বাংলাদেশি ও বিদেশি শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট সৌদি সরকার

বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে অধিকতর স্বচ্ছতা, শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক উন্নয়ন, মালিক ও শ্রমিক উভয় পক্ষকে জবাবদিহির আওতায় আনা এবং শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার জন্য সৌদি সরকারের সাম্প্রতিক সময়ে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে তা বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে সৌদি সরকার। গতকাল বুধবার সৌদি মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহকারী উপমন্ত্রী ফয়সাল আল দাফায়ান তাঁর কার্যালয়ে রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাসের মিশন উপপ্রধান মো. আবুল হাসান মৃধার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও ওয়ার্কশপে আলোচনায় এ আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি আরও জানান, বর্তমানে সৌদি আরবে কর্মরত বিদেশি শ্রমিকদের মধ্যে বাংলাদেশিদের সংখ্যাই সর্বোচ্চ এবং বাংলাদেশি শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রম ও কাজের প্রতি আন্তরিকতার কারণেই সৌদি শ্রমবাজারে তাঁদের চাহিদা বাড়ছে।

ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে যেসব প্রকল্প হাতে নিয়েছে, তাতে বাংলাদেশের বিশাল এ জনশক্তি সহযোগী হিসেবে কাজ করছে বলে প্রতিনিধিদলকে অবহিত করেন সহকারী উপমন্ত্রী ফয়সাল আল দাফায়ান। তিনি বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীদের তাঁদের গৃহীত বিভিন্ন সেবার ডিজিটালাইজড সিস্টেমের সঙ্গে পরিচিত করতে দূতাবাসের সহযোগিতা কামনা করেন। ওয়ার্কশপে বিভিন্ন সেবার ডিজিটালাইজড সিস্টেমে কী কী সুবিধা রয়েছে এবং তা থেকে প্রবাসী কর্মীরা কীভাবে সেই সব সুবিধা কাজে লাগিয়ে উপকৃত হতে পারেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

সভায় সৌদি আরবে বাংলাদেশি কর্মীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও তাঁদের দেখভালের জন্য মিশন উপপ্রধান সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, কাজ, ইকামার নিশ্চয়তাসহ ভিসা ইস্যু, চুক্তি শেষে নারী কর্মীদের ফেরত পাঠানো, ইকামার মেয়াদ শেষ হওয়া কর্মীদের দ্রুত দেশে প্রত্যাবর্তন এবং মুসানিদ সিস্টেমে বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সির অভিযোগ নিষ্পত্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে সৌদি আরবের সহযোগিতা কামনা করেন।

ওয়ার্কশপে সৌদি মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে সহকারী উপমন্ত্রী ফয়সাল আল দাফায়ান জানান, সৌদি শ্রমবাজারে আরও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির জন্য সৌদি সরকার কাজ করে যাচ্ছে। শ্রমিকদের অভিযোগ আমলে নিয়ে সমস্যা সমাধানে সম্প্রতি ১ হাজার ২০০ শ্রম পরিদর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যাঁরা ২০২৩ সালে প্রায় ১০ লাখ অভিযোগের সমধান করেছেন বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, সৌদি সরকার সৌদি আরবকে একটি আধুনিক শ্রমবান্ধব দেশে উন্নীত করতে শ্রমিকদের নিয়োগসহ পুরো প্রক্রিয়াকে অটোমেশন করতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাঁদের গৃহীত এসব উদ্যোগ বাস্তবায়নে দূতাবাসের সহযোগিতা কামনা করলে হাসান মৃধা বাংলাদেশ সরকারের পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এ ছাড়া তিনি শ্রমিকদের সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য সৌদি মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ে একজন ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারণ করতে অনুরোধ জানালে সহকারী উপমন্ত্রী ফয়সাল আল দাফায়ান তাতে সহমত প্রকাশ করেন।

ওয়ার্কশপে দূতাবাসের শ্রমকল্যাণ উইংয়ের কাউন্সেলর (শ্রম) মুহাম্মদ রেজায়ে রাব্বী, কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, প্রথম সচিব (শ্রম) মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন এবং দ্বিতীয় সচিব(প্রেস) আসাদুজ্জামান খান উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞপ্তি