গৃহত্যাগ-১ম পর্ব

প্রতীকী ছবি
প্রথম আলো

সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি এই মেয়ের সাথে আর সংসার করব না। বাসা থেকে বের হয়ে যাব। এ অপমান আর সহ্য হচ্ছে না। একটু আগে আমার স্ত্রী নিতু আমাকে যথেষ্ট অপমান করেছে। ইদানীং অবশ্য এটা সে প্রায়ই করে। যদিও সে আমাকে অনেক ভালোবাসে। তবু কেন জানি সব সময় সে আমাকে কোণঠাসা করে রাখার চেষ্টা করে।

আজ মূলত আবার রান্না নিয়ে তার সাথে আমার ভেজাল লেগেছে। নিতুর রান্না খুবই খারাপ। খারাপ মানে খুবই খারাপ। শুধু রান্নাই খারাপ নয়, তার খাবারের কম্বিনেশনও খারাপ। কোন খাবারের সাথে কোন তরকারি যাবে, সেটা সে মনে হয় বোঝেই না। তবে আমার ধারণা, সে আসলে সবই বোঝে। শুধু আমাকে নাজেহাল করার জন্যই সে ইচ্ছে করে এসব করে। একটু খুলে বললেই বিষয়টা বোঝা যাবে।

তবে আজকের ঘটনা বলার আগে, কয়েক দিন আগের একটা ঘটনা বলি। কয়েক দিন আগে তাকে বললাম,

-পোলাও রান্না করো। আজ পোলাও খাব।

খেতে গিয়ে দেখি, সে পোলাওয়ের সাথে খাওয়ার জন্য আলুভর্তা আর লাউশাক রান্না করেছে। মুরগি, খাসি বা গরুর মাংস কিছুই রান্না করেনি। খেতে বসে হতবাক হয়ে বললাম,

-এগুলো কী?

-এগুলো কী মানে! তুমি এগুলো চেনো না?

-চিনব না কেন? অবশ্যই চিনি। কিন্তু দুনিয়ার কোনো মানুষ পোলাওয়ের সাথে লাউশাক আর আলুভর্তা খায়, সেটা আমার জানা ছিল না।

-শোনো কেউ খায় না বলেই তো রান্না করলাম। একদম আনকমন নতুন একটা মেনু।
-আমি কি তোমার কাছে আনকমন নতুন কিছু খেতে চেয়েছি?

-তা চাওনি। কিন্তু স্ত্রী হিসেবে স্বামীকে নতুন নতুন খাবার বানিয়ে খাওয়ানোটা অনেক কিউট একটা ব্যাপার। আর একটা কথা, নতুনকে গ্রহণ করতে শেখো। শুধু পুরোনো ধ্যানধারণা আঁকড়ে পড়ে থেকো না। একটু আধুনিক হও।

রাগে আর কিছু বলার রুচি হলো না। তাই চুপ করে রইলাম।

এবার আজকের ঘটনা বলি। আজ আমার খুব কাচ্চি খেতে ইচ্ছা হচ্ছিল। কিন্তু আমি জানি, নিতুকে রান্না করতে বললেই সে উল্টাপাল্টা কিছু একটা রান্না করবে। সেই ভয়ে নিতুকে রান্না করতে না বলে বললাম,

-শোনো, হঠাৎ করে কাচ্চি খেতে মন চাইছে। তবে তোমার কষ্ট করে রান্না করতে হবে না। আমি হোটেল থেকে নিয়ে আসব।

-অসম্ভব। আমি তোমাকে বাইরের খাবার খেতে দেব না। কারণ, এতে শরীর খারাপ করবে। তোমার কাচ্চি খেতে ইচ্ছা হয়েছে তো? কোনো সমস্যা নেই। আমি বাসায় তোমার জন্য মজা করে কাচ্চি বিরিয়ানি রান্না করব।

নিতুর ভালোবাসাময় কথা শুনে মনটা আনন্দে ভরে গেল।

খুব আগ্রহ নিয়ে দুপুরে কাচ্চি বিরিয়ানি খেতে বসলাম। খেতে বসে প্লেটের দিকে তাকিয়ে হতভম্ব হয়ে গেলাম। আমি অবাক হয়ে নিতুর দিকে ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে রইলাম। সে আমার তাকানো দেখে বলল,

-এভাবে ভুরু আঁকাবাঁকা করে তাকায় আছো কেন? ভুরু সোজা করে তাকাও। তোমাকে ভিলেনের মতো লাগছে।

-তুমি কাচ্চিতে এগুলো কী দিছ?

-কী দিছি মানে?

-সারা জীবন দেখলাম মানুষ কাচ্চি বিরিয়ানিতে আলু দেয়। আর তুমি দিছ করলা। করলা দিয়ে কাচ্চি বিরিয়ানি! ফাজলামির একটা সীমা থাকা উচিত। বাসায় আলু ছিল না?

-থাকবে না কেন? ভাবলাম, একটা নতুন রেসিপি মেক করি। তাই করলা দিছি।
-তুমি জানো, আমি তিতার ভয়ে করলা খাই না।

-তিতা নিয়ে ভয় পেয়ো না। আমি বিরিয়ানির মধ্যে খেজুরের গুড় দিয়েছি। ফলে দারুণ একটা ঘটনা ঘটেছে। তুমি এ কাচ্চির মধ্যে ঝাল-মিষ্টি-তিতার একটা দারুণ ইউনিক টেস্ট পাবা। খাও মজা হইছে।

তর্ক না করে একটু কাচ্চি মুখে দিলাম। দিয়েই বুঝলাম, এ জিনিস পেটে ঢুকবে না। আমি নিতুর দিকে তাকিয়ে বললাম,

-মাই গড, এত ফালতু রান্না তুমি কীভাবে করো? তুমি তো মনে হয় আমারে না খাইয়ে মারার মিশন নিয়ে এই সংসারে এসেছ, তাই না?

-শোনো, সব সময় আমার রান্না নিয়ে নেগেটিভ কথা বলবা না। মাঝেমধ্যে একটু উৎসাহ দিবা, একটু প্রশংসা করবা। এটা একটা ভদ্রতা।

-প্রশংসা মানুষ তখন করে, যখন সেটা ভালো হয়। তোমার রান্না তো জঘন্য।

-আমার রান্না যদি তোমার এতই খারাপ লাগে, তাহলে নিজে রান্না করে খাও। কলেজ থেকে এসে পড়ালেখা বাদ দিয়ে আমি যে তোমার জন্য রান্না করছি, সেটা তোমার ভাগ্য। মেডিকেলের পড়ালেখা কতটা কঠিন, সে ব্যাপারে তোমার কি কোনো ধারণা আছে?

-ও এবার বুঝলাম। তার মানে তুমি ইচ্ছা করে এসব উল্টাপাল্টা রান্না করছ? যাতে তোমার আর রান্না করতে না হয়, তাই না? তা এটা সরাসরি বললেই তো পারো। শোনো, তোমার আর রান্না করতে হবে না। আমি রান্নার জন্য বাসায় বাবুর্চি নিয়োগ করব।

-খবরদার, আমার বাসায় ওসব হবে না। আমার রান্নাঘরে আমি কাউকে ঢুকতে দেব না। তার চেয়ে বরং এখন থেকে তুমি রান্না করবে। সারা দিন তো বাসায় শুয়েবসেই থাকো।

-আমি যদি রান্না করতে পারতাম, তবে তা-ই করতাম। তোমাকে আর উপদেশ দিতে হতো না।

-ওকে, কোনো সমস্যা নাই। আমি তোমাকে রান্না শিখিয়ে দেব।

-আরে, তুমি আমারে কী শেখাবা, তোমার নিজের রান্নাই তো ফালতু।

-ঠিক আছে, আমার কাছ থেকে শিখতে হবে না। তুমি ইউটিউব দেখে রান্না শিখবে। আর কাল থেকে তুমিই রান্না করবে।

নিতুর কথায় মেজাজ গরম হয়ে গেল। ডাইনিংরুম থেকে চলে যাওয়ার জন্য চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালাম। কিন্তু নিতু জোর করে আবার চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে বলল,

-কোথায় যাও। খবরদার, খাবার না খেয়ে উঠতে পারবে না।

-প্রশ্নই আসে না। আমি তোমার এই ফালতু কাচ্চি খাব না।

-খাবে না মানে? অনেক কষ্ট করে রান্না করেছি। আমি তো তোমাকে এতগুলো বিরিয়ানি নষ্ট করতে দেব না। আর খাবার নষ্ট করা ধর্মেও নিষেধ আছে। চুপচাপ বসে খাও।
-খাবার নষ্ট হবে কেন? তোমার আনকমন বিরিয়ানি তুমি খাও।

-না, আমি রিচ ফুড খাব না। আমি ডায়েটে আছি।

-নিজে না খেয়ে ফালতু জিনিস জোর করে আমারে খাওয়াবা, এটা কোনো ধরনের ফাজলামি? প্লিজ এসব রাজনীতি আমার সাথে কইরো না। আমি তোমার বিরিয়ানি খাব না।

-ভালোয় ভালোয় খাও। নাহলে…

-নাহলে কী করবা?
-হাতুড়ি দিয়ে মাথায় একটা বাড়ি মারব।
-এটা কী বললা! দুনিয়ার কোন স্ত্রী হাতুড়ি দিয়ে তার স্বামীর মাথায় বাড়ি মারে?
-আমি মারি।

না, এই মেয়ের মাথায় আসলেই সমস্যা আছে। আফসোস। স্বামী যে কি জিনিস, এই ফাজিল মেয়েটি বুঝল না। কী আর করা, বাধ্য হয়ে ওই ফালতু বিরিয়ানি গিলে গিলে খেলাম।

খাওয়া শেষ করে মনের দুঃখে অপমানে বেডরুমে গিয়ে শুয়ে পড়লাম। ভাবলাম, শুয়ে থাকলে মনটা শান্ত হবে। কিন্তু না, শুয়ে থেকেও মন শান্ত হলো না। ভাবলাম, দোতারা বাজিয়ে একটু গান করি, তাহলে হয়তো মন শান্ত হবে। তবে সমস্যা হচ্ছে, আমি আসলে গানও পারি না, দোতারাও বাজাতে পারি না।

কয়েক দিন আগে শখ করে একটা দোতারা কিনেছি। যখনই বাজানোর চেষ্টা করি, দেখি টিং টুং কেমন জানি একটা আওয়াজ তৈরি হয়। যার কোনো মানে নেই। পুরাই ফালতু। আর আমার কণ্ঠ থেকে যে সুর বের হয়, তা-ও ফালতু। তবে আমি খেয়াল করে দেখেছি, দোতারা বাজিয়ে গান গাওয়ার পর আমার মন শান্ত হয়। আসলে যেমনই হোক, নিজের সৃষ্টি বলে একটা কথা।

আলমারির পেছন থেকে লুকানো দোতারাটা বের করলাম। নিতুর ভয়ে দোতারাটা আমি বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে রাখি। কারণ, সে এটা ভাঙার ধান্দায় আছে। মনে কষ্ট, তাই ভাবলাম, একটা আবেগী গান গাই। চোখ বন্ধ করে, দোতারা বাজিয়ে গলা ছেড়ে একটা বাংলা গান ধরলাম,

তুমি বন্ধু কালা পাখি
আমি যেন কী?
বসন্তকালে তোমায়
বলতে পারিনি।

সাদা সাদা কালা কালা
রং জমেছে সাদা কালা,
সাদা সাদা কালা কালা
রং জমেছে সাদা কালা,
হইছি আমি মন পাগলা

বসন্তকালে...

এ সময় হঠাৎ করেই নিতু আমাকে ধাক্কা দিল। আমি চোখ খুলে দেখলাম, নিতু চোখমুখ রাগিয়ে তাকিয়ে আছে। আমি ঢোক গিলে বললাম,
-সমস্যা কী?

-সমস্যা কী মানে! তুমি ঘরের মধ্যে গরুর মতো হাম্বা হাম্বা করছ কেন?

-ভাই, আমি তো হাম্বা হাম্বা করছি না। আমি একটা মারফতি গান গাচ্ছিলাম। এই গান শুনলে তো পাষাণের বুকও গলে যায়। তুমি রাগ করছ কেন?

-কারণ, তোমার কারণে এত সুন্দর গানটাকে এখন আমার বিষের মতো লাগে। কয়েক দিন থেকে সারা দিন তো এই একটা গানই গাইছ। সেই গানে না আছে সুর, না আছে আবেগ, না আছে তাল-লয়।

-বলো কী, কী সুন্দর দোতারা বাজিয়ে আবেগ মিশিয়ে গান গাইছি। আমি যখন বাউল চাচার কাছ থেকে দোতারাটা কিনলাম, তখন ওই বাউল চাচা বলেছিল, এই দোতারার সুরে মানুষ নাকি আবেগে কেঁদে দেবে।

-অবশ্যই কেঁদে দেবে। কিন্তু সেটা তো বাজাতে জানতে হবে, তা-ই না? আগে দোতারা বাজানো শেখো, তারপর বাজাও। প্লিজ, এভাবে প্রতিদিন মানুষকে বিরক্ত কইর না। তোমার গানের কারণে বিল্ডিংয়ের সবাই কমপ্লেইন করে।

এ কথা বলে নিতু দোতারাটা বিছানায় ছুড়ে ফেলে হনহন করে রুম থেকে চলে গেল। আমি হতভম্ব হয়ে বসে রইলাম। এ মেয়ে কী বলল? আমি হাম্বা হাম্বা করি? মাই গড, আমার তো দেখি এ সংসারে কোনো মূল্যই নেই। যে সংসারে স্ত্রী তার স্বামীকে মূল্য দেয় না, সে সংসারে আমি কেন থাকব? সিদ্ধান্ত নিলাম, থাকব না। আমি এই বাড়িতে আর থাকব না।

বেডরুম থেকে স্ত্রীর পড়ার রুমে গেলাম। দেখলাম, সে পড়ছে। আমি রুমে ঢুকে শান্ত স্বরে বললাম,

-আমি ঠিক করেছি এ সংসারে আর থাকব না। আমি কাল সকালেই বাসা ছেড়ে চলে যাব।

দেখলাম, সে আমার দিকে ফিরেও তাকাল না। তার চোখ বইয়ের পাতায়। আমি তাকে আবারও বললাম,

-তুমি কি শুনতে পেয়েছ, আমি কী বলেছি?
সে এবারও বই থেকে চোখ সরাল না। আমার দিকে না তাকিয়ে বলল,

-আমি শুনতে পেয়েছি। তোমাকে টেনশন করতে হবে না। আমি রাতেই তোমার ব্যাগ গুছিয়ে রাখব। সকালে যাওয়ার আগেই সব পেয়ে যাবে।

ফাজিল মহিলা। স্বামী ঘর ছেড়ে চলে যাবে, তাতেও তার কোনো সমস্যা নাই। এই মহিলাকে আল্লাহ কী মাটি দিয়ে বানাইছে? আমি আবার তাকে বললাম,

-আমি কিন্তু সিরিয়াস। ফান করছি না।

সে এবার আমার দিকে তাকিয়ে বলল,

-আমিও ফান করছি না। তা এবার কত দিনের জন্য যাচ্ছ?

-এবার চিরকালের জন্য।

-তা যাও। কিন্তু খবরদার, আমার বাবার বাসায় গিয়ে উঠবে না। বউয়ের সাথে রাগ করে বউয়ের বাবার বাড়িতে গিয়ে ওঠার লজিকটা আমার মাথায় ঢোকে না।

-আমি তোমার বাবার বাড়িতে যাই না। আমি আমার খালার বাড়িতে যাই। উনি আমার খালা। মা আর খালা একই জিনিস। তবে তুমি যখন মানা করেছ, আর যাব না।

রাগ করে রাতে ড্রয়িংরুমের সোফায় ঘুমালাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, সোফার পাশে একটা লাগেজ। তার মানে, নিতু রাতেই আমার কাপড়চোপড় সব গুছিয়ে লাগেজে ভরে দিয়েছে। আজব স্ত্রী আমার। কোথায় স্বামী রাগ করেছে তাকে একটু সরিটরি বলে রাগ ভাঙিয়ে নেবে, তা না। স্বামীর ব্যাগ গুছিয়ে গৃহত্যাগে আরও উৎসাহিত করছে। আমার রাগও ফেলনা নয়। আমি রেডি হলাম গৃহত্যাগের জন্য। বের হতে যাব। এ সময় নিতু বলল,

-নাশতা খেয়ে যাও। খবরদার, খালি পেটে বের হবে না।
-আজাইরা পিরিত দেখাবে না। আমি খাব না। আমার খিদা নাই।
-খিদা না থাকলেও খেয়ে যাবা। না খেয়ে বের হলে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পা ভেঙে দেব।

গজগজ করতে করতে খাবার টেবিলের চেয়ার টেনে খেতে বসে গেলাম। কারণ, এ মেয়ের কোনো ঠিক নাই, ঠিকই পা ভেঙে দেবে। খেতে বসে দেখি, গতকালের সেই ফালতু কাচ্চিগুলো আমাকে সে নাশতা হিসেবে খেতে দিয়েছে। আমি অবাক হয়ে কিছুক্ষণ নিতুর দিকে তাকিয়ে রইলাম। তারপর রাগ গোপন করে নরমভাবে বললাম,

-এগুলো ছাড়া কাচ্চি কি আরও আছে?
-আছে। কেন?

-এক কাজ করো, বিরিয়ানিগুলো সব প্যাকেট করে দিয়ে দাও। দুপুরে রাস্তায় কোনো এক জায়গায় বসে খেয়ে নেব।

বলেই খাওয়া শুরু করলাম। খেতে খেতে আড়চোখে দেখলাম, নিতু মিটমিট করে হাসছে। কিছুক্ষণ পর নিতু বলল,

-তা বললে না, এবার কত দিন বাসার বাইরে থাকবে?
-আমি আর ফিরছি না। এটাই শেষযাত্রা। পরকালে দেখা হবে।
-ওই বদমাশ ব্যাটা, গৃহত্যাগ করবি কর। খবরদার, অলক্ষুনে কথা বলবি না। আমারে বিধবা বানানোর শখ হইছে তোর, তাই না?

-মাই গড, তুমি আমাকে তুই করে বলছ! এ কেমন স্ত্রী, স্বামীকে একটুও সম্মান দেয় না। না, এমন খারাপ মহিলার সাথে আর এক মুহূর্তও থাকা সম্ভব নয়। তুমি একাই থাকো। সুখে থাকো। আমি চললাম।

বলেই ব্যাগ আর দোতারা নিয়ে রওনা দিলাম। পেছন থেকে নিতু বলল,

-খবরদার, রাস্তায় আবার দোতারা বাজিয়ে বেসুরো গলায় গান গাওয়া শুরু করো না। আমি ছাড়লেও পাবলিক কিন্তু তোমাকে ছাড়বে না। ঠিকই ধোলাই দিয়ে দেবে।

আমি নিতুর কথার কোনো জবাব না দিয়ে দরজা খুলে সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে গেয়ে উঠলাম,

তুমি বন্ধু কালা পাখি
আমি যেন কী?
বসন্তকালে তোমায়
বলতে পারিনি…
চলবে...

*লেখক: ইমদাদ বাবু, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র
[email protected]