উন্নয়নের অগ্রযাত্রার জন্য প্রয়োজন নলেজ রেমিট্যান্স
বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা নিশ্চিতকল্পে অনিবাসী বাংলাদেশিদের থেকে আর্থিক রেমিট্যান্সের পাশাপাশি প্রয়োজন নলেজ রেমিট্যান্স। আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ২০২৩ এবং প্রথমবারের মতো জাতীয় প্রবাসী দিবস ২০২৩ উপলক্ষে সুইজারল্যান্ডের জেনেভাস্থ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন আয়োজিত আলোচনা সভায় গত শনিবার (২০ জানুয়ারি) জেনেভায় নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মো. সুফিউর রহমান এ কথা বলেন।
মো. সুফিউর রহমান স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রার সব পর্যায়ে অভিবাসীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের প্রশংসা করেন। দেশের চলমান উন্নয়নে অধিকতর অবদান রাখতে হলে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ভিন্ন ভিন্ন শ্রমবাজার উপযোগী ও দক্ষ কর্মসংস্থানের জন্য বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীদের অধিকতর ও নতুনতর দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্ব স্ব ক্ষেত্রে সম্মানের সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত প্রবাসীদের বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক উন্নয়নে অধিকতর অবদানের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সরকার প্রবাসীদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৩০ ডিসেম্বরকে ‘জাতীয় প্রবাসী দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বৈদেশিক কর্মসংস্থান সৃষ্টির বাইরে প্রবাসীদের কল্যাণের বিশেষ গুরুত্বের আলোকে জাতীয় ডায়াসপোরা নীতি প্রণয়নে সচেষ্ট রয়েছে। এ ক্ষেত্রে, প্রচলিত আইনকে প্রবাসীবান্ধব করা, দ্বৈত ট্যাক্স অবলোপন, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বিভিন্ন মহলের মতামত রয়েছে। এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে প্রবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করা ও বিশেষ প্রাধিকার প্রদানের বিষয়টি উল্লেখ করেন। অনিবাসী বাংলাদেশিদের প্রথম প্রজন্ম বাংলাদেশের সাথে অতীতের অভিজ্ঞতা ও স্মৃতির মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন করলেও পরবর্তী প্রজন্মকে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার বিষয়ে আমাদেরকে একযোগে কাজ করতে হবে।
আলোচনা পর্বের শুরুতে দূতাবাসের কর্মকর্তারা পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে দিবসের ওপর তথ্য-উপাত্তসহ আলোকপাত করেন। সুইজারল্যান্ডে বসবাসরত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রবাসীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। তাঁরা দ্বৈত নাগরিকদের ব্যাংক ঋণ সুবিধা, নিয়মিত কন্স্যুলার ক্যাম্প আয়োজন, বৈধ পথে অর্থপ্রেরণের সুবিধা ও চ্যালেঞ্জ, পেনশন স্কিমে অর্থ প্রেরণের বাধা ইত্যাদি বিষয়ে সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানান। রাষ্ট্রদূত তাঁদের পরামর্শ, সুপারিশ ও নানাবিধ সমস্যা সম্পর্কে অবহিত হন এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন। প্রবাসীরা তাঁদের কল্যাণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের উদ্যোগে ২০২২ ও ২০২৩ সালে পরপর দুই বছর সিআইপি (এনআরবি) মনোনীত হওয়ায় আমিন আহম্মেদ খোন্দকারকে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় কাজের স্বীকৃতিস্বরুপ কাজী মনিরুল ইসলামকে বিশেষ সম্মান প্রদর্শন করা হয়। এর আগে, অনুষ্ঠানের শুরুতে সব প্রবাসী বাংলাদেশিকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তি