লন্ডনে জমজমাট বাংলাদেশি বিবাহসামগ্রী মেলা
পান থেকে কেক, চুড়ি থেকে গয়না, শাড়ি থেকে শেরওয়ানি—বিয়ের আয়োজনের কী নেই! ছিল পালকি, ফার্নিচার, মঞ্চ, দামি ব্রান্ডের গাড়ি। বাদ পড়েনি বিয়ের আমন্ত্রণ কার্ড, ফুল, ফটো ও ভিডিওগ্রাফি, মেকআপ আর্টিস্ট থেকে হানিমুন প্যাকেজ।
মোটকথা বিয়ে আয়োজনের শুরু থেকে হানিমুন পর্যন্ত যা কিছু লাগে, সবকিছুই এক ছাদের নিচ পাওয়া গেছে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে আয়োজিত ‘লন্ডন বেঙ্গলি ওয়েডিং ফেয়ার বা লন্ডনে বাংলাদেশি বিবাহসামগ্রী মেলায়’।
পূর্ব লন্ডনের রয়্যাল রিজেন্সি হলে রোববার দিনব্যাপী আয়োজন করা হয় এই মেলার। সপ্তমবারের মতো এই মেলার আয়োজন করে পার্ল অ্যাডভারটাইজিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান। লাক্স ফার্নিশিংয়ের সৌজন্যে সহযোগিতায় ছিল রয়্যাল রিজেন্সি হল।
মি এশিয়ান ওয়েডিং ক্যাটারিং নামের একটি ওয়েবসাইটের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের এশীয় সম্প্রদায়ের ব্রিটিশ নাগরিকেরা বিয়ের অনুষ্ঠানে প্রতিবছর অন্তত ৩০০ কোটি পাউন্ড (যুক্তরাজ্যের মুদ্রা) খরচ করে থাকেন। ন্যূনতম খরচের মধ্যে প্রতিটি বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে গেলেও গড়ে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার পাউন্ড খরচ করতে হয় বর ও কনে পক্ষকে।
লন্ডন বেঙ্গলি ওয়েডিং ফেয়ারের আয়োজক প্রতিষ্ঠান পার্ল অ্যাডভারটাইজিং বলছে, যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি কমিউনিটি বিয়ের অনুষ্ঠানাদিতে প্রতিবছর প্রায় ৭ কোটি ৬ লাখ পাউন্ড খরচ হয়। বিশাল অঙ্কের বিয়ের এই বাজার বিচ্ছিন্ন এবং কর্মজীবী মানুষদের পক্ষে কম সময়ে এত সব আয়োজন একসঙ্গে করাও বেশ সময়সাপেক্ষ ও কষ্টসাধ্য।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, কম সময়ে বিয়েশাদির সকল খুঁটিনাটির জোগান সহজলভ্য করা এবং এ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্রিটিশ-বাংলাদেশি তরুণ উদ্যোক্তাদের সঙ্গে ভোক্তাদের সরাসরি পরিচয় করিয়ে দিতেই এ মেলার আয়োজন।
মেলায় বিভিন্ন ধরনের সেবা নিয়ে অর্ধশতাধিক স্টল অংশগ্রহণ করে। সেখানে প্রদর্শিত হয় তাদের পণ্য ও সেবা। আসন্ন বিয়ের মৌসুম আগস্ট-সেপ্টেম্বর সামনে রেখে গ্রাহকদেরও ছিল উপচে পড়া ভিড়। ইতিমধ্যে যাঁদের বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হয়ে গেছে, তাঁরা এই মেলার মাধ্যমে বিভিন্ন সেবা ও পণ্য বুকিং দিয়ে গেছেন।
মেলার অন্যতম আকর্ষণ ছিল ব্রিটিশ-বাংলাদেশি মডেলদের চোখধাঁধানো ফ্যাশন শো। বরেণ্য শিল্পীদের গান আর খ্যাতনামা মডেলদের ফ্যাশন শোতে প্রাধান্য পায় বাংলাদেশি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি।
বিবিসি এশিয়ান নেটওয়ার্কের জনপ্রিয় উপস্থাপক স্ম্যাস বেঙ্গলীর উপস্থাপনায় মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান পার্ল অ্যাডভারটাইজিংয়ের সিইও সোহানা আহমদ ও এমডি আহাদ আহমদ দর্শনার্থী, তরুণ উদ্যোক্তা ও সহযোগী সব প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানান।