সূর্য যেন না ডুবে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও রিপাবলিকান পার্টির নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পছবি: রয়টার্স

বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চেয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা বেশি। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি এক জরিপে দেখা গেছে, ওই সময় যদি নির্বাচন হয়, তাহলে ৪৮ শতাংশ মার্কিন নাগরিক ট্রাম্পকে ভোট দেবেন। জো বাইডেনের পক্ষে ভোট প্রদানের কথা জানিয়েছেন ৪৩ শতাংশ মার্কিন নাগরিক। জরিপের ফলাফলে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর তাঁর দল ডেমোক্রেটিক পার্টির আস্থায় ঘাটতি রয়েছে। তিনি যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তা নিয়েও তাঁদের মনে সন্দেহ। এটা তাঁকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে পেছনে ফেলেছে।

এ অবস্থায় নতুন করে আবার ডোনাল্ড ট্রাম্প বলতে শুরু করেছেন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’।

পশ্চিমা দেশগুলো কী চায়, তাতে আমেরিকার কিছু যায় আসে না, তবে আমেরিকা কী চায়, কী বলে, কী করে পশ্চিমাদের তাতে যায় আসে। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিশ্ব চাক বা না চাক তাতে কিছু যায় আসে না, তবে আমেরিকার জনগণ তাঁকে নতুন করে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চায়—এ বিষয়ে আমেরিকানরা নিশ্চিত বলে মনে হচ্ছে। অভাগা ইউরোপ পড়েছে ফান্দে, কী করতে কী করছে, সেটাই এখন ইউরোপিয়ানদের মাথাব্যথা। তারপরও—Today, March 7, 2024, marks a historic moment as Sweden officially joins NATO, fulfilling the promise of 'one for all and all for one'. Congratulations, Sweden, on this significant milestone!

বিশ্বরাজনীতি আজ কুনীতিতে পরিণত হয়েছে। বাঙালির হাডুডু খেলার মতো হয়েছে, সামনে যেন কেউ না যেতে পারে। ঠিক একই অবস্থা যখন কোনো দেশ সামনের দিকে অগ্রসর হতে চেষ্টা করছে, তখনই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং বাধা। হতে পারে সেই বাধা ন্যাটোসংক্রান্ত, অর্থনৈতিক সমস্যা সৃষ্টি করা বা নিষেধাজ্ঞা জারি করা অথবা হঠাৎ করে হামলা করা। বর্তমান পৃথিবী যেন একটি পরিবারের প্রতিচ্ছবি। একটি পরিবারে যেমন কলহ লেগেই আছে, ঠিক গোটা বিশ্বেও একের পর কলহ লেগেই আছে। আমার ৪০ বছর ইউরোপে বাস। এত বছরে যে সমস্যাগুলো দেখিনি, সেগুলো এখন ক্ষণে ক্ষণে দেখছি। জিনিসের দাম বৃদ্ধি থেকে শুরু করে ক্রাইম বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, সুদ বৃদ্ধি, স্ট্রেস, ডিপ্রেশন, সাইবার ক্রাইম, যুদ্ধসহ শত শত সমস্যার মধ্য দিয়ে পার করছে বর্তমান বিশ্ব—ইউরোপ তার মধ্যে অন্যতম। একদিকে প্রযুক্তির ঢেউ, অন্যদিকে মানুষের বেকারত্ব।

একদিকে নৈতিকতার অবক্ষয়, অন্যদিকে দানবের অত্যাচার। সব মিলে এ আমাদের ইউরোপ। ঠিক তেমন একটি সময় গণচীনের অবস্থা আরও শোচনীয়—নো পপুলেশন গ্রোথ, একই সঙ্গে সিনিয়র নাগরিকের সংখ্যা বেড়েই চলছে, প্রডাক্টিভিটির বিরাট হ্রাস, নতুন ইনোভেটিভ চিন্তা, এআই–কে কাজে লাগানোর প্রকল্প, একই সঙ্গে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি, সর্বোপরি আমদানি–রপ্তানি হ্রাস। সব মিলে পূর্বের আকাশ অন্ধকার হয়ে আসছে। এমন একটি অনিশ্চিত সময় নতুন প্রজন্ম মানসিক অসুস্থতায় ভুগছে, চোখে নেই ঘুম। সারা দিন সারা রাত টেলিফোন হাতে, চলছে জীবন তাদের অনিশ্চয়তার মধ্যে। মদ, গাঁজাসহ নানা ধরনের মাদক এখন তাদের জীবনসাথি। তরুণসমাজের নারীরা খুশি নন তাঁদের চেহারার অংশবিশেষ নিয়ে, ঢুকাচ্ছে শরীরে বিষ; খাচ্ছে যেসব খাবার, তাতে শরীরের গঠন থেকে শুরু করে নানা ধরনের রোগব্যাধি করছে জীবননাশ। এত সব সমস্যার জন্য দায়ী কাকে করবেন? নিজেকে, সমাজকে নাকি রাষ্ট্রকে? দায়ী করলেই কি সমস্যার সমাধান হবে? অপ্রিয় সত্য হলেও বাস্তব কিন্তু এটাই। আমি সচরাচর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করি, ভ্রমণের ওপর ভালোমন্দ লিখি। এবারের বিশ্বভ্রমণে সমস্যার নানা দিক নিয়ে আলোচনা করলাম। সমস্যা যখন জানা গেল, তাহলে সমাধান করতে সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ দরকার। এবার শুধু পশ্চিমাদের ওপর ভরসা করলে চলবে না, সবাইকে একত্র হতে হবে একটি সুন্দর–সুস্থ পৃথিবী গড়তে। দরকার ২৯৩টি ভিন্ন ভিন্ন পাসপোর্ট সরিয়ে একটি পাসপোর্ট তৈরি করা, তবেই হবে সুন্দর পৃথিবী, যেখানে সূর্য উঠবে কিন্তু সে সূর্য কখনো ডুববে না। যে সময়টুকু অন্ধকার হবে, সে সময়টুকু হবে বিনোদন, বিশ্রাম এবং ঘুম থেকে উঠে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখা এবং জ্ঞানের আলোয় দিনের বেলা জেগে জেগে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়া। উই আর দ্য ওয়ার্ল্ড, উই আর দ্য নিউ হিউম্যান ফর হিউম্যানিটি।

*দূর পরবাসে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল অ্যাড্রেস [email protected]