লম্বা এক দৌড় শেষে দেশের পতাকা উঁচিয়ে তুললেন যাঁরা

আসাদুল আলম ও নজরুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

আসাদুল আলম ও নজরুল ইসলাম। সিঙ্গাপুরপ্রবাসী, সিঙ্গাপুরে থাকেন কাজের সুবাদে। কিন্তু কাজের পাশাপাশি ফিটনেস নিয়ে বেশ মনোযোগী তাঁরা। সঙ্গে আরও কিছু বাংলাদেশি ভাইকে নিয়ে এক ফিটনেস গ্রুপে যুক্ত আছেন তাঁরা। তাঁদের উদ্দেশ্য দৌড় ও সাইক্লিং চর্চা করা এবং এ গ্রুপের মাধ্যমে অন্য প্রবাসী ভাইদের ফিট থাকতে সাহায্য করা।

আসাদুল ও নজরুল অংশগ্রহণ করেছিলেন এ বছরের ‘স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড সিঙ্গাপুর ম্যারাথন’-এ। ৩ থেকে ৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় এ দৌড় প্রতিযোগিতা। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ম্যারাথন এশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয়। হাজারো দৌড় প্রতিযোগীর কাছে এ ম্যারাথনে অংশগ্রহণ ও শেষ করা এক স্বপ্নের মতো।

প্রথমবারের মতো এ স্বপ্ন পূরণ করলেন আসাদুল ও নজরুল। ৪ ডিসেম্বর ভোররাত সাড়ে চারটায় প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সে সময় শুরু হয় বৃষ্টি। এ কারণে প্রতিযোগিতা শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দেয় আয়োজকেরা। কিন্তু এ বৃষ্টি দমাতে পারেনি ১০ হাজারেরও বেশি প্রতিযোগীকে।

ভোর সাড়ে পাঁচটায় সিঙ্গাপুর ফর্মুলা ওয়ান পিট থেকে শুরু হয় ৪২ ও ২১ কিলোমিটারের এই ম্যারাথন। এবারের ম্যারাথনে কিডস রান (শিশুদের দৌড়), ৫ কিলোমিটার, ১০ কিলোমিটার, ২১ কিলোমিটারের হাফম্যারাথন ও ৪২ কিলোমিটারের ফুলম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়। ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করেন এ প্রতিযোগিতায়। তিন বছর পর এবারের সরাসরি আয়োজনের অংশগ্রহণকারীদের উৎফুল্লতা ছিল চোখের পড়ার মতো।

৩ ঘণ্টা ৩০ মিনিটে দৌড় শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ৬ মিনিটে দেরিতে ম্যারাথনের ফিনিশিং লাইনে পৌঁছান নজরুল। তিনি বলেন, ‘সাড়ে তিন ঘণ্টায় পৌঁছানোর যে লক্ষ্য ছিল, সেটা পূরণ করতে পেরে আমি আনন্দিত। ম্যারাথনে সবচেয়ে ভালো লেগেছে এত মানুষ দেখে। দীর্ঘ তিন বছর পর এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পেরে খুব ভালো লাগল। প্রথম ৩০ কিলোমিটার খুব সহজেই শেষ করতে পারলেও শেষে ১২ কিলোমিটার ছিল অনেক কষ্টের। শত কষ্ট হলেও এ অর্জনের আমার কাছে অনেক বড়।’

আরেক প্রতিযোগী আসাদুল আলম বলেন, ‘এই ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করে অনেক খুশি আমি। আশা করি, আমাদের এই অংশগ্রহণ অন্য প্রবাসী বাঙালিদের অনুপ্রাণিত করবে। অনুপ্রাণিত হয়ে তারাও অংশগ্রহণ করবে। বিদেশের মাটিতে দেশের পতাকা উঁচিয়ে তোলা নিজের কাছে অনেক গৌরব ও সম্মানের। আমরা যাঁরা বিদেশে থাকি, একমাত্র আমরাই উপলব্ধি করতে পারি।’

এই দৌড় প্রতিযোগিতায় পুরুষদের তালিকায় ২ ঘণ্টা ২০ মিনিট ২০ সেকেন্ডে ৪২ কিলোমিটারের ফুলম্যারাথন শেষ করে প্রথম হন কেনিয়ার এজকিয়েল অমুল।