আমি আবু সাঈদ বলছি
বুকের ব্যথাটা চিনচিন করে বাড়ছে।
কেউ কি আসবে, আমার ব্যথাটা উপশম করতে?
না না তোমরা না, তোমরা এসো না।
তোমরা থাকো সেখানে। ওই তো সূর্য।
বিজয়ের সূর্য। জয় করে তারপর এসো।
তাপ বেশি! হ্যাঁ, একটু বেশি তো হবেই।
দিন তো প্রায় শেষ হতেই চলেছে।
তাপের প্রখরতা কমতে থাকবে।
আর কিচ্ছুক্ষণ মাত্র।
তারপর নীলাকাশজুড়ে হাসবে আলোকিত চাঁদ!
হাতের মুঠিতে থাকবে লাল গোলাপ আর রক্তকরবী।
আমি আসব তোমাদের সাথে মিলতে।
চাঁদের আলো নিয়ে তোমরা এসো আমার কাছে।
ব্যথাটাকে আমি সহ্য করতে পারব।
কিন্তু সূর্য বিনা তোমাদের ফিরে আসাটা—
তোমরা কি জানো?
আমার মা-বাবা এখন আমাকে নিজের সন্তান বলে না।
আমার ভাই-বোনেরা বলে না আবু সাঈদ আমাদের।
ভাবছ অবাধ্য সন্তান বলে!
না না, এরা বলে, আবু সাঈদ দেশের সন্তান।
আবু সাঈদের জন্ম তো দেশের জন্য।
আবু সাঈদ বুক পেতে দেয় দেশমাতৃকার তরে।
তাই তো মা এখন অশ্রু মুছে ফেলেছে।
মা বলে, আমি হারিয়েছি সন্তান, তবে
আমার আবু সাঈদের রক্তের বিন্দুতে
জন্মেছে লাখো সন্তান। নেমেছে তারাও।
সূর্য আনতে রাস্তাটা দেখিয়েছিল আবু সাঈদ।
ওই তো, সেই দূর আকাশ থেকে দেখছে আমাদের।
মায়ের কথাগুলো শুনি কান পেতে আর হাসি।
মা–রে, আমি চলে গেছি বলে তোমার অনেক কষ্ট, তাই না!
আমি যদি না যেতাম, তুমি কোটি সন্তানের মা হতে কীভাবে?
দেশ ও মানুষের জন্য বুক পেতেছিলাম মা। হাতে পেতে একটি নতুন সূর্য।
আমার পথে নেমেছে ভাইয়েরা। তারা একদিন সূর্য নিয়ে আসবে।
সময় খুবই কম। গড়িয়ে যাচ্ছে বেলা, তেজহীন হয়ে যাচ্ছে সূর্য।
তোমরা এসো না সূর্যহীনা। সূর্য নিয়ে তারপর এসো আমার কাছে।
আমি আছি তোমাদের পাশে। থাকব সারাক্ষণ।
আমি কে? আওয়াজ শুনেও বোঝনি?
আমি আবু সাঈদ বলছি।