আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস উপলক্ষে কলকাতা ছায়ানটের নানা আয়োজন

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ২১ ফেব্রুয়ারি পূর্বাঞ্চল সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও ভারতীয় বিদ্যা ভবনের সহায়তায় ইস্পাত সংগঠনের উদ্যোগে ইজেডসিসির রঙ্গমঞ্চে ‘একুশে উৎসব ২০২৪’ অনুষ্ঠিত হয়ছবি : সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস উপলক্ষে কলকাতার রবীন্দ্রসদনের উত্তর দিকে রাণুচ্ছায়া মঞ্চে ২০ ফেব্রুয়ারি ভাষা ও চেতনা সমিতির উদ্যোগে ২৬তম বাংলা ভাষা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল পাঁচটায় শুরু হয় অনুষ্ঠান, ২১ ফেব্রুয়ারি ভোর পাঁচটায় শেষ হয়। ছবি আঁকা, পথের আলপনা, নাচগান, কবিতা, নাটক, গণজাদু, শ্রুতিনাটক, মশালমিছিল ও প্রভাতফেরি দিয়ে অনুষ্ঠান সাজানো হয়। বিকেল চারটা থেকে পথে আলপনা দেওয়া শুরু হয়, বিকেল পাঁচটায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা।

উদ্বোধনের শুরুতে ছায়ানটের (কলকাতা) সভাপতি সোমঋতা মল্লিকের পরিচালনায় ৭২ জন শিল্পীর কণ্ঠে ‘কারার ঐ লৌহ-কবাট’ গানটি পরিবেশন করা হয়।

ছবি আঁকা ও পথের আলপনায় অংশগ্রহণ করেন দেবাশিস মল্লিক চৌধুরী, তৌফিক রিয়াজ, নাফিসা ইয়াসমিন, আকিকুল ইসলাম, অধ্যাপক শান্তনু বেজ, যুগল, রেবিনা ও সরকারি চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। সমবেত সংগীতে অংশ নেন কৃষ্ণনগর বিশ্বমৈত্রী সংস্কৃতি পরিষদ নদিয়া জেলা উত্তর শাখা, রক্তকরবী, যাদবপুর প্রাক্তনীর শিল্পীরা। সমবেত নৃত্যে অংশগ্রহণ করে মৃত্তিকা (সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের দল), তাথৈ (ব্যান্ডেল), স্পন্দন (বর্ধমান), রিদম (হাওড়া), বিশ্বমৈত্রী সংস্কৃতি পরিষদ, নদীয়া উত্তর জেলার (কৃষ্ণনগর) শিল্পীরা।

সমবেত আবৃত্তিতে অংশ নেয় আনন্দমেলা, বাচিকশৈলী, কাব্যপথিক, রবীন্দ্রনাথ বাচিক শিল্পী সংস্থা, স্বপ্না দে ও সহশিল্পীরা, আবৃত্তি শিল্পী সংস্থা, স্বর ও শ্রুতি বিষ্ণুপুর, কবিতাকে ভালোবেসেসহ বেশ কিছু সংস্থা। রাত ১২টায় মশালমিছিল। রাত একটা থেকে নাটক ইছাপুর সন্ধিক্ষণের ‘চিরকুট’, প্রতিকৃতির হারানের ‘নাতজামাই’, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ড্রামা ক্লাবের ‘জেল ডায়েরি’, আলীপুর প্রাচ্যের ‘গোলাপের কুচকাওয়াজ’ অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া সারা রাত বহু সংস্থা অনুষ্ঠানে অংশ নেয়।

একুশের উৎসব

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ২১ ফেব্রুয়ারি পূর্বাঞ্চল সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও ভারতীয় বিদ্যা ভবনের সহায়তায় ইস্পাত সংগঠনের উদ্যোগে ইজেডসিসির রঙ্গমঞ্চে ‘একুশে উৎসব ২০২৪’ অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ভারতীয় বিদ্যা ভবনের প্রধান শিক্ষক অরুণ কুমার দাশগুপ্ত,  বিধাননগর পৌর নিগমের চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত, ইস্পাতের সম্পাদক রিতেশ বসাক প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সূচনা হয় ছায়ানটের (কলকাতা) ৭২ জন শিল্পীর কণ্ঠে কাজী নজরুল ইসলামের দেশাত্মবোধক গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। পরিচালনায় ছিলেন ছায়ানটের (কলকাতা) সভাপতি সোমঋতা মল্লিক। অনুষ্ঠানের শেষে ইস্পাতের সভাপতি সুজিত পাল সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

শতকণ্ঠে কাজী নজরুল ইসলামের দেশাত্মবোধক গান   

১১ ফেব্রুয়ারি কলকাতার ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামে ছায়ানটের (কলকাতা) উদ্যোগে শতকণ্ঠে কাজী নজরুল ইসলামের দেশাত্মবোধক গান ‘কারার ঐ লৌহ-কবাট’ ও ‘দুর্গম গিরি, কান্তার-মরু’ পরিবেশিত হয়।

ছায়ানটের (কলকাতা) সভাপতি সোমঋতা মল্লিক বলেন, ‘এই বছর আমরা উদ্‌যাপন করব আমাদের প্রাণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী। তাই শুধু একটি অনুষ্ঠান নয়, বছরব্যাপী আমরা কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় শতকণ্ঠে নজরুলের দেশাত্মবোধক গানের অনুষ্ঠান করব। সবাই যেভাবে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, আমরা সত্যিই আপ্লুত। যদিও আমরা শতকণ্ঠের কথা উল্লেখ করেছি, কিন্তু প্রায় ২৫০ জন শিল্পী আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এভাবে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমরা নজরুলচর্চা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’