কানাডা-মার্কিন সীমান্তে অভিবাসী ও শুল্ক ইস্যু নিয়ে কানাডার নতুন উদ্যোগ

কানাডা-মার্কিন সীমান্তে অবৈধ অভিবাসনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় কানাডা কুইবেকে একটি নতুন ‘প্রসেসিং সেন্টার’ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। মার্কিন সীমান্তের কাছে কুইবেকের সেন্ট-বার্নার্ড-ডি-লাকোলে সেন্টারটি স্থাপন করা হবে। এ সেন্টারে একসঙ্গে ২০০ জন পর্যন্ত শরণার্থীর জন্য অপেক্ষাকক্ষ, খাবার বিতরণ ও অন্যান্য জরুরি সেবা প্রদান করা হবে।

কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি (CBSA) জানিয়েছে, এটি কানাডা সরকারের আকস্মিক অভিবাসন স্রোত মোকাবিলার প্রস্তুতির অংশ। সম্প্রতি অভিবাসনের হার কিছুটা কমলেও শীত মৌসুমে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার ফলে অভিবাসন ও মানব পাচার আবার বাড়ার আশঙ্কা নতুন করে বেড়েছে।

গত সপ্তাহে কানাডার ম্যানিটোবার এমারসন সীমান্ত এলাকায় মাইনাস ৩০-৩৫ তাপমাত্রার মধ্যেও ছয়জন অভিবাসীকে অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময় গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা জর্ডান, সুদান, চাদ ও মৌরিতানিয়া থেকে এসেছেন। শীতের পোশাক না থাকার কারণে ও অসুস্থ হওয়ায় চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়। তাঁরা ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের ভয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে হেঁটে হেঁটে কানাডা আসছিলেন।

এ ধরনের ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। ২০১৭ সালে দুই ঘানার নাগরিক তুষারে জমে আঙুল হারান এবং ২০২২ সালে একটি ভারতীয় পরিবারের সদস্যরা সীমান্ত পাড়ি দিতে গিয়ে হিমায়িত অবস্থায় মারা যান।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসন ও মাদক পাচার বন্ধে কানাডার প্রতি চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছেন। তিনি এই ইস্যুতে কানাডার ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কানাডা সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করতে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে হেলিকপ্টার নজরদারি, ড্রোন এবং উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার। তা ছাড়া ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে জয়লাভ করার পরপরই কানাডা তাদের বর্ডার গার্ডের জনবল বাড়িয়েছে।

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের চাপ এবং অভিবাসন–সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ দুই দেশের মধ্যে একটি নতুন উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করছে। শরণার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি কানাডা-মার্কিন শুল্কের দ্বন্দ্ব সামলানো এখন অটোয়ার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।