অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন আইনে যে যে সুবিধা আসছে
অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হতে যাচ্ছে নতুন অর্থবছর। আগামী ১ জুলাই থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশটির সব খাতের পাশাপাশি অভিবাসন খাতেও আসবে পরিবর্তন। তবে নতুন অর্থবছরে গোটা অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন প্রক্রিয়ায় বড়সড় রদবদল আসতে চলেছে। প্রায় দুই বছর আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার দরুন সৃষ্ট দেশটির শ্রমবাজারে ঘাটতি কমাতে নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশিরা সুবিধা পাবেন যে ভিসা ক্যাটাগরিতে, সে কথা থাকছে এখানে। যে নতুনত্বের ঘোষণা দিয়েছে সরকার তা হলো—
শিক্ষার্থী ভিসায় কর্মঘণ্টা বাড়ছে
করোনাকালে সংকটের কারণে শিক্ষার্থী ভিসাধারীদের কর্মঘণ্টার সীমাবদ্ধতা তুলে নেওয়া হয়েছিল। তবে আসন্ন অর্থবছরে এ সুবিধা বন্ধের কথা থাকলেও এর পরিবর্তে পূর্বের সপ্তাহে ২০ কর্মঘণ্টাকে বাড়িয়ে ২৪ ঘণ্টা করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে এ বছরের শেষ পর্যন্ত।
৪৮৫ টেম্পোরারি গ্র্যাজুয়েট ভিসা
শিক্ষা সমাপনী-পরবর্তী ভিসা ৪৮৫ টেম্পোরারি গ্র্যাজুয়েট ভিসারও মেয়াদ বাড়ানো যাবে। এ ভিসাধারীরা স্নাতক পাস হলে ২ বছরের বদলে ৪ বছর, স্নাতকোত্তর হলে ৩ বছরের পরিবর্তে ৫ বছর এবং ডক্টরাল হলে ৬ বছর বসবাস করতে পারবেন অস্ট্রেলিয়ায়।
যে পরিবর্তন সম্ভাব্য
অস্ট্রেলিয়ার পুরো অভিবাসনপ্রক্রিয়া বড়সড় পরিবর্তন পেতে চলেছে। দশক পুরোনো অভিবাসন পদ্ধতি সময়ের সঙ্গে মানাসই করতে এসব পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে সংসদে। দেশটির অভিবাসন বিভাগ এ নিয়ে একটি ‘পর্যালোচনা প্রতিবেদন’ প্রকাশ করেছে। এ প্রতিবেদন থেকে বেশ কিছু আসন্ন পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। উল্লেখযোগ্য এমন কয়েকটি সুবিধাজনক পরিবর্তন হলো—
বাড়ছে সর্বনিম্ন বেতন
নতুন অর্থবছর থেকে প্রবাসী কর্মীদের সর্বনিম্ন বেতন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় কর্মভিসায় কোনো আন্তর্জাতিক শ্রমিককে চাকরি দিতে হলে তাঁর বেতন অবশ্যই সরকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন বেতনের হতে হয়। বহু বছর ধরে এ সর্বনিম্ন বেতন ছিল বার্ষিক ৫৩ হাজার অস্ট্রেলীয় ডলার। জীবনযাত্রার বাড়তি খরচের কথা বিবেচনায় এনে এই সর্বনিম্ন বেতন ৭০ হাজার ডলারে উন্নীত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
টিএসএস ৪৮২ ভিসা থেকে স্থায়ী বাসিন্দা প্রক্রিয়া
অভিবাসন প্রক্রিয়ায় প্রস্তাবিত পরিবর্তনের মধ্যে সবচেয়ে খুশির খবর আসছে অস্থায়ী স্বল্পমেয়াদি কর্মভিসার জন্য। অস্ট্রেলিয়ার জনপ্রিয় ও প্রধান কর্মভিসার একটি হলো টিএসএস ৪৮২ ভিসা। এ ভিসার অন্যতম একটি স্ট্রিম শর্ট-টার্ম, যা ২ বছর মেয়াদি। আগে এ ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় এসে ২ বছর কর্ম করার পর সরাসরি স্থায়ী ভিসায় আবেদন করার সুযোগ ছিল না। যদিও করোনাকালে স্বল্পমেয়াদি ভিসায় যাঁরা দেশটিতে অবস্থান করছেন, তাঁদের স্থায়ী ভিসা দিয়েছিল অভিবাসন বিভাগ। আসন্ন অর্থবছর দক্ষ কর্মীদের অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী বসবাসের পথ সুগম করছে অস্ট্রেলিয়া।
*কাউসার খান: অভিবাসন আইনজীবী, সিডনি, অস্ট্রেলিয়া। ই-মেইল: [email protected]