স্পেনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরু
স্পেনপ্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য গতকাল শনিবার মাদ্রিদতে বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। স্পেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদের সভাপতিত্বে দূতাবাসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দূতাবাসের কাউন্সেলর (শ্রম) মুতাসিমুল ইসলাম।
স্পেন দূতাবাসের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংখ্যাধিক্যের দিক থেকে স্পেনে বসবাসরত বাংলাদেশিরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের তৃতীয় বৃহত্তম প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি। মাদ্রিদতে বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে তাঁদের দীর্ঘদিনের একটি প্রত্যাশা পূরণ হলো। এখন থেকে স্পেনপ্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকেরা ই-পাসপোর্টসংক্রান্ত সব সেবা ও সুবিধার আওতাভুক্ত হবেন।
দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট সিস্টেমের পাশাপাশি এমআরপি কার্যক্রমও যথারীতি অব্যাহত থাকবে।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নিরাপদ ভ্রমণ দলিল ই-পাসপোর্ট একটি বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট, যাতে ‘ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ’ রয়েছে। এতে ৩৮টিরও বেশি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যসংবলিত মাইক্রোপ্রসেসর চিপে বায়োমেট্রিক ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, যথা পাসপোর্টধারীর রঙিন ছবি, ১০ আঙুলের ছাপ, চোখের আইরিশ, স্থায়ী বা বর্তমান ঠিকানা, পূর্ববর্তী পাসপোর্টের রেকর্ড ইত্যাদি সঞ্চিত থাকে। ই-পাসপোর্ট সিস্টেমের সঙ্গে এমআরপি সিস্টেমের ইন্ট্রিগ্রেশন ও মাইগ্রেশন সম্পন্ন করা হয়েছে। ফলে আগের পাসপোর্টের সব তথ্যই এতে সংরক্ষিত থাকবে। ই-পাসপোর্ট সিস্টেমে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন নম্বর দিয়ে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আবেদন ফরম পূরণ করা এবং অনলাইনে পাসপোর্ট ফি প্রদানের সুযোগ রয়েছে। আবেদনের সঙ্গে দাখিলকৃত তথ্য যাচাইসহ আবেদন প্রক্রিয়াকরণের সর্বশেষ স্ট্যাটাস মুহূর্তেই জানা যায়। বয়সের ঊর্ধ্বসীমা–নির্বিশেষে যেকোনো নাগরিক ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট নিতে পারবেন।
ই-পাসপোর্ট সিস্টেমে জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মনিবন্ধন সনদের ডেটাবেজ, ৭২টি এসবি/ডিএসবি অফিস, ই-হজ ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। তা ছাড়া তথ্যের নিরাপত্তার জন্য পৃথক ডেটা সেন্টার ও disaster recovery site স্থাপন করা হয়েছে।
বর্তমানে বিদেশের ২৫টি বাংলাদেশ মিশনে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চলমান। এরই ধারাবাহিকতায় ২৬তম মিশন হিসেবে স্পেনের মাদ্রিদে বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট ব্যবস্থা চালু হলো। ভবিষ্যতে বিদেশের আরও ৫৪টি মিশনে ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করা হবে। ই-পাসপোর্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা হলো, ই-গেট ব্যবহার করে একজন ই-পাসপোর্টধারী অনায়াসে এবং দ্রুততার সঙ্গে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন। বর্তমানে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, বেনাপোল স্থলবন্দরসহ মোট ৪২টি ই-গেট চালু রয়েছে। বাংলাবান্ধা, আখাউড়া ও মুজিবনগর স্থলবন্দরসহ আরও ১০টি ই-গেট স্থাপনের কার্যক্রম চলমান।