কেনাকাটা

র‌্যাংলার নাকি লিভাইস... শ্যানেল কোকো নাকি গুচি?
এমনই রাজ্যের পছন্দসই কত পণ্য, কোনটা ছেড়ে কোনটা নেবে!! আবার গত সপ্তাহে চেস ব্যাংকে সেভিং অ্যাকাউন্ট খুলেছো...কিছু তো সঞ্চয় করা চাই। আবার অনলাইনে কোনো একটা কিছু তো অর্ডার করা হচ্ছেই। তুমি আমি, আমরা সবাই বাণিজ্যের সঙ্গে মূল্যবোধ ট্যাগিং করছি—অর্থাৎ যেটা ভালো লাগল তাতেই পয়সা খরচ!

বলছিলাম কেনাকাটার গল্প—কেনাকাটার প্রবণতাও বলা যায়।

কনজিউমার বা ক্রেতাদের একদল বিচার–বিবেচনা করেন কিছু কেনার আগে। তাঁরা ভাবেন, যেটা খরিদ করছেন বা করতে যাচ্ছেন, তা কতটা প্রয়োজনীয়, আর্থসামাজিক জীবনে জরুরি কি না এবং পরিবেশের জন্য কতটা উপযোগী। তাঁরা সাশ্রয়ী বা কটুভাবে বললে কৃপণ।

উদাহরণস্বরূপ আমার কর্তাকে দেখা যায়, ২০০ ডলারের একটা লিভিং রুমের কার্পেট কেনার আগে মোটামুটি দুই সপ্তাহের রিসার্চ করতে।

আরেক দল আছে, যাঁরা পছন্দ হলেই কিনে বসেন। বাছ–বিচারের আওতায় আনা যায় না তাঁদের। এ কেনাকাটার প্রভাব বাজারের বা পণ্যের উপযোগিতা নয়, পণ্যের ওপর তাঁদের পছন্দকে নয়, বরং তাঁদের ক্রয়ক্ষমতাকে হাইলাইট করে।

যখনই তোমরা অর্থ খরচ করছো, একটা করে ভোট দিচ্ছ যে রকম সমাজ ও পৃথিবী চাও তার পক্ষে। লেখিকা আ্যনালা পে অন্তত সে রকমই বলছেন।

মূল্য ও উপযোগিতা মানে একটা জিনিস শুধু পছন্দসই বলে নয়, তার দরকার কতটা তা বিচার–বিবেচনা করে কিনতে যাওয়াকে বলা হয় এথিক্যাল কনজিউমারিজম। অভিনেত্রী এমা ওয়াটসন জাতিসংঘের পণ্যদূতও বটে। তিনি বলেন, আমাদের কেনাকাটার সচেতনতার মাঝে নাকি বিপুল ক্ষমতা রয়েছে পৃথিবীটাকে বদলে দেওয়ার মতো। প্রকৃতপক্ষে আমার দৈনন্দিন জীবনে লাগবেই, যা হলো বেসিক নিড, তার জন্য আমাদের অত ভাবাভাবির দরকার নেই। তবে এখানে যেটা বিচার করতে হয়, তা হলো কনটেক্সট বা কোথায়, কীভাবে, কখন আমি তা ব্যবহার করতে চাই। দরদাম সব পণ্যের বেলায়ই বিবেচ্য।

লেখা লম্বা হওয়া বাঞ্ছনীয়ও নয়। তাই পয়েন্টে যাই। ২০২৩–এর রমজান শেষে কোরবানির ঈদ আসছে। ঈদ শপিং প্রয়োজনীয়তা আছে কি নেই, তা নিয়ে আলোচনা করার মতো অসীম সাহসী আমি নই। আমার ক্ষমতা বড়জোর একটা নাতিদীর্ঘ রচনা লিখে আমার প্ল্যাটফর্মের পাঠকের বিরক্তি উদ্রেক করা। তা সেটাই করছি এখন—ঈদ শপিং বা উত্সবকালে শপিং আমার বা আমাদের নয়, পুরো মানবজাতির সংস্কৃতি। এর বিপরীতে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। লোকে কেনাকাটা করবে—অনলাইন, অফলাইন, দোকান, ফুটপাত, শপিং মলে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা ঈদ, পূজা ও নববর্ষ উপলক্ষে ব্যবসার হাইপ তুলে যে ক্রেজ তৈরি করেন, সেটাকে আমার অত্যাচার মনে হয়। কোনো কিছুকেই অত্যাচারের পর্যায়ে না নিয়ে যাওয়াই তো সভ্যতা। আসুন, সেই চর্চা হোক এখন থেকে!!