হিসেবে নেবে? আমাদের জ্বালানো প্রদীপের আলো ওদের দেশেও পৌঁছে গেছে, ওদেরও ছাত্রসমাজ ও জনতা ওদের জালিম শাসকদের বিরুদ্ধে জেগে উঠতে শুরু করেছে। ৭৭ বছর গোলামি করে গেছে, আর কত? সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখলাম, ওদের আন্দোলনে বাংলাদেশি গান গাওয়া হচ্ছে, বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানো হচ্ছে, যাতে ওদের বুকেও বল আসে।

বিশ্বাস করেন, প্রবাসে এখন যখন কেউ বাংলাদেশের নাম নেয়, আনন্দে বুক ভরে উঠে। প্রচণ্ড গর্বের সঙ্গে বলি ‘ওটা আমার দেশ। ওটা আমার মাতৃভূমি!’

* দূর পরবাসে ছবি, লেখা ও ভিডিও পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]