কেনিয়া: এক অবিস্মরণীয় ভ্রমণ অভিজ্ঞতা
কাজের মধ্যে সুযোগ পেলে ঘুরতে যাওয়া সবারই ভালো লাগে এবং এটা কাজে আরও মনোনিবেশী ও উদ্যমী করে তোলে। গ্রুপ ট্যুরের কথা তো বিশেষ! আমরা যারা ইথিওপিয়াতে রয়েছি, তারা ২০২৪ সালের মে মাসে ৪ দিনের ছুটিতে কেনিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা করি। এ পরিকল্পনার দায়িত্ব আমার এবং মানিক ভাইয়ের হাতে এসে পড়ল। মোটামুটি ভিসা, বিমান টিকিট এবং হোটেল বুকিং সব কিছু পরিকল্পনা করে সবার সঙ্গে শেয়ার করেছি এবং সবাই একমত হয়েছে। মোট আটজনের একটি গ্রুপ ট্যুর প্ল্যান হলো।
আগেভাগে ভিসার জন্য অনলাইনে আবেদন করলাম এবং আলহামদুলিল্লাহ, আমরা আটজনের জন্য ভিসা হয়ে গেল। আমাদের পরিকল্পনা ছিল—
২ মে: সন্ধ্যায় নাইরোবির উদ্দেশে রওনা হব;
৩ মে: মুম্বাসার বাম্বুরি বিচ এবং ওল্ড সিটি ঘুরে বেড়াব;
৪ মে: হালার পার্ক পরিদর্শন;
৫ মে: ওয়াইল্ড ওয়াটার পার্কের আনন্দ নিয়ে ফিরে আসব।
প্রথম দিন: নাইরোবি
২ মে সন্ধ্যায় আমরা বোলে ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে যাত্রা শুরু করলাম। আমাদের যাত্রা ছিল ইথিওপিয়া থেকে নাইরোবি, তারপর নাইরোবি থেকে ডমেস্টিক ফ্লাইটে মুম্বাসা। রাত ১১টায় আমরা নাইরোবিতে পৌঁছলাম। বিমানবন্দরে অবতরণের পর, শহরের একটি ছোট্ট ট্যুর করার জন্য আমরা একটি গাড়ি ভাড়া করলাম। নাইরোবির স্থানীয় খাবারগুলো স্বাদ নেওয়ার জন্য আমরা বেশ কিছু রেস্তোরাঁতে গেলাম। খাবারগুলো ছিল খুবই স্বাদের এবং মজাদার। এরপর আমরা আবার বিমানবন্দরে ফিরে এলাম মুম্বাসা যাওয়ার জন্য। কারণ, আমাদের মূল পরিকল্পনা ছিল মুম্বাসা ঘুরে বেড়ানো।
ভোররাতের ফ্লাইটে আমরা নাইরোবি থেকে মুম্বাসায় পৌঁছালাম। বিমানবন্দর থেকে আমাদের ভাড়া করা গাড়ি নিয়ে আগেই বুকিং করা জানাদু রিসোর্টে গেলাম, যা বাম্বুরি সমুদ্রসৈকতের কাছে অবস্থিত। রিসোর্টের রুমগুলো অনেক বড় এবং খুব সুন্দরভাবে সাজানো ছিল। সেখানে একটি সুইমিং পুলও ছিল, যা পুরো অভিজ্ঞতাকে আরও রোমাঞ্চকর করে তুলেছিল। পরিবেশ ছিল সত্যিই চমৎকার, যা আমাদের সফরের শুরুতেই একটি ভালো অনুভূতি প্রদান করেছিল।
দ্বিতীয় দিন: মুম্বাসা
৩ মে সকালে উঠে বাম্বুরি সৈকতে সকালের নাশতা করলাম। সেখানে পৌঁছে প্রথমে আমরা বাম্বুরি সৈকতে গেলাম। সেখানকার নীল জল এবং সাদা বালু আমাদের মন জয় করল। বাম্বুরি সৈকতে নীল জল এবং সাদা বালু সত্যিই মনমুগ্ধকর।
বাম্বুরি বিচ (Bamburi Beach) হলো মোম্বাসার একটি জনপ্রিয় পর্যটনের স্থান, যা কেনিয়ার উত্তর উপকূলে অবস্থিত। এটি একটি বাণিজ্যিক এবং পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত, যেখানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং বিনোদনমূলক সুবিধা রয়েছে। বাম্বুরি সৈকতের বিশেষত্ব হলো এর সাদা বালুর সৈকত এবং পরিষ্কার জল, যা পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান। এখানে আপনি সাঁতার কাটতে, সূর্যস্নান করতে এবং বিভিন্ন জলক্রীড়া উপভোগ করতে পারেন। বাম্বুরি বিচের আশেপাশে বিভিন্ন আকর্ষণীয় স্থানও রয়েছে, যেমন হালার পার্ক এবং অন্যান্য স্থানীয় বাজার। এটি একটি সাংস্কৃতিক মেল্টিং পট, যেখানে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যটকেরা একসঙ্গে সময় কাটান। বাম্বুরি বিচে যাওয়া একটি চমৎকার অভিজ্ঞতা হতে পারে, যেখানে আপনি প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন এবং স্থানীয় সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন।
আমরা কিছু সময় সমুদ্রের পানিতে কাটালাম, পরে স্থানীয় খাবারের স্বাদ নেওয়ার জন্য একটি রেস্তোরাঁয়ে বসলাম। যেহেতু আমরা বড় এপার্টমেন্ট নিয়েছি, সেখানে রান্নার সব ব্যবস্থা ছিল। সাগরপারে থাকার কারণে সবাই ঠিক করলাম যে আমরা ২-৩ দিন সামুদ্রিক মাছ খাব। তাই নাশতা সেরে হোটেল সহায়কের সাহায্যে স্থানীয় সামুদ্রিক মাছের বাজারে গেলাম আর প্রায় পাঁচ-ছয় কেজি মাছ কিনলাম। পাশাপাশি সুপার শপ থেকে প্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিসও নিলাম।
এরপর আমরা মুম্বাসার পুরনো শহর (ওল্ড সিটি) ঘুরতে বের হলাম। একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতে আমরা লোকাল সিম নিলাম। ঐতিহাসিক স্থাপত্য এবং স্থানীয় সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে পেরে সবাই উৎসাহিত হয়েছিল। এখানে আমরা কিছু স্যুভেনিরও কিনলাম।
ফোর্ট জেসাস
ফোর্ট জেসাস (Fort Jesus) মোম্বাসা দ্বীপে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক দুর্গ। এটি ইতালীয় স্থপতি জিওভান্নি ব্যাটিস্টা কাইরাতির ডিজাইনে ১৫৯৩ থেকে ১৫৯৬ সালের মধ্যে নির্মিত হয়েছিল। স্পেনের রাজা ফিলিপ দুইয়ের আদেশে এটি নির্মিত হয়েছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল মোম্বাসার পুরনো বন্দরকে রক্ষা করা। ফোর্ট জেসাস হল সওয়াহিলি উপকূলে পর্তুগিজদের দ্বারা নির্মিত একমাত্র দুর্গ এবং এটি ভারত মহাসাগরীয় বাণিজ্যে পশ্চিমা শক্তির প্রথম সফল প্রভাব প্রতিষ্ঠার একটি নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃত। দুর্গটির ডিজাইন রেনেসাঁ স্থাপত্যের একটি উদাহরণ, তবে এর নির্মাণের জন্য ব্যবহৃত ইট, নির্মাণসামগ্রী এবং শ্রম স্থানীয় সওয়াহিলি জনগণের দ্বারা সরবরাহ করা হয়েছিল। দুর্গটি আকাশ থেকে দেখলে মানুষের আকৃতির মতো দেখতে হয় এবং এটি প্রায় বর্গাকার, যার কোণে চারটি বুলওয়ার্ক রয়েছে। ফোর্ট জেসাস এবং মোম্বাসার পুরনো শহর ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য সাইটের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য জাতীয় জাদুঘর কেনিয়া কর্তৃক প্রস্তাবিত হয়েছিল।
এটি একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান, যা রেনেসাঁর সময়ের ইতিহাসকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এখানে পর্তুগিজ, আরব এবং ১৫ শতকের ব্রিটিশ ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
মোম্বাসা ওল্ড টাউন
মোম্বাসা ওল্ড টাউন (Mombasa Old Town) হলো মোম্বাসা দ্বীপের একটি ঐতিহাসিক এলাকা, যা দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত। এটি ৭২ হেক্টর (১৮০ একর) এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এবং এখানে সওয়াহিলি, আরব, এশিয়ান, পর্তুগিজ এবং ব্রিটিশ বসবাস করে। এ প্রাচীন গ্রামে প্রবেশ করলে আপনি সোয়াহিলি সংস্কৃতি এবং ১৬ শতকের আরব প্রভাব ফুটিয়ে তোলা কাঠের খোদাই করা দরজা ও বারান্দার স্থাপত্য নকশা দেখতে পাবেন। ওল্ড টাউনটি তার ঐতিহাসিক স্থাপত্য, সরু গলি এবং স্থানীয় সংস্কৃতির জন্য পরিচিত। এখানে আপনি বিভিন্ন ঐতিহাসিক ভবন, বাজার এবং স্থানীয় শিল্পকর্ম দেখতে পাবেন। ১৯৯৭ সালে, ওল্ড টাউন ও ফোর্ট জেসাস ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য সাইটের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রস্তাবিত হয়েছিল। মোম্বাসা শহরের ইতিহাস প্রায় ৯০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে শুরু হয় এবং এটি ভারত মহাসাগরের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল। এখানে বিভিন্ন জাতির প্রভাব এবং সংস্কৃতি মিশ্রিত হয়েছে, যা ওল্ড টাউনকে একটি বিশেষ আকর্ষণীয় স্থান করে তুলেছে।
ম্যাকিনন মার্কেট
ম্যাকিনন মার্কেট (Mackinnon Market) মোম্বাসার একটি জনপ্রিয় বাজার, যা স্থানীয় খাদ্য, ফলমূল, সবজি ও অন্যান্য পণ্য কেনার জন্য পরিচিত। ওল্ড টাউনের সরু রাস্তাগুলি আপনাকে ম্যাকিনন বাজারের দিকে নিয়ে যাবে, যা প্রাকৃতিক মশলার জন্য বিখ্যাত। ১৯১৪ সালে ব্রিটিশরা দাস ব্যবসার জন্য এই বাজারটি প্রতিষ্ঠা করেছিল। যখন আপনি ওল্ড টাউন পরিদর্শন করবেন, তখন সেখানে অনেক কিউরিও বা উপহারের দোকান দেখতে পাবেন, যেখানে আপনি স্মৃতিচিহ্ন কিনতে পারবেন। এটি মোম্বাসার শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র এবং স্থানীয় জনগণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে কাজ করে। ম্যাকিনন মার্কেটের বিশেষত্ব হলো এখানে স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত তাজা পণ্য পাওয়া যায়, যা স্থানীয় সংস্কৃতি এবং খাদ্যাভ্যাসের একটি অংশ। বাজারে বিভিন্ন ধরনের খাবার, মসলা, এবং স্থানীয় হস্তশিল্পও পাওয়া যায়, যা পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয়। এটি মোম্বাসার ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এখানে আসা পর্যটকরা স্থানীয় জীবনযাত্রা এবং সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন।
তৃতীয় দিন: হালার পার্ক
৪ মে আমরা হালার পার্কে গেলাম। সেখানকার প্রকৃতি, বন্য প্রাণী এবং শান্ত পরিবেশ আমাদের মুগ্ধ করল। পার্কের সাফারি ট্যুর আমাদের জন্য এক নতুন অভি হালার পার্ক (Haller Park) হল মোম্বাসার বাম্বুরি অঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক পার্ক। এটি একটি সাবেক খনি এলাকা, যা পরিবেশগতভাবে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে এবং এখন এটি একটি ইকোলজিক্যাল এলাকা হিসেবে পরিচিত। হালার পার্কে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ এবং প্রাণী রয়েছে, যা পর্যটক এবং স্থানীয়দের জন্য একটি বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। এখানে হাঁটার পথ, পিকনিকের স্থান এবং বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী দেখার সুযোগ রয়েছে। ২০০৭ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত, হালার পার্কে ‘ওয়েন ও মিজে’ নামক একটি জনপ্রিয় আকর্ষণ ছিল, যা একটি হিপোপটামাস এবং একটি কচ্ছপের বন্ধুত্বের গল্প। ‘ওয়েন এবং মিজে’ (Wendy and Mzee) হলো একটি বিশেষ বন্ধুত্বের গল্প, যা হালার পার্কে ঘটে।
এই গল্পের কেন্দ্রবিন্দু হল একটি হিপোপটামাসের নাম ‘ওয়েন’ এবং একটি কচ্ছপের নাম ‘মিজে’।
ওয়েন যখন ছোট ছিল, তখন সে একটি দুর্ঘটনার কারণে তার মায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং পরে হালার পার্কে নিয়ে আসা হয়। সেখানে, মিজে নামক একটি বৃদ্ধ কচ্ছপের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। তারা একসঙ্গে সময় কাটাত এবং একে অপরের সঙ্গ উপভোগ করত। এ বন্ধুত্বের গল্পটি স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং এটি একটি সুন্দর উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয় যে কীভাবে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী একে অপরের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে পারে। ওয়েন এবং মিজের এই বন্ধুত্বের গল্পটি শিশুদের জন্য একটি শিক্ষামূলক এবং অনুপ্রেরণামূলক বার্তা প্রদান করে, যা বন্ধুত্ব, সহানুভূতি এবং যত্নের গুরুত্বকে তুলে ধরে। হালার পার্কে যাওয়া একটি চমৎকার অভিজ্ঞতা হতে পারে, যেখানে আপনি প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন এবং স্থানীয় জীববৈচিত্র্যের সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন। পশু-পাখি এবং প্রকৃতির মধ্যে সময় কাটিয়ে এটি আমাদের ভ্রমণের অন্যতম আকর্ষণ হয়ে উঠল।
চতুর্থ দিন: ওয়াইল্ড ওয়াটার পার্ক
৫ মে, আমাদের শেষ দিন। সকালে ওয়াইল্ড ওয়াটার পার্কে গেলাম। ওয়াইল্ড ওয়াটার পার্ক (Wild Water Park) হল মোম্বাসার একটি জনপ্রিয় জলক্রীড়া পার্ক, যা পরিবার ও বন্ধুদের জন্য বিনোদনের একটি চমৎকার স্থান। এখানে বিভিন্ন ধরনের জলস্রোত, স্লাইড এবং সুইমিং পুল রয়েছে, যা শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের জন্য উপভোগ্য। পার্কটি সাধারণত একটি বিশাল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত, যেখানে বিভিন্ন আকর্ষণ এবং বিনোদনমূলক কার্যক্রম উপলব্ধ। এটি একটি নিরাপদ এবং আনন্দময় পরিবেশে জলক্রীড়ার অভিজ্ঞতা উপভোগ করার সুযোগ দেয়। ওয়াইল্ড ওয়াটার পার্কে যাওয়া একটি চমৎকার অভিজ্ঞতা হতে পারে, বিশেষ করে গরম আবহাওয়ায়। এখানে আপনি বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন এবং বিভিন্ন জলক্রীড়ার মাধ্যমে মজা করতে পারেন।
আমরা এখানে বিভিন্ন রাইড ও জলক্রীড়ায় অংশগ্রহণ করলাম। সবাই মিলে অনেক হাসি-মজা করলাম। এরপর আমরা ফিরে আসার জন্য রওনা হলাম, কিন্তু মন থেকে এই স্মৃতিগুলো বের করা সম্ভব নয়।
হাতির দাঁত
মোম্বাসার হাতির দাঁত (Mombasa Tusks) হলো একটি ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ, যা মোম্বাসার ময়ি অ্যাভিনিউতে অবস্থিত। এটি মোই এভিনিউ সড়কের পাশে, মোম্বাসা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থান করছে। এটি মোম্বাসার সবচেয়ে পরিদর্শন করা এবং বিখ্যাত স্মৃতিসৌধের কাঠামোগুলির মধ্যে একটি। এটি ১৯৫২ সালে রানী এলিজাবেথের একটি বিশেষ সফরকে স্মরণ করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে, এই স্মৃতিস্তম্ভটি দুটি কাঠের কাঠামো ছিল যা হাতির দাঁতের মতো দেখতে ছিল। বর্তমানে, এখানে চারটি অ্যালুমিনিয়ামের দাঁত রয়েছে, যা ‘M’ আকৃতিতে স্থাপন করা হয়েছে। এটি সাধারণত পেম্বে জা এনডোভু নামে পরিচিত। কাঠামোটিকে স্থানীয়ভাবে ‘পেম্বেম্বিলি’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়—যার অর্থ সোয়াহিলি ভাষায় দুটি টাস্ক। টাস্কগুলি প্রধান নগর কেন্দ্রের প্রবেশদ্বারে M অক্ষর গঠনের জন্য তৈরি করা হয়েছে (মোম্বাসার জন্য দাঁড়ানো)। মোম্বাসার হাতির দাঁত স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য একটি জনপ্রিয় আকর্ষণ এবং এটি মোম্বাসার সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি জাতীয় জাদুঘর কেনিয়ার অধীনে এবং শহরের পৌর সরকার কর্তৃক পরিচালিত হয়। এই স্মৃতিস্তম্ভটি মোম্বাসার ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের একটি চিহ্ন হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি এমন একটি জায়গা যা আপনি আপনার সংগ্রহের জন্য কিছু ফটো না নিয়ে যেতে পারবেন না।
কেনিয়ায় আমাদের এই 8 দিনের সফর ছিল এক অনন্য অভিজ্ঞতা। আমরা নতুন বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছি, নতুন সংস্কৃতি জানতে পেরেছি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মগ্ন হয়েছিলাম। দরকারি কাজের ফাঁকে এই ধরনের ভ্রমণ সত্যিই অনুপ্রেরণার কাজ করে। সবাই মিলে নিরাপদে এবং আনন্দের সঙ্গে যাত্রা শেষ করার পর মনে একটাই কথাই আসছিল: ‘আরও একটি সফর হবেই!’
ফেরার পথে প্লানে সফরসঙ্গীর সঙ্গে খুনসুটি। বেচারা ভালোভাবে ঘুমাতেই পারল না…
দূর পরবাসে লেখা, ভিডিও, ছবি, ভ্রমণকাহিনি, গল্প ও নানা আয়োজনের কথা পাঠান [email protected]এ