মিশিগান মাতিয়ে গেলেন নগর বাউল জেমস
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রয়েট সিটির ‘জেইন ফিল্ডে’ গত ২৮, ২৯ ও ৩০ জুলাই (শুক্র, শনি ও রোববার) তিন দিনব্যাপী ‘নর্থ আমেরিকান বাংলাদেশি ফ্যাস্টিভ্যাল ২০২৩’ অনুষ্ঠিত হয়।
এবার ছিল মেলার ২২তম বর্ষপূর্তি। প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে মধ্যরাত অবধি মেলার কার্যক্রম চলে। পরিবার–পরিজন, আত্মীয়স্বজন, ছেলেমেয়ে, মা–বাবাকে নিয়ে অনেকে এসেছিলেন মেলা দেখতে। ছন্দে বাঁধা প্রবাসজীবনের ব্যস্ততায় মেলার দিনগুলো হয়ে উঠেছিল আনন্দমুখর। মূলত সবার সঙ্গে মিলিত হওয়ার, আড্ডা দেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ। মেলা পরিণত হয়েছিল মিলনমেলায়।
আয়োজকেরা জানান, বাংলা, বাঙালি সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ঐতিহ্য, নতুন প্রজন্মকে জানানো ও তাঁদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এ মেলা। মেলায় ছিল রকমারি দোকানপাট। সেসব দোকানে ছিল বাংলাদেশি পণ্যের বাহার। শাড়ি, গয়না, খেলনা, ঘর সাজানোর জিনিস, খাবারের দোকান। সন্ধ্যায় মেলায় দেখা গেছে বাঁধভাঙা মানুষের ঢল। সাম্প্রতিক সময়ে এমন লোকসমাগম মিশিগানের কোনো অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি। হাজারো প্রবাসী বাঙালির উপস্থিতিতে জেইন ফিল্ড পুরো পার্কটি কানায় কানায় ভরে ওঠে। বৃহত্তর ডেট্রয়েটের হ্যামট্রাম্যাক, ডেট্রয়েট, ট্রয়, ওয়ারেন, স্টার্লিংহাইটস, মেডিসনহাইটস, রয়েল অক, অ্যান আরবার, লেন্সিং, ক্যান্টন, পন্টিয়াক শহরসহ বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য, বিশেষ করে ওহাইও, ইলিনয়, নিউজার্সি, ইন্ডিয়ানা, কানাডার টরন্টো, উইন্ডসর থেকে প্রবাসী বাঙালিরা মেলায় আসেন।
মেলায় উপস্থিত ছিলেন মিশিগানের বিভিন্ন গণমাধ্যম, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক নেতারা। মেলা কার্যত পরিণত হয়েছিল উৎসবে। প্রবাসে মেলা এখন বাঙালির এক বিশেষ পার্বণ। মেলায় ছিল আকর্ষণীয় রাফেল ড্র। মেলায় স্থানীয় শিল্পীরা অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী রিজিয়া পারভীনের সংগীতে মুগ্ধ হন মিশিগানপ্রবাসী বাঙালিরা। মেলার শেষ দিন রোববার সর্বশেষে রাত ১০টায় মাথায় গামছা বেঁধে মঞ্চে ওঠেন নগর বাউল জেমস। মুহুর্মুহু করতালি ও বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতে ওঠেন হাজারো দর্শক–শ্রোতা। গুরু একের পর এক তাঁর জনপ্রিয় গান পরিবেশন করেন। গান শেষে জেমস তাঁর দর্শক–শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘বেঁচে থাকলে আবার দেখা হবে।’